আবু তাহের খান
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা শপথ গ্রহণ করেছেন গত ৮ আগস্ট। সে হিসাবে ৭ সেপ্টেম্বর তাদের কার্যকালের এক মাস পূর্ণ হলো। একটি উত্তাল গণবিক্ষোভের মধ্য দিয়ে আকস্মিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব লাভকারী এই সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যের কেউই আগে থেকে জানতেন না যে এ ধরনের গুরুদায়িত্ব তাঁদের ওপর অর্পিত হতে যাচ্ছে। ফলে কারোরই এ ব্যাপারে কোনোরূপ প্রস্তুতি গ্রহণের বা বাড়ির কাজ (হোম ওয়ার্ক) সেরে নেওয়ার সুযোগ ছিল না। কিন্তু দায়িত্ব যেহেতু তাঁরা গ্রহণ করেছেন, সেহেতু পূর্ব-প্রস্তুতি থাক বা না থাক, নৈতিক অবস্থান থেকে অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া সাধারণ জনগণের কাছে তাঁদের জবাবদিহি করতেই হবে। সে ক্ষেত্রে তাঁদের গত এক মাসের অর্থাৎ কার্যকালের প্রথম মাসের কর্মকাণ্ডের বিপরীতে অর্জিত সাফল্য-ব্যর্থতার মোটা দাগভিত্তিক একটি সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণ এখানে তুলে ধরা হলো।
সরকারের গত মাসাধিককালের সর্বাধিক উল্লেখ্যযোগ্য কিংবা বলা চলে সবচেয়ে বড় সাফল্য এই যে দায়িত্ব গ্রহণের অব্যবহিত পরের দিনগুলোতে রাষ্ট্রীয় মেশিনারির ব্যাপক অনুপস্থিতি সত্ত্বেও নিয়ন্ত্রণ-অযোগ্য তেমন বড় ধরনের কোনো সংঘাত, অন্তর্ঘাত, বিশৃঙ্খলা ও খুনোখুনি থেকে তারা দেশকে মোটামুটি ভালোভাবেই রক্ষা করতে পেরেছে। এ ক্ষেত্রে অবশ্য সরকারের ভূমিকার চেয়েও অধিক কৃতিত্ব দিতে হবে দেশের সাধারণ জনগণের মধ্যকার সংহতির শক্তিকে, যে শক্তি নানা স্বার্থান্ধ গোষ্ঠীর উসকানি ও অপতৎপরতাকে উপেক্ষা করে দলমত, ধর্মবর্ণ ও পার্থক্যপূর্ণ চিন্তার ঊর্ধ্বে থেকে পারস্পরিক ঐক্য ও সহমর্মিতাকে ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। তদুপরি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরাসহ সর্বস্তরের জনগণের একচ্ছত্র সমর্থনও এ ক্ষেত্রে সরকারের জন্য বিশেষভাবে সহায়ক হয়েছে। অবশ্য তাই বলে সরকারের নিজস্ব কৃতিত্বকেও এ ক্ষেত্রে খাটো করে দেখাটা উচিত হবে না। কারণ এ রকম একটি জটিল পরিস্থিতিতে তারা যে ওই সুযোগগুলোর যথাযথ ব্যবহার ও সমন্বয়ের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ, ব্যবসা-বাণিজ্য, ব্যাংকিং, আমদানি-রপ্তানি, আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল ইত্যাদিকে মোটামুটিভাবে সচল রাখতে পেরেছে, সেটি নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। তবে সদ্য সাবেক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেনের নানা স্পষ্ট ও দৃঢ় বক্তব্যে জনগণ যথেষ্ট আশাবাদী ও উৎসাহিত হওয়ার পরও এ পদে আকস্মিক পরিবর্তন আনার বিষয়টি সাধারণ মানুষের মধ্যে একধরনের ধোঁয়াশা ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। তবে এ বিষয়ে সরকারের ভেতর হয়তো নিশ্চয় কোনো চিন্তাভাবনা আছে, যা আমরা সাধারণ মানুষেরা জানি না। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ মানুষের মধ্যে বিষয়টিকে ঘিরে ধোঁয়াশা রয়েই গেছে।
যথার্থই আশঙ্কা ছিল যে রাষ্ট্রের এ রকম একটি পরিস্থিতিতে সদ্য ক্ষমতাচ্যুত দলটি ব্যতীত দেশের অপরাপর রাজনৈতিক দলগুলো হয়তো পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ব্যাপকভাবে আগ্রাসী হয়ে উঠবে এবং বহু ক্ষেত্রে তারা তা হয়েছেও। তারপরও যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়নি, তজ্জন্য সরকারকে অবশ্যই কৃতিত্ব দিতে হবে। তবে মানতেই হবে যে এরপরও উল্লিখিত আগ্রাসন ও দখলদারত্ব পুরোপুরি বন্ধ রাখা যায়নি। দেশের বহু জায়গায় এখনো পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে দখলদারত্ব অব্যাহত আছে। আর এদিকে নতুন দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এসব ঘটনা যে কুখ্যাত সব দাগি আসামি একের পর এক জেল থেকে ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে। এটি কেন কীভাবে ঘটছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয় তা এখনই সতর্কতার সঙ্গে না দেখলে পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার সমূহ আশঙ্কা রয়েছে। পদোন্নতি-পদায়ন নিয়ে পুলিশ ও প্রশাসনে যে বিশৃঙ্খলা চলছে, তার বহিঃপ্রকাশ দেখা গেছে ৪৯টি জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক নিয়োগ নিয়ে সচিবালয়ে হট্টগোলের ঘটনায়।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত ১৭ আগস্ট ভারতের নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত ‘থার্ড ভয়েস অব গ্লোবাল সাউথ সামিট ২০২৪’-এ ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে যে ভাষণ দিয়েছেন, তার মাধ্যমে তিনি শুধু তাঁর নিজ দেশের পরিস্থিতিকেই সবার সামনে তুলে ধরেননি, একই সঙ্গে সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী সবার, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কী হতে পারে, সে বিষয়টিও ব্যাখ্যা করেছেন। এটিকে বাংলাদেশের বৈদেশিক সম্পর্কসংক্রান্ত নীতিমালার নতুন দলিল হিসেবেও আখ্যায়িত করা যেতে পারে। জাতিসংঘ যে ইতিমধ্যে বাংলাদেশে সংঘটিত সাম্প্রতিক গণহত্যার নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য উচ্চপর্যায়ের তদন্ত দল পাঠিয়েছে, সেটিও নিঃসন্দেহে বর্তমান সরকারের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আস্থা ও বিশ্বাসেরই প্রতিফলন, যা সামনের দিনগুলোতেও ধরে রাখতে হবে।
দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থার ওপর ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে শ্বেতপত্র প্রণয়নের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সেটিও নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। এ শ্বেতপত্রের তথ্য ও সুপারিশ রাষ্ট্রের আর্থিক খাত পুনরুদ্ধারে ও আসন্ন নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০২৫-৩০) প্রণয়নে বিশেষভাবে সহায়ক হবে বলে আশা করা যায়। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদের হার বৃদ্ধির উদ্যোগ, কতিপয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন, এস আলম নিয়ন্ত্রিত ছয় ব্যাংকের ঋণসীমা বেঁধে দেওয়া ইত্যাদি নিঃসন্দেহে প্রয়োজনীয় ভালো উদ্যোগ। কিন্তু সরকার পতনের পর ইতিমধ্যে মাসাধিককাল পেরিয়ে যাওয়ার পরও বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চু, ঢাকা ওয়াসার সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসকিম এ খান বা অনুরূপদের এখনো গ্রেপ্তার না হওয়ার বিষয়টি নিঃসন্দেহে হতাশাব্যঞ্জক। বাংলাদেশের শেয়ারবাজার যে বরাবরই দরবেশরূপী মাফিয়াদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে সাধারণের আস্থা হারিয়েছে, সে মাফিয়াদের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক ছিলেন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) সদ্যবিদায়ী চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। তিনি ক্ষমতাত্যাগের দিনেও মাফিয়া সালমান রহমানকে অনিয়মতান্ত্রিক পন্থায় কয়েক হাজার কোটি টাকার সুবিধা পাইয়ে দিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে, যিনি একই সঙ্গে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের পিএইচডি কেলেঙ্কারিসহ আরও নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। শেয়ারবাজারের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করতে হলে শিক্ষক নামধারী এই কলঙ্কিত নীরব ঘাতকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ আরও দ্রুত ও ব্যাপকভিত্তিক হওয়া উচিত ছিল বলে মনে করি।
এবারে সরকারের কিছু প্রশাসনিক ভুল ও ত্রুটিপূর্ণ সিদ্ধান্তের কথা তুলি। এইচএসসির অগৃহীত পরীক্ষাসমূহ বাতিল করে অটোপাস দেওয়ার বিষয়টি একটি শতভাগ ভুল সিদ্ধান্ত। যখন অটোপাস দেওয়ার মতো একটি বড় সিদ্ধান্ত শিক্ষা উপদেষ্টা মহোদয়ের পূর্ব-সম্মতি ছাড়াই গ্রহণ করে ফেলা হয়। বিষয়টি প্রশাসনিক শৃঙ্খলার গুরুতর লঙ্ঘন এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার স্বার্থে বিষয়টিকে কঠোরভাবে দেখা উচিত বলে মনে করি।
জাতীয় সংসদে দায়মুক্তি আইন পাসের মাধ্যমে (যা পুরোপুরি অসাংবিধানিক) গত দেড় দশকে যেসব কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে, কোটি কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতির হাত থেকে বাঁচার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার হওয়া উচিত তৎসংশ্লিষ্ট গণবিরোধী চুক্তিগুলো পর্যালোচনা করে বাতিলের বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা। সিপিডি ইতিমধ্যে হিসাব কষে দেখিয়েছে যে কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ছাড়াই দেশের বিদ্যুৎ পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক রাখা সম্ভব। কিন্তু তারপরও এ ব্যাপারে সরকারের তৎপরতা খুবই ধীরগতির বলে মনে হচ্ছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রকেও একই ধরনের পর্যালোচনা উদ্যোগের আওতায় গণ্য করা যেতে পারে। সেই সঙ্গে গত ১৫ বছরে আর কোন কোন রাষ্ট্রস্বার্থবিরোধী চুক্তি পর্যালোচনা করা দরকার, সেটিও যাচাই করে দেখা প্রয়োজন।
রাষ্ট্র সংস্কারে ছয়টি কমিশন গঠন করা হয়েছে। নির্বাচনব্যবস্থা, পুলিশ প্রশাসন, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন, জনপ্রশাসন ও সংবিধান সংস্কারে কাজ করবে এসব কমিশন। কমিশনগুলোর প্রধান হিসেবে ছয়জনের নামও ঘোষণা করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। অন্তর্বর্তী সরকারের এক মাস পূর্তি উপলক্ষে ১১ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এসব কমিশন গঠনের কথা জানান প্রধান উপদেষ্টা। নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধানের দায়িত্ব পালন করবেন ড. বদিউল আলম মজুমদার, পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান, দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. শাহদীন মালিক।
ছয়টি কমিশন গঠনের কারণ হিসেবে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচনের নামে সংখ্যাগরিষ্ঠতার একাধিপত্য ও দুঃশাসন মানুষের ওপর চাপিয়ে দেওয়া বা এর মাধ্যমে এক ব্যক্তি বা পরিবার বা কোনো গোষ্ঠীর কাছে সব ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়। এসব আশঙ্কা রোধ করার জন্য নির্বাচনের সঙ্গে সম্পর্কিত নির্বাচন কমিশনসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সংস্কারের কথা আমরা ভাবছি। নির্বাচনব্যবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুলিশ প্রশাসন, জনপ্রশাসন, বিচার প্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন—এই চারটি প্রতিষ্ঠানের সংস্কার করা সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য অপরিহার্য।’
দেশের বিভিন্ন স্থানে মব জাস্টিসের যে উচ্ছৃঙ্খল প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে, সে বিষয়টি সামনে এনে দেশবাসীর প্রতি আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে কেউ সমাজে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করলে আমরা তাকে অবশ্যই শাস্তির আওতায় নিয়ে আসব। আমরা একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্ট হয়, এমন কোনো কাজ কেউ কোনোভাবেই করবেন না।’
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম মাসের কর্মকাণ্ডের ওপর পর্যালোচনামূলক বক্তব্যসমূহের উপসংহার টানতে চাই এই বলে যে এ সরকারকে ঘিরে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা যেমনি বিশাল, তেমনি তাদের সামনে চ্যালেঞ্জও বহুমাত্রিক। আর সেইসব বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এ সরকার শেষ পর্যন্ত কতটুকু এগোতে পারবে, তা শুধু তাদের এক মাসের কর্মকাণ্ডের ওপর ভিত্তি করে মন্তব্য করাটা মোটেও সমীচীন হবে না। তবে তাদের এ সময়ের আচরণের মধ্যে সমগ্র জনগণকে একসঙ্গে ধারণ করবার যে দৃষ্টিভঙ্গি লক্ষ করা গেছে, সেটি যদি শেষ পর্যন্ত টিকে থাকে তাহলে তাদের পক্ষে অসফল হওয়ার কোনোই কারণ নেই। অন্যদিকে তা অসফল হওয়ার মানেই হচ্ছে এত শত মানুষের রক্ত ও ত্যাগে অর্জিত এ অভ্যুত্থানের ব্যর্থতা, যা আমাদের কারোরই কাম্য হতে পারে না। অতএব দেশ, রাষ্ট্র ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থেই এ সরকারকে সফল হওয়া প্রয়োজন।
লেখক: সাবেক পরিচালক, বিসিক
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা শপথ গ্রহণ করেছেন গত ৮ আগস্ট। সে হিসাবে ৭ সেপ্টেম্বর তাদের কার্যকালের এক মাস পূর্ণ হলো। একটি উত্তাল গণবিক্ষোভের মধ্য দিয়ে আকস্মিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব লাভকারী এই সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যের কেউই আগে থেকে জানতেন না যে এ ধরনের গুরুদায়িত্ব তাঁদের ওপর অর্পিত হতে যাচ্ছে। ফলে কারোরই এ ব্যাপারে কোনোরূপ প্রস্তুতি গ্রহণের বা বাড়ির কাজ (হোম ওয়ার্ক) সেরে নেওয়ার সুযোগ ছিল না। কিন্তু দায়িত্ব যেহেতু তাঁরা গ্রহণ করেছেন, সেহেতু পূর্ব-প্রস্তুতি থাক বা না থাক, নৈতিক অবস্থান থেকে অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া সাধারণ জনগণের কাছে তাঁদের জবাবদিহি করতেই হবে। সে ক্ষেত্রে তাঁদের গত এক মাসের অর্থাৎ কার্যকালের প্রথম মাসের কর্মকাণ্ডের বিপরীতে অর্জিত সাফল্য-ব্যর্থতার মোটা দাগভিত্তিক একটি সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণ এখানে তুলে ধরা হলো।
সরকারের গত মাসাধিককালের সর্বাধিক উল্লেখ্যযোগ্য কিংবা বলা চলে সবচেয়ে বড় সাফল্য এই যে দায়িত্ব গ্রহণের অব্যবহিত পরের দিনগুলোতে রাষ্ট্রীয় মেশিনারির ব্যাপক অনুপস্থিতি সত্ত্বেও নিয়ন্ত্রণ-অযোগ্য তেমন বড় ধরনের কোনো সংঘাত, অন্তর্ঘাত, বিশৃঙ্খলা ও খুনোখুনি থেকে তারা দেশকে মোটামুটি ভালোভাবেই রক্ষা করতে পেরেছে। এ ক্ষেত্রে অবশ্য সরকারের ভূমিকার চেয়েও অধিক কৃতিত্ব দিতে হবে দেশের সাধারণ জনগণের মধ্যকার সংহতির শক্তিকে, যে শক্তি নানা স্বার্থান্ধ গোষ্ঠীর উসকানি ও অপতৎপরতাকে উপেক্ষা করে দলমত, ধর্মবর্ণ ও পার্থক্যপূর্ণ চিন্তার ঊর্ধ্বে থেকে পারস্পরিক ঐক্য ও সহমর্মিতাকে ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। তদুপরি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরাসহ সর্বস্তরের জনগণের একচ্ছত্র সমর্থনও এ ক্ষেত্রে সরকারের জন্য বিশেষভাবে সহায়ক হয়েছে। অবশ্য তাই বলে সরকারের নিজস্ব কৃতিত্বকেও এ ক্ষেত্রে খাটো করে দেখাটা উচিত হবে না। কারণ এ রকম একটি জটিল পরিস্থিতিতে তারা যে ওই সুযোগগুলোর যথাযথ ব্যবহার ও সমন্বয়ের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ, ব্যবসা-বাণিজ্য, ব্যাংকিং, আমদানি-রপ্তানি, আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল ইত্যাদিকে মোটামুটিভাবে সচল রাখতে পেরেছে, সেটি নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। তবে সদ্য সাবেক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেনের নানা স্পষ্ট ও দৃঢ় বক্তব্যে জনগণ যথেষ্ট আশাবাদী ও উৎসাহিত হওয়ার পরও এ পদে আকস্মিক পরিবর্তন আনার বিষয়টি সাধারণ মানুষের মধ্যে একধরনের ধোঁয়াশা ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। তবে এ বিষয়ে সরকারের ভেতর হয়তো নিশ্চয় কোনো চিন্তাভাবনা আছে, যা আমরা সাধারণ মানুষেরা জানি না। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ মানুষের মধ্যে বিষয়টিকে ঘিরে ধোঁয়াশা রয়েই গেছে।
যথার্থই আশঙ্কা ছিল যে রাষ্ট্রের এ রকম একটি পরিস্থিতিতে সদ্য ক্ষমতাচ্যুত দলটি ব্যতীত দেশের অপরাপর রাজনৈতিক দলগুলো হয়তো পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ব্যাপকভাবে আগ্রাসী হয়ে উঠবে এবং বহু ক্ষেত্রে তারা তা হয়েছেও। তারপরও যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়নি, তজ্জন্য সরকারকে অবশ্যই কৃতিত্ব দিতে হবে। তবে মানতেই হবে যে এরপরও উল্লিখিত আগ্রাসন ও দখলদারত্ব পুরোপুরি বন্ধ রাখা যায়নি। দেশের বহু জায়গায় এখনো পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে দখলদারত্ব অব্যাহত আছে। আর এদিকে নতুন দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এসব ঘটনা যে কুখ্যাত সব দাগি আসামি একের পর এক জেল থেকে ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে। এটি কেন কীভাবে ঘটছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয় তা এখনই সতর্কতার সঙ্গে না দেখলে পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার সমূহ আশঙ্কা রয়েছে। পদোন্নতি-পদায়ন নিয়ে পুলিশ ও প্রশাসনে যে বিশৃঙ্খলা চলছে, তার বহিঃপ্রকাশ দেখা গেছে ৪৯টি জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক নিয়োগ নিয়ে সচিবালয়ে হট্টগোলের ঘটনায়।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত ১৭ আগস্ট ভারতের নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত ‘থার্ড ভয়েস অব গ্লোবাল সাউথ সামিট ২০২৪’-এ ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে যে ভাষণ দিয়েছেন, তার মাধ্যমে তিনি শুধু তাঁর নিজ দেশের পরিস্থিতিকেই সবার সামনে তুলে ধরেননি, একই সঙ্গে সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী সবার, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কী হতে পারে, সে বিষয়টিও ব্যাখ্যা করেছেন। এটিকে বাংলাদেশের বৈদেশিক সম্পর্কসংক্রান্ত নীতিমালার নতুন দলিল হিসেবেও আখ্যায়িত করা যেতে পারে। জাতিসংঘ যে ইতিমধ্যে বাংলাদেশে সংঘটিত সাম্প্রতিক গণহত্যার নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য উচ্চপর্যায়ের তদন্ত দল পাঠিয়েছে, সেটিও নিঃসন্দেহে বর্তমান সরকারের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আস্থা ও বিশ্বাসেরই প্রতিফলন, যা সামনের দিনগুলোতেও ধরে রাখতে হবে।
দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থার ওপর ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে শ্বেতপত্র প্রণয়নের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সেটিও নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। এ শ্বেতপত্রের তথ্য ও সুপারিশ রাষ্ট্রের আর্থিক খাত পুনরুদ্ধারে ও আসন্ন নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০২৫-৩০) প্রণয়নে বিশেষভাবে সহায়ক হবে বলে আশা করা যায়। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদের হার বৃদ্ধির উদ্যোগ, কতিপয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন, এস আলম নিয়ন্ত্রিত ছয় ব্যাংকের ঋণসীমা বেঁধে দেওয়া ইত্যাদি নিঃসন্দেহে প্রয়োজনীয় ভালো উদ্যোগ। কিন্তু সরকার পতনের পর ইতিমধ্যে মাসাধিককাল পেরিয়ে যাওয়ার পরও বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চু, ঢাকা ওয়াসার সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসকিম এ খান বা অনুরূপদের এখনো গ্রেপ্তার না হওয়ার বিষয়টি নিঃসন্দেহে হতাশাব্যঞ্জক। বাংলাদেশের শেয়ারবাজার যে বরাবরই দরবেশরূপী মাফিয়াদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে সাধারণের আস্থা হারিয়েছে, সে মাফিয়াদের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক ছিলেন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) সদ্যবিদায়ী চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। তিনি ক্ষমতাত্যাগের দিনেও মাফিয়া সালমান রহমানকে অনিয়মতান্ত্রিক পন্থায় কয়েক হাজার কোটি টাকার সুবিধা পাইয়ে দিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে, যিনি একই সঙ্গে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের পিএইচডি কেলেঙ্কারিসহ আরও নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। শেয়ারবাজারের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করতে হলে শিক্ষক নামধারী এই কলঙ্কিত নীরব ঘাতকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ আরও দ্রুত ও ব্যাপকভিত্তিক হওয়া উচিত ছিল বলে মনে করি।
এবারে সরকারের কিছু প্রশাসনিক ভুল ও ত্রুটিপূর্ণ সিদ্ধান্তের কথা তুলি। এইচএসসির অগৃহীত পরীক্ষাসমূহ বাতিল করে অটোপাস দেওয়ার বিষয়টি একটি শতভাগ ভুল সিদ্ধান্ত। যখন অটোপাস দেওয়ার মতো একটি বড় সিদ্ধান্ত শিক্ষা উপদেষ্টা মহোদয়ের পূর্ব-সম্মতি ছাড়াই গ্রহণ করে ফেলা হয়। বিষয়টি প্রশাসনিক শৃঙ্খলার গুরুতর লঙ্ঘন এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার স্বার্থে বিষয়টিকে কঠোরভাবে দেখা উচিত বলে মনে করি।
জাতীয় সংসদে দায়মুক্তি আইন পাসের মাধ্যমে (যা পুরোপুরি অসাংবিধানিক) গত দেড় দশকে যেসব কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে, কোটি কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতির হাত থেকে বাঁচার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার হওয়া উচিত তৎসংশ্লিষ্ট গণবিরোধী চুক্তিগুলো পর্যালোচনা করে বাতিলের বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা। সিপিডি ইতিমধ্যে হিসাব কষে দেখিয়েছে যে কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ছাড়াই দেশের বিদ্যুৎ পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক রাখা সম্ভব। কিন্তু তারপরও এ ব্যাপারে সরকারের তৎপরতা খুবই ধীরগতির বলে মনে হচ্ছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রকেও একই ধরনের পর্যালোচনা উদ্যোগের আওতায় গণ্য করা যেতে পারে। সেই সঙ্গে গত ১৫ বছরে আর কোন কোন রাষ্ট্রস্বার্থবিরোধী চুক্তি পর্যালোচনা করা দরকার, সেটিও যাচাই করে দেখা প্রয়োজন।
রাষ্ট্র সংস্কারে ছয়টি কমিশন গঠন করা হয়েছে। নির্বাচনব্যবস্থা, পুলিশ প্রশাসন, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন, জনপ্রশাসন ও সংবিধান সংস্কারে কাজ করবে এসব কমিশন। কমিশনগুলোর প্রধান হিসেবে ছয়জনের নামও ঘোষণা করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। অন্তর্বর্তী সরকারের এক মাস পূর্তি উপলক্ষে ১১ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এসব কমিশন গঠনের কথা জানান প্রধান উপদেষ্টা। নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধানের দায়িত্ব পালন করবেন ড. বদিউল আলম মজুমদার, পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান, দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. শাহদীন মালিক।
ছয়টি কমিশন গঠনের কারণ হিসেবে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচনের নামে সংখ্যাগরিষ্ঠতার একাধিপত্য ও দুঃশাসন মানুষের ওপর চাপিয়ে দেওয়া বা এর মাধ্যমে এক ব্যক্তি বা পরিবার বা কোনো গোষ্ঠীর কাছে সব ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়। এসব আশঙ্কা রোধ করার জন্য নির্বাচনের সঙ্গে সম্পর্কিত নির্বাচন কমিশনসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সংস্কারের কথা আমরা ভাবছি। নির্বাচনব্যবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুলিশ প্রশাসন, জনপ্রশাসন, বিচার প্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন—এই চারটি প্রতিষ্ঠানের সংস্কার করা সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য অপরিহার্য।’
দেশের বিভিন্ন স্থানে মব জাস্টিসের যে উচ্ছৃঙ্খল প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে, সে বিষয়টি সামনে এনে দেশবাসীর প্রতি আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে কেউ সমাজে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করলে আমরা তাকে অবশ্যই শাস্তির আওতায় নিয়ে আসব। আমরা একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্ট হয়, এমন কোনো কাজ কেউ কোনোভাবেই করবেন না।’
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম মাসের কর্মকাণ্ডের ওপর পর্যালোচনামূলক বক্তব্যসমূহের উপসংহার টানতে চাই এই বলে যে এ সরকারকে ঘিরে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা যেমনি বিশাল, তেমনি তাদের সামনে চ্যালেঞ্জও বহুমাত্রিক। আর সেইসব বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এ সরকার শেষ পর্যন্ত কতটুকু এগোতে পারবে, তা শুধু তাদের এক মাসের কর্মকাণ্ডের ওপর ভিত্তি করে মন্তব্য করাটা মোটেও সমীচীন হবে না। তবে তাদের এ সময়ের আচরণের মধ্যে সমগ্র জনগণকে একসঙ্গে ধারণ করবার যে দৃষ্টিভঙ্গি লক্ষ করা গেছে, সেটি যদি শেষ পর্যন্ত টিকে থাকে তাহলে তাদের পক্ষে অসফল হওয়ার কোনোই কারণ নেই। অন্যদিকে তা অসফল হওয়ার মানেই হচ্ছে এত শত মানুষের রক্ত ও ত্যাগে অর্জিত এ অভ্যুত্থানের ব্যর্থতা, যা আমাদের কারোরই কাম্য হতে পারে না। অতএব দেশ, রাষ্ট্র ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থেই এ সরকারকে সফল হওয়া প্রয়োজন।
লেখক: সাবেক পরিচালক, বিসিক
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
৮ ঘণ্টা আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৪ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৪ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৪ দিন আগে