অরুণ কর্মকার
ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন এবং অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই পরবর্তী নির্বাচন এবং নির্বাচিত সরকারের বিষয় নিয়ে দেশের রাজনৈতিক মহল উচ্চকিত। কত দিন পর নির্বাচন হবে, কবে একটি নির্বাচিত সরকার গঠন করে তারা দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিতে পারবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যথেষ্ট উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, এমনকি দুশ্চিন্তাও রয়েছে। সব দলের এই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা কিংবা দুশ্চিন্তা অবশ্য জনসমক্ষে সমানভাবে প্রকাশিত নয়। তবে তাদের সবারই চিন্তার জগৎজুড়ে আছে আগামী নির্বাচন, নির্বাচিত সরকার, জনগণের সরকার। অনেকে এ কথা বলারও চেষ্টা করে যাচ্ছেন যে রাষ্ট্রের জন্য বিশেষ দরকারি সংস্কারগুলো সম্পন্ন করা নির্বাচিত সরকারেরই কাজ। উল্লেখ্য, প্রচলিত ধারার গণতন্ত্রের বিধিবিধান কোনো অনির্বাচিত সরকারকে জনগণের সরকার হিসেবে মান্যতা দেয় না।
কিন্তু প্রচলিত ধারার গণতন্ত্র নামক (সার্কাস্টিক) শাসনব্যবস্থায় নির্বাচনের মাধ্যমে যে সরকার গঠিত হয়, তারা কি প্রকৃতই জনগণের সরকার হয়? ১৯৯০ সাল থেকে নির্বাচনের মাধ্যমে যত সরকার এ দেশে গঠিত হয়েছে, সেগুলোর একটিও কি প্রকৃত অর্থে জনগণের সরকার হয়ে উঠতে পেরেছে? ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের নির্বাচন নামের কলঙ্কের কথা না হয় বাদই দিচ্ছি। ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ কিংবা ২০০৮ সালের নির্বাচনগুলো তো সে রকম ছিল না! কিন্তু ওই নির্বাচনগুলোও কি আমাদের প্রকৃত অর্থে জনগণের সরকার উপহার দিতে পেরেছে? এর প্রতিটি সরকারই কি দলীয়, এককেন্দ্রিক এবং স্বেচ্ছাচারী সরকার হয়ে ওঠেনি? তারা কি প্রতিপক্ষ দলকে এমনকি নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টারও ত্রুটি রেখেছে? এর একটি সরকারও কি দেশে গণতান্ত্রিক বিধিবিধান প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছে? প্রতিটি সরকারই কি দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো পঙ্গু করার কোনো অপচেষ্টা বাদ রেখেছে? সেই সরকারগুলোকে কি আমরা জনগণের সরকার বলতে পারি? মোটেই না; বরং এদের বলা যায় দলীয় সরকার, যার প্রধান কাজ হলো দলীয় স্বার্থ ও পরিপুষ্টির জন্য দেশের আইন-কানুন-প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবহার করা।
দলীয় সরকারগুলো এই যে অবস্থা সৃষ্টির সুযোগ পায়, তার একটি বড় কারণ হচ্ছে প্রচলিত নির্বাচনপদ্ধতি। এই পদ্ধতির নির্বাচনে আসলে কাউকে দেশের জনসংখ্যার বা ভোটারদের সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটে নির্বাচিত হতে হয় না। এ প্রসঙ্গে প্রচলিত ও জনপ্রিয় একটি কৌতুক উল্লেখ করা যেতে পারে। তা হলো: এক ছাত্রাবাসে ১০০ জন আবাসিক ছাত্র। সেখানে প্রতিদিন বিকেলের নাশতায় শিঙাড়া দেওয়া হয়। দীর্ঘদিন এই ব্যবস্থা চলতে থাকায় আবাসিকদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। তাঁরা নাশতা পরিবর্তনের দাবি তোলেন। কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেয়, এ ব্যাপারে আবাসিকদের প্রত্যেকের আলাদা মতামত নেওয়া হবে। সে অনুযায়ী ছাত্রদের বলা হয়, নাশতায় তাঁরা কী খেতে চান, তা যেন প্রত্যেকে আলাদা করে লিখিতভাবে জানান। শিক্ষার্থীরা তা-ই করলেন। তাতে দেখা গেল, ১৯ জন বলেছেন ডিম-পরাটা; ১৭ জন রুটি-সবজি, ১৬ জন হালুয়া-রুটি, ১৪ জন ছোলা-মুড়ি-পেঁয়াজু, ১৩ জন এগ নুডলস এবং ২১ জন বলেছেন শিঙাড়ার কথা। সুতরাং অধিকাংশের পছন্দ ও মত অনুযায়ী শিঙাড়াই বহাল।
অর্থাৎ ১০০ জনের মধ্যে ২১ জনের ভোট পেয়ে প্রচলিত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সরকার গঠন করার মতো। সেই সরকার অবলীলায় ৮১ জনের মতামত উপেক্ষা করার অধিকারী হয়। এই পদ্ধতিতে নির্বাচিত সরকার কীভাবে জনগণের সরকার হতে পারে? এ প্রসঙ্গে একটি সম্পূরক প্রশ্ন হলো—দেশের কোনো রাজনৈতিক দল কি প্রচলিত এই পদ্ধতি পরিবর্তনে সহসা আগ্রহী হবে, যেখানে ২১ জনকে দলে রাখলেই সরকার গঠন করা যায়? হবে না। কিন্তু এই ব্যবস্থার পরিবর্তন দরকার।
সেই পরিবর্তনের একটি স্পষ্ট ইঙ্গিত আমরা পাই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যে। গত বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেছেন, ‘আমরা মনে করি, নির্বাচনের নামে সংখ্যাগরিষ্ঠতার একাধিপত্য ও দুঃশাসন মানুষের ওপর চাপিয়ে দেওয়া বা এর মাধ্যমে এক ব্যক্তি বা পরিবার বা কোনো গোষ্ঠীর কাছে সব ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়।’ এখানে বিশেষভাবে লক্ষণীয়, কোনো এক ব্যক্তি বা কোনো একটি পরিবার কিংবা কোনো গোষ্ঠীর কাছে সব ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার বিষয়টি তিনি বা তাঁর সরকার বন্ধ করতে চান। অর্থাৎ আমরা দীর্ঘকাল ধরে দেশে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার যে প্রবণতাগুলো দেখে এসেছি, আমাদের দেশ যে পদ্ধতির করুণ শিকার, তা তিনি ভেঙে দিতে চান।
বিষয়টি আমাদের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য স্পর্শকাতর। কিন্তু এটা হওয়া দরকার। না হলে প্রকৃত জনগণের শাসন ফিরে আসবে না বা প্রতিষ্ঠিত হবে না। বিষয়টি মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলো কীভাবে নেবে, সেটা নিয়ে কিছুটা সন্দেহের অবকাশ আছে। শেষ পর্যন্ত তাদের সঙ্গে আলোচনা করেই তো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের এই উদ্যোগ যে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর সমর্থন পাবে, তা নিয়ে সন্দেহের কোনো কারণ দেখি না। কেননা, যে সরকার এই পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছে, সেটি অনির্বাচিত এবং অন্তর্বর্তী সরকার হলেও, বিগত সরকারগুলোর কর্মকাণ্ডে ত্যক্ত-বিরক্ত দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের সমর্থন এই মুহূর্তে এই সরকারের প্রতি রয়েছে। একমাত্র আওয়ামী লীগ ও তার মিত্র কয়েকটি রাজনৈতিক দল (যারা বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রকাশ্যে নেই) ব্যতীত মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলোও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি এবং তাদের রাষ্ট্র সংস্কার উদ্যোগের প্রতিও নিজেদের সমর্থন ঘোষণা করেছে।
ভবিষ্যতে রাষ্ট্রক্ষমতা কোনো ব্যক্তি বা পরিবার কিংবা কোনো গোষ্ঠীর কাছে কুক্ষিগত হওয়ার আশঙ্কা রোধ করার জন্য প্রধান উপদেষ্টা তাঁর ওই ভাষণে নির্বাচন কমিশন এবং নির্বাচনী ব্যবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুলিশ প্রশাসন, জনপ্রশাসন, বিচার প্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ ছয়টি কমিশন গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘এর পাশাপাশি সাংবিধানিক সংস্কারের প্রয়োজন আমরা অনুভব করছি।’ এ ছাড়া গণমাধ্যমের সংস্কারসাধনের জন্য একটি মিডিয়া কমিশন গঠন করা হবে। ইতিপূর্বে ব্যাংক খাতের সংস্কারের জন্য একটি কমিশন গঠন করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের এই পদক্ষেপগুলোর প্রতি দেশবাসীর অকুণ্ঠ সমর্থন রয়েছে। গণতন্ত্রের খোলসে কয়েক যুগ ধরে আমরা দেশে দেশে যে অরাজকতা দেখেছি, দলীয়করণের যে কদর্য রূপ এবং স্বেচ্ছাচার দেখেছি, তার পুনরাবৃত্তি যেন আর কোনো দিন এ দেশে না ঘটে, সেটাই দেশবাসীর প্রত্যাশা।
লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক
ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন এবং অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই পরবর্তী নির্বাচন এবং নির্বাচিত সরকারের বিষয় নিয়ে দেশের রাজনৈতিক মহল উচ্চকিত। কত দিন পর নির্বাচন হবে, কবে একটি নির্বাচিত সরকার গঠন করে তারা দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিতে পারবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যথেষ্ট উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, এমনকি দুশ্চিন্তাও রয়েছে। সব দলের এই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা কিংবা দুশ্চিন্তা অবশ্য জনসমক্ষে সমানভাবে প্রকাশিত নয়। তবে তাদের সবারই চিন্তার জগৎজুড়ে আছে আগামী নির্বাচন, নির্বাচিত সরকার, জনগণের সরকার। অনেকে এ কথা বলারও চেষ্টা করে যাচ্ছেন যে রাষ্ট্রের জন্য বিশেষ দরকারি সংস্কারগুলো সম্পন্ন করা নির্বাচিত সরকারেরই কাজ। উল্লেখ্য, প্রচলিত ধারার গণতন্ত্রের বিধিবিধান কোনো অনির্বাচিত সরকারকে জনগণের সরকার হিসেবে মান্যতা দেয় না।
কিন্তু প্রচলিত ধারার গণতন্ত্র নামক (সার্কাস্টিক) শাসনব্যবস্থায় নির্বাচনের মাধ্যমে যে সরকার গঠিত হয়, তারা কি প্রকৃতই জনগণের সরকার হয়? ১৯৯০ সাল থেকে নির্বাচনের মাধ্যমে যত সরকার এ দেশে গঠিত হয়েছে, সেগুলোর একটিও কি প্রকৃত অর্থে জনগণের সরকার হয়ে উঠতে পেরেছে? ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের নির্বাচন নামের কলঙ্কের কথা না হয় বাদই দিচ্ছি। ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ কিংবা ২০০৮ সালের নির্বাচনগুলো তো সে রকম ছিল না! কিন্তু ওই নির্বাচনগুলোও কি আমাদের প্রকৃত অর্থে জনগণের সরকার উপহার দিতে পেরেছে? এর প্রতিটি সরকারই কি দলীয়, এককেন্দ্রিক এবং স্বেচ্ছাচারী সরকার হয়ে ওঠেনি? তারা কি প্রতিপক্ষ দলকে এমনকি নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টারও ত্রুটি রেখেছে? এর একটি সরকারও কি দেশে গণতান্ত্রিক বিধিবিধান প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছে? প্রতিটি সরকারই কি দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো পঙ্গু করার কোনো অপচেষ্টা বাদ রেখেছে? সেই সরকারগুলোকে কি আমরা জনগণের সরকার বলতে পারি? মোটেই না; বরং এদের বলা যায় দলীয় সরকার, যার প্রধান কাজ হলো দলীয় স্বার্থ ও পরিপুষ্টির জন্য দেশের আইন-কানুন-প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবহার করা।
দলীয় সরকারগুলো এই যে অবস্থা সৃষ্টির সুযোগ পায়, তার একটি বড় কারণ হচ্ছে প্রচলিত নির্বাচনপদ্ধতি। এই পদ্ধতির নির্বাচনে আসলে কাউকে দেশের জনসংখ্যার বা ভোটারদের সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটে নির্বাচিত হতে হয় না। এ প্রসঙ্গে প্রচলিত ও জনপ্রিয় একটি কৌতুক উল্লেখ করা যেতে পারে। তা হলো: এক ছাত্রাবাসে ১০০ জন আবাসিক ছাত্র। সেখানে প্রতিদিন বিকেলের নাশতায় শিঙাড়া দেওয়া হয়। দীর্ঘদিন এই ব্যবস্থা চলতে থাকায় আবাসিকদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। তাঁরা নাশতা পরিবর্তনের দাবি তোলেন। কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেয়, এ ব্যাপারে আবাসিকদের প্রত্যেকের আলাদা মতামত নেওয়া হবে। সে অনুযায়ী ছাত্রদের বলা হয়, নাশতায় তাঁরা কী খেতে চান, তা যেন প্রত্যেকে আলাদা করে লিখিতভাবে জানান। শিক্ষার্থীরা তা-ই করলেন। তাতে দেখা গেল, ১৯ জন বলেছেন ডিম-পরাটা; ১৭ জন রুটি-সবজি, ১৬ জন হালুয়া-রুটি, ১৪ জন ছোলা-মুড়ি-পেঁয়াজু, ১৩ জন এগ নুডলস এবং ২১ জন বলেছেন শিঙাড়ার কথা। সুতরাং অধিকাংশের পছন্দ ও মত অনুযায়ী শিঙাড়াই বহাল।
অর্থাৎ ১০০ জনের মধ্যে ২১ জনের ভোট পেয়ে প্রচলিত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সরকার গঠন করার মতো। সেই সরকার অবলীলায় ৮১ জনের মতামত উপেক্ষা করার অধিকারী হয়। এই পদ্ধতিতে নির্বাচিত সরকার কীভাবে জনগণের সরকার হতে পারে? এ প্রসঙ্গে একটি সম্পূরক প্রশ্ন হলো—দেশের কোনো রাজনৈতিক দল কি প্রচলিত এই পদ্ধতি পরিবর্তনে সহসা আগ্রহী হবে, যেখানে ২১ জনকে দলে রাখলেই সরকার গঠন করা যায়? হবে না। কিন্তু এই ব্যবস্থার পরিবর্তন দরকার।
সেই পরিবর্তনের একটি স্পষ্ট ইঙ্গিত আমরা পাই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যে। গত বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেছেন, ‘আমরা মনে করি, নির্বাচনের নামে সংখ্যাগরিষ্ঠতার একাধিপত্য ও দুঃশাসন মানুষের ওপর চাপিয়ে দেওয়া বা এর মাধ্যমে এক ব্যক্তি বা পরিবার বা কোনো গোষ্ঠীর কাছে সব ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়।’ এখানে বিশেষভাবে লক্ষণীয়, কোনো এক ব্যক্তি বা কোনো একটি পরিবার কিংবা কোনো গোষ্ঠীর কাছে সব ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার বিষয়টি তিনি বা তাঁর সরকার বন্ধ করতে চান। অর্থাৎ আমরা দীর্ঘকাল ধরে দেশে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার যে প্রবণতাগুলো দেখে এসেছি, আমাদের দেশ যে পদ্ধতির করুণ শিকার, তা তিনি ভেঙে দিতে চান।
বিষয়টি আমাদের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য স্পর্শকাতর। কিন্তু এটা হওয়া দরকার। না হলে প্রকৃত জনগণের শাসন ফিরে আসবে না বা প্রতিষ্ঠিত হবে না। বিষয়টি মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলো কীভাবে নেবে, সেটা নিয়ে কিছুটা সন্দেহের অবকাশ আছে। শেষ পর্যন্ত তাদের সঙ্গে আলোচনা করেই তো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের এই উদ্যোগ যে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর সমর্থন পাবে, তা নিয়ে সন্দেহের কোনো কারণ দেখি না। কেননা, যে সরকার এই পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছে, সেটি অনির্বাচিত এবং অন্তর্বর্তী সরকার হলেও, বিগত সরকারগুলোর কর্মকাণ্ডে ত্যক্ত-বিরক্ত দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের সমর্থন এই মুহূর্তে এই সরকারের প্রতি রয়েছে। একমাত্র আওয়ামী লীগ ও তার মিত্র কয়েকটি রাজনৈতিক দল (যারা বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রকাশ্যে নেই) ব্যতীত মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলোও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি এবং তাদের রাষ্ট্র সংস্কার উদ্যোগের প্রতিও নিজেদের সমর্থন ঘোষণা করেছে।
ভবিষ্যতে রাষ্ট্রক্ষমতা কোনো ব্যক্তি বা পরিবার কিংবা কোনো গোষ্ঠীর কাছে কুক্ষিগত হওয়ার আশঙ্কা রোধ করার জন্য প্রধান উপদেষ্টা তাঁর ওই ভাষণে নির্বাচন কমিশন এবং নির্বাচনী ব্যবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুলিশ প্রশাসন, জনপ্রশাসন, বিচার প্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ ছয়টি কমিশন গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘এর পাশাপাশি সাংবিধানিক সংস্কারের প্রয়োজন আমরা অনুভব করছি।’ এ ছাড়া গণমাধ্যমের সংস্কারসাধনের জন্য একটি মিডিয়া কমিশন গঠন করা হবে। ইতিপূর্বে ব্যাংক খাতের সংস্কারের জন্য একটি কমিশন গঠন করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের এই পদক্ষেপগুলোর প্রতি দেশবাসীর অকুণ্ঠ সমর্থন রয়েছে। গণতন্ত্রের খোলসে কয়েক যুগ ধরে আমরা দেশে দেশে যে অরাজকতা দেখেছি, দলীয়করণের যে কদর্য রূপ এবং স্বেচ্ছাচার দেখেছি, তার পুনরাবৃত্তি যেন আর কোনো দিন এ দেশে না ঘটে, সেটাই দেশবাসীর প্রত্যাশা।
লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
১ দিন আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৫ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৫ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৫ দিন আগে