ডায়াবেটিস মাপার খরচ বাড়াল স্ট্রিপের দাম

আয়নাল হোসেন, ঢাকা
প্রকাশ : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১১: ৩৪

দেশে ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নির্ণয়ের খরচ বাড়ল। কারণ, রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নির্ণয়ে গ্লুকোমিটারে ব্যবহৃত স্ট্রিপের দাম গত দেড়-দুই মাসের ব্যবধানে দেশে সর্বোচ্চ ৪১ শতাংশ বেড়েছে। অথচ আন্তর্জাতিক বাজারে এই স্ট্রিপের দাম অনেক কমছে বলে জানিয়েছেন আমদানিকারকেরা। তাঁদের দাবি, ডলারের ঊর্ধ্বগতি, এলসি সমস্যা এবং ঔষধ প্রশাসনের খবরদারির কারণে বাজারে স্ট্রিপের সংকট তৈরি হওয়ায় দাম বেড়েছে।

বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির তথ্য অনুযায়ী, দেশে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এর মধ্যে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৩০ লাখ। টাইপ-১ ডায়াবেটিস রোগী প্রায় ২৫ হাজার। ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়মিত রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নির্ণয় করা জরুরি। কমপক্ষে ৫০ লাখ রোগী নিয়মিত রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা পরীক্ষা করে। অনেকেই বাসায়, মহল্লার ওষুধের দোকানে এই পরীক্ষা করে। কিন্তু পরীক্ষার স্ট্রিপের দাম বাড়ায় মানুষের খরচ বেড়েছে।

রাজধানীর আজিমপুর সরকারি কলোনির বি জোনের এক পাশে বসে নিয়মিত রক্তের গ্লুকোজ, রক্তচাপ পরীক্ষা করেন মোস্তাফিজুর রহমান। এটাই তাঁর পেশা। তিনি বলেন, আগে প্রতিটি ডায়াবেটিস পরীক্ষা ২০ টাকায় করানো যেত। কিন্তু স্ট্রিপের দাম বাড়ায় এটি ৩০ টাকা করতে বাধ্য হয়েছেন। তবে যারা নিয়মিত রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস মাপে, তাদের জন্য ১০ টাকা ছাড়।

গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে আজিমপুর কলোনিতে কথা হয় লালবাগের বাসিন্দা আরমান হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, কিছুদিন পরপর তিনি ডায়বেটিস পরীক্ষা করেন। তিনি ১৫ দিন আগে আজিমপুর বটতলায় ২০ টাকায় ডায়াবেটিস পরীক্ষা করিয়েছেন। গতকাল নিল ৩০ টাকা।

স্ট্রিপ আমদানিকারক মেসার্স হেলথওয়ের স্বত্বাধিকারী নূর হোসেন বলেন, স্ট্রিপের উৎপাদন বাড়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে দাম অনেকটা কমেছে। কোনো প্রতিষ্ঠানের অতিরিক্ত ৫০ লাখ স্ট্রিপ উৎপাদনে খরচ বাড়ছে মাত্র ২০ শতাংশ।

পুরান ঢাকার মিটফোর্ডের স্ট্রিপ ব্যবসায়ী মনোয়ার হোসেন বলেন, দেড় থেকে দুই মাস আগে ৫০টি স্ট্রিপের কৌটার দাম ছিল ৭৮০ টাকা। সংকটে দাম বেড়ে তা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১০০ টাকায়। আর ২৫টি স্ট্রিপের কৌটার দাম ৩৫০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৪২৫ টাকা। অর্থাৎ স্ট্রিপের দাম ২১ থেকে সর্বোচ্চ ৪১ শতাংশ বেড়েছে।

আমদানিকারকেরা জানায়, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে ড্রাগ রেজিস্ট্রেশন বা ডিআর নম্বর ছাড়া স্ট্রিপ আমদানি করা যাচ্ছে না। আমদানির জন্য ঔষধ প্রশাসনের অনুমোদন বাধ্যতামূলক। এক লাখ স্ট্রিপ আমদানির অনুমতি চাইলে ঔষধ প্রশাসন থেকে কমিয়ে অর্ধেক করে দেওয়া হচ্ছে। আমদানিতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। এ জন্য স্ট্রিপের সংকট তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া ডলার সংকট ও উচ্চমূল্যের কারণে ব্যাংক এলসি খুলছে না। সব মিলিয়ে বিষয়টি জটিল হয়ে পড়েছে।

জানতে চাইলে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক আইয়ূব হোসেন বলেন, স্ট্রিপের মূল্য তাঁরা নির্ধারণ করে দিচ্ছেন। কেউ নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, আমদানি অনুমোদনের জন্য একটি স্ট্যান্ডিং কমিটি রয়েছে। কমিটি মনে করলে আমদানির পরিমাণ কমিয়ে দিতে পারে। প্রতি মাসেই সভা করে এসব পণ্য আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। দেশে বছরে কী পরিমাণ স্ট্রিপের চাহিদা রয়েছে, সে-সংক্রান্ত কোনো তথ্য ঔষধ প্রশাসন থেকে জানা যায়নি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পাকিস্তান-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের রেকর্ড ভাঙল ১৪ বছর পর

৩ মাসে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৭৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা

যানজটে গুলি করে ফেঁসে গেলেন জাপার সাবেক এমপি, অস্ত্রসহ আটক

শোরুম উদ্বোধন করতে গিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পরীমনি, কী ঘটেছিল সেখানে

এয়ারক্র্যাফটে স্বর্ণ পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা: এনবিআর চেয়ারম্যান

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত