ইকরাম কবীর
পুলিশ নিয়ে রাজপথে মাঝরাতের বাহাদুরি প্রতিবেদনে যা পড়লাম তাতে মনে হয় আইন নিজের গতিতে চলছে না; বিত্তবানদের ফোনে-ফোনে চলছে। পুলিশ কিছু করতে পারছে না। এই না-পারাটা তাঁদেরও গা সওয়া হয়ে গেছে। বিষয়টি সবার সামনে তুলে ধরার প্রয়োজন অনেক আগেই ছিল, কিন্তু কেউ তা করছিলেন না। তুলে ধরবেন কে? গণমাধ্যমকেই এ দায়িত্ব নিতে হবে। অন্তত আমরা সাধারণ মানুষ যারা চাকরিবাকরি করে সংসার চালিয়ে কোনোমতে জীবন পার করতে চাই, তারা তাই-ই ভাবব। আজকের পত্রিকা এবং তাদের প্রতিবেদক শাহরিয়ার হাসান এ দায়িত্বটি পালন করেছেন বলে ধন্যবাদ জানাই।
‘রাজপথে মাঝরাতের বাহাদুরি’ প্রতিবেদনটিতে উঠে এসেছে কেমন করে আমাদের রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় অনেকেই রাতে দামি গাড়ি নিয়ে বের হয়ে ‘ড্র্যাগ রেইস’ নামে খুব জোরে গাড়ি চালানোর এক প্রতিযোগিতা করেন। প্রতিবেদনটি ছাপা হয়েছিল আজকের পত্রিকায় গত ১২ জানুয়ারি।
এই রেইস নতুন নয়। কুড়ি বছর আগে আমি যখন গুলশানে বসবাস করতে আসি, তখন থেকেই দেখছি। প্রথমে শুরু হয়েছিল কামাল আতাতুর্ক সড়কে–কাকলী থেকে গুলশান ২ নম্বর পর্যন্ত। সে সময় এত ট্রাফিকও ছিল না, এমন পুলিশের প্রতিবন্ধকতাও ছিল না। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ শুরু হয়ে কতক্ষণ চলত, তা আমার জানা নেই, তবে আমি অনেক বছর ধরে অতি-দামি গাড়িগুলোকে উদ্ধত শব্দে ওই সড়কে প্রতিযোগিতা করতে দেখেছি। অনেক দুর্ঘটনাও ঘটেছে। সাধারণ পথযাত্রী ভুক্তভোগী হয়েছেন।
প্রতিবেদক অনেকের সঙ্গেই কথা বলেছেন। তবে তিনি যা করেননি তা হচ্ছে, তিনি কোনো মনস্তত্ত্ববিদের সঙ্গে কথা বলেননি। তিনি কথা বলেছেন সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের একজন শিক্ষকের সঙ্গে। প্রতিবেদনের দাঁড়িপাল্লাটা ঠিক রাখার জন্যই বোধ হয় শেষে এটুকু জুড়ে দিয়েছেন। শিক্ষক তেমন গুরুত্বপূর্ণ কিছু বলেননি। কারণ, তিনি বিষয়টি নিয়ে আগে চিন্তা করেননি। তিনিও আমার মতো একজন চাকরিজীবী। চাকরি করো, সন্তানদের জিপিএ-৫ পাওয়ার ব্যবস্থা করো–তা-ই সই।
বিত্তবানদের বুঝতে হলে তাদের মনস্তত্ত্ব বোঝার প্রয়োজন রয়েছে। অর্থের মনস্তত্ত্ব বুঝতে হবে। অতিধনীদের সন্তানেরা আমাদের জিপিএ সন্তানদের মতো নয়। তাদের সন্তানদের লক্ষ্য জিপিএ নয়, অর্থ। জিপিএ পেলে ভালো, তবে না হলেও ক্ষতি নেই। আবারও বলছি–ধনীর সন্তানের জীবনের লক্ষ্য আমাদের সন্তানদের মতো নয়। তাদের জীবনের চ্যালেঞ্জগুলোও আমাদের সন্তানদের চেয়ে ভিন্ন।
দেশে-দেশে বিত্তবানদের বিনোদনের ইতিহাস কী বলে? তাঁরা ইয়াট কিনে সমুদ্র ভ্রমণে যান, পোলো খেলেন, প্রাণী শিকার করেন, অধিক গতিতে গাড়ি চালান, নাম না-জানা পশুদের পোষেণ, ঘোড়দৌড়ের আয়োজন করেন, গলফ খেলেন, পাহাড়ে ওঠেন, স্কাইডাইভিং করেন, সমুদ্রের নিচে সাঁতার কাটেন, বরফের মধ্যে স্কি করতে যান এবং দামি দারু পান করেন ও চড়া মূল্যের রেস্তোরাঁয় খাদ্যবিলাস করেন।
আমাদের মতো ছাপোষারা ওই সবের স্বাদ নিতে পারে না, তবে ধনীদের বিনোদনগুলো অনুকরণ করে বিত্তহীন এবং মধ্যবিত্তের জন্যও ওই সব বিনোদন লোভনীয় প্যাকেজ আকারে বাজারজাত করা হয়। ধারকর্জ করে বা অর্থ জমিয়ে বা ক্রেডিট কার্ড থেকে খরচ করে মধ্যবিত্তদেরও আকর্ষণীয় বিনোদনের আস্বাদ নিতে দেখা যায়। মনে আছে ছোটবেলায় আমরা সবাই ইংরেজিতে রচনা লিখতাম ‘ইয়োর হবি’? শখ। পরে জেনেছি শখের দাম লাখ টাকা। শখের আকর্ষণ সবার মনেই কাজ করে।
বিনোদন সব শ্রেণির মানুষেরই প্রয়োজন। অর্থ রোজগারের সংগ্রামে প্রতিনিয়ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে গিয়ে আমাদের যে মানসিক চাপের মুখে পড়তে হয়, বিনোদনের মাধ্যমে তা কিছুটা স্তিমিত হয়। কেউ খেলাধুলা করেন, কেউ সিনেমা বা টেলিভিশন দেখেন, কেউ খোলা মাঠে হাঁটতে যান। কারও বিনোদন বই পড়ায়। কেউ রেস্তোরাঁয় গিয়ে খানাপিনা করে আনন্দ পান। অনেকে যৌনতায় আনন্দ পান। অনেক মানুষের কাছে কেনাকাটা করা একটা বড় বিনোদন।
আমাদের বাপ-দাদারা যেসব বিষয়ে বিনোদিত হতেন, সেগুলো এখন আর আমাদের আন্দোলিত করে না। যুগ, প্রযুক্তি ও বৈশ্বিক হালচালে আমাদের বিনোদনে পরিবর্তন এসেছে। আমাদের সন্তানেরা আরও পরিবর্তিত বিনোদনে আগ্রহী।
বিনোদনকে খাটো চোখে দেখা আমার এই লেখার উদ্দেশ্য নয়; বরং বিনোদনের সুন্দর ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য আমি আমাদের সরকারকে অনুরোধ করতে চাই। অর্থ আয় করলে তা খরচ করার ব্যবস্থা থাকতে হবে। আমাদের দেশে তা অপ্রতুল। এখানে খাওয়া-দাওয়া, সিনেমা দেখা এবং কক্সবাজার-সিলেটে ঘোরাঘুরি করার মধ্যেই সীমিত। সে কারণেই যাঁদের বেশি অর্থ আছে, তাঁরা বিদেশে চলে যান তা খরচ করতে। সেসব দেশে অনেক ব্যবস্থা আছে অর্থ খরচের। খরচও হয় এবং বিনোদনের স্বাদও পাওয়া যায়।
ধরুন ঢাকার বাইরে কোনো জেলায় যদি এই ড্র্যাগ রেইস করার আনুষ্ঠানিক ব্যবস্থা থাকত, ফর্মুলা-ওয়ানের মতো, তাহলে রাজপথের এই বাহাদুরেরা সড়ক ছেড়ে সেখানেই যেতেন। আমরা টিকিট কেটে তা দেখতেও যেতাম।
থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপনের জন্য যদি কোনো সাজানো ব্যবস্থা থাকত, তাহলে সবার মধ্যে চাপা উত্তেজনা কিছুটা হলেও শিথিল করা যেত। পাঁচতারা হোটেলে এবং ক্লাবগুলোতে হয়তো বিত্তবানেরা যেতে পারেন, কিন্তু বাকি সবাই পারেন না। আরও অনেক বিনোদনের বিষয় আছে, যেগুলো আমরা একটু চিন্তা করে গুছিয়ে করলে আমাদের জীবন আরও সহজ হবে এবং জীবনের নিরাপত্তাও একটা কাঠামোর মধ্যে চলে আসবে।
ধরুন আপনি কোনো এক কারণে দেশে মদ্যপানের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করতে চান। কিন্তু তা করে কি মদ্যপান কমাতে পারবেন বলে মনে করেন? মানুষ ঘরে ঘরে মদের গাঁজন শুরু করবে। তেমনই আপনি বিত্তবানদের বিনোদনের পথগুলো রুখতে পারবেন না। শুধু নৈতিকতার কথা বলে এমন অতি-পুঁজিবাদী সমাজে এসব বন্ধ করা যায় না।
পুলিশ নিয়ে রাজপথে মাঝরাতের বাহাদুরি প্রতিবেদনে যা পড়লাম তাতে মনে হয় আইন নিজের গতিতে চলছে না; বিত্তবানদের ফোনে-ফোনে চলছে। পুলিশ কিছু করতে পারছে না। এই না-পারাটা তাঁদেরও গা সওয়া হয়ে গেছে। তাঁরা জানেন বিষয়টি তাঁরা আয়ত্তে আনতে পারবেন না। ক্ষমতাশালীদের ফোন এলেই দোষী ব্যক্তিকে ছেড়ে দিতে হবে, তাই তাঁরা ধনীদের বাদ দিয়ে সমাজের অন্য শ্রেণির মানুষদের নিয়ে ব্যস্ত থাকেন।
এমন ব্যবস্থা শুভ হতে পারে না। একটা পর্যায়ে গিয়ে ভেঙে পড়বে এবং তখন সমাজে অস্থিরতা ঠেকানো কষ্টকর হবে। আমাদের সমাজব্যবস্থা যা-ই হোক, তা চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে, পুঁজিপতিদের নিজেদের স্বার্থেই, অনেক দায়িত্ব পালন করার মতো বুদ্ধি অর্জন করতে হয়। সমাজকে এমন পরিস্থিতিতে পৌঁছাতে দেওয়া যাবে না, যেন তা ভেঙে পড়ে।
আমাদের দেশে বিত্তবানদের সেই বুদ্ধি অর্জন করার সুযোগ সীমাহীন।
ইকরাম কবীর, গল্পকার ও যোগাযোগ পেশায় নিয়োজিত
পুলিশ নিয়ে রাজপথে মাঝরাতের বাহাদুরি প্রতিবেদনে যা পড়লাম তাতে মনে হয় আইন নিজের গতিতে চলছে না; বিত্তবানদের ফোনে-ফোনে চলছে। পুলিশ কিছু করতে পারছে না। এই না-পারাটা তাঁদেরও গা সওয়া হয়ে গেছে। বিষয়টি সবার সামনে তুলে ধরার প্রয়োজন অনেক আগেই ছিল, কিন্তু কেউ তা করছিলেন না। তুলে ধরবেন কে? গণমাধ্যমকেই এ দায়িত্ব নিতে হবে। অন্তত আমরা সাধারণ মানুষ যারা চাকরিবাকরি করে সংসার চালিয়ে কোনোমতে জীবন পার করতে চাই, তারা তাই-ই ভাবব। আজকের পত্রিকা এবং তাদের প্রতিবেদক শাহরিয়ার হাসান এ দায়িত্বটি পালন করেছেন বলে ধন্যবাদ জানাই।
‘রাজপথে মাঝরাতের বাহাদুরি’ প্রতিবেদনটিতে উঠে এসেছে কেমন করে আমাদের রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় অনেকেই রাতে দামি গাড়ি নিয়ে বের হয়ে ‘ড্র্যাগ রেইস’ নামে খুব জোরে গাড়ি চালানোর এক প্রতিযোগিতা করেন। প্রতিবেদনটি ছাপা হয়েছিল আজকের পত্রিকায় গত ১২ জানুয়ারি।
এই রেইস নতুন নয়। কুড়ি বছর আগে আমি যখন গুলশানে বসবাস করতে আসি, তখন থেকেই দেখছি। প্রথমে শুরু হয়েছিল কামাল আতাতুর্ক সড়কে–কাকলী থেকে গুলশান ২ নম্বর পর্যন্ত। সে সময় এত ট্রাফিকও ছিল না, এমন পুলিশের প্রতিবন্ধকতাও ছিল না। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ শুরু হয়ে কতক্ষণ চলত, তা আমার জানা নেই, তবে আমি অনেক বছর ধরে অতি-দামি গাড়িগুলোকে উদ্ধত শব্দে ওই সড়কে প্রতিযোগিতা করতে দেখেছি। অনেক দুর্ঘটনাও ঘটেছে। সাধারণ পথযাত্রী ভুক্তভোগী হয়েছেন।
প্রতিবেদক অনেকের সঙ্গেই কথা বলেছেন। তবে তিনি যা করেননি তা হচ্ছে, তিনি কোনো মনস্তত্ত্ববিদের সঙ্গে কথা বলেননি। তিনি কথা বলেছেন সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের একজন শিক্ষকের সঙ্গে। প্রতিবেদনের দাঁড়িপাল্লাটা ঠিক রাখার জন্যই বোধ হয় শেষে এটুকু জুড়ে দিয়েছেন। শিক্ষক তেমন গুরুত্বপূর্ণ কিছু বলেননি। কারণ, তিনি বিষয়টি নিয়ে আগে চিন্তা করেননি। তিনিও আমার মতো একজন চাকরিজীবী। চাকরি করো, সন্তানদের জিপিএ-৫ পাওয়ার ব্যবস্থা করো–তা-ই সই।
বিত্তবানদের বুঝতে হলে তাদের মনস্তত্ত্ব বোঝার প্রয়োজন রয়েছে। অর্থের মনস্তত্ত্ব বুঝতে হবে। অতিধনীদের সন্তানেরা আমাদের জিপিএ সন্তানদের মতো নয়। তাদের সন্তানদের লক্ষ্য জিপিএ নয়, অর্থ। জিপিএ পেলে ভালো, তবে না হলেও ক্ষতি নেই। আবারও বলছি–ধনীর সন্তানের জীবনের লক্ষ্য আমাদের সন্তানদের মতো নয়। তাদের জীবনের চ্যালেঞ্জগুলোও আমাদের সন্তানদের চেয়ে ভিন্ন।
দেশে-দেশে বিত্তবানদের বিনোদনের ইতিহাস কী বলে? তাঁরা ইয়াট কিনে সমুদ্র ভ্রমণে যান, পোলো খেলেন, প্রাণী শিকার করেন, অধিক গতিতে গাড়ি চালান, নাম না-জানা পশুদের পোষেণ, ঘোড়দৌড়ের আয়োজন করেন, গলফ খেলেন, পাহাড়ে ওঠেন, স্কাইডাইভিং করেন, সমুদ্রের নিচে সাঁতার কাটেন, বরফের মধ্যে স্কি করতে যান এবং দামি দারু পান করেন ও চড়া মূল্যের রেস্তোরাঁয় খাদ্যবিলাস করেন।
আমাদের মতো ছাপোষারা ওই সবের স্বাদ নিতে পারে না, তবে ধনীদের বিনোদনগুলো অনুকরণ করে বিত্তহীন এবং মধ্যবিত্তের জন্যও ওই সব বিনোদন লোভনীয় প্যাকেজ আকারে বাজারজাত করা হয়। ধারকর্জ করে বা অর্থ জমিয়ে বা ক্রেডিট কার্ড থেকে খরচ করে মধ্যবিত্তদেরও আকর্ষণীয় বিনোদনের আস্বাদ নিতে দেখা যায়। মনে আছে ছোটবেলায় আমরা সবাই ইংরেজিতে রচনা লিখতাম ‘ইয়োর হবি’? শখ। পরে জেনেছি শখের দাম লাখ টাকা। শখের আকর্ষণ সবার মনেই কাজ করে।
বিনোদন সব শ্রেণির মানুষেরই প্রয়োজন। অর্থ রোজগারের সংগ্রামে প্রতিনিয়ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে গিয়ে আমাদের যে মানসিক চাপের মুখে পড়তে হয়, বিনোদনের মাধ্যমে তা কিছুটা স্তিমিত হয়। কেউ খেলাধুলা করেন, কেউ সিনেমা বা টেলিভিশন দেখেন, কেউ খোলা মাঠে হাঁটতে যান। কারও বিনোদন বই পড়ায়। কেউ রেস্তোরাঁয় গিয়ে খানাপিনা করে আনন্দ পান। অনেকে যৌনতায় আনন্দ পান। অনেক মানুষের কাছে কেনাকাটা করা একটা বড় বিনোদন।
আমাদের বাপ-দাদারা যেসব বিষয়ে বিনোদিত হতেন, সেগুলো এখন আর আমাদের আন্দোলিত করে না। যুগ, প্রযুক্তি ও বৈশ্বিক হালচালে আমাদের বিনোদনে পরিবর্তন এসেছে। আমাদের সন্তানেরা আরও পরিবর্তিত বিনোদনে আগ্রহী।
বিনোদনকে খাটো চোখে দেখা আমার এই লেখার উদ্দেশ্য নয়; বরং বিনোদনের সুন্দর ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য আমি আমাদের সরকারকে অনুরোধ করতে চাই। অর্থ আয় করলে তা খরচ করার ব্যবস্থা থাকতে হবে। আমাদের দেশে তা অপ্রতুল। এখানে খাওয়া-দাওয়া, সিনেমা দেখা এবং কক্সবাজার-সিলেটে ঘোরাঘুরি করার মধ্যেই সীমিত। সে কারণেই যাঁদের বেশি অর্থ আছে, তাঁরা বিদেশে চলে যান তা খরচ করতে। সেসব দেশে অনেক ব্যবস্থা আছে অর্থ খরচের। খরচও হয় এবং বিনোদনের স্বাদও পাওয়া যায়।
ধরুন ঢাকার বাইরে কোনো জেলায় যদি এই ড্র্যাগ রেইস করার আনুষ্ঠানিক ব্যবস্থা থাকত, ফর্মুলা-ওয়ানের মতো, তাহলে রাজপথের এই বাহাদুরেরা সড়ক ছেড়ে সেখানেই যেতেন। আমরা টিকিট কেটে তা দেখতেও যেতাম।
থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপনের জন্য যদি কোনো সাজানো ব্যবস্থা থাকত, তাহলে সবার মধ্যে চাপা উত্তেজনা কিছুটা হলেও শিথিল করা যেত। পাঁচতারা হোটেলে এবং ক্লাবগুলোতে হয়তো বিত্তবানেরা যেতে পারেন, কিন্তু বাকি সবাই পারেন না। আরও অনেক বিনোদনের বিষয় আছে, যেগুলো আমরা একটু চিন্তা করে গুছিয়ে করলে আমাদের জীবন আরও সহজ হবে এবং জীবনের নিরাপত্তাও একটা কাঠামোর মধ্যে চলে আসবে।
ধরুন আপনি কোনো এক কারণে দেশে মদ্যপানের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করতে চান। কিন্তু তা করে কি মদ্যপান কমাতে পারবেন বলে মনে করেন? মানুষ ঘরে ঘরে মদের গাঁজন শুরু করবে। তেমনই আপনি বিত্তবানদের বিনোদনের পথগুলো রুখতে পারবেন না। শুধু নৈতিকতার কথা বলে এমন অতি-পুঁজিবাদী সমাজে এসব বন্ধ করা যায় না।
পুলিশ নিয়ে রাজপথে মাঝরাতের বাহাদুরি প্রতিবেদনে যা পড়লাম তাতে মনে হয় আইন নিজের গতিতে চলছে না; বিত্তবানদের ফোনে-ফোনে চলছে। পুলিশ কিছু করতে পারছে না। এই না-পারাটা তাঁদেরও গা সওয়া হয়ে গেছে। তাঁরা জানেন বিষয়টি তাঁরা আয়ত্তে আনতে পারবেন না। ক্ষমতাশালীদের ফোন এলেই দোষী ব্যক্তিকে ছেড়ে দিতে হবে, তাই তাঁরা ধনীদের বাদ দিয়ে সমাজের অন্য শ্রেণির মানুষদের নিয়ে ব্যস্ত থাকেন।
এমন ব্যবস্থা শুভ হতে পারে না। একটা পর্যায়ে গিয়ে ভেঙে পড়বে এবং তখন সমাজে অস্থিরতা ঠেকানো কষ্টকর হবে। আমাদের সমাজব্যবস্থা যা-ই হোক, তা চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে, পুঁজিপতিদের নিজেদের স্বার্থেই, অনেক দায়িত্ব পালন করার মতো বুদ্ধি অর্জন করতে হয়। সমাজকে এমন পরিস্থিতিতে পৌঁছাতে দেওয়া যাবে না, যেন তা ভেঙে পড়ে।
আমাদের দেশে বিত্তবানদের সেই বুদ্ধি অর্জন করার সুযোগ সীমাহীন।
ইকরাম কবীর, গল্পকার ও যোগাযোগ পেশায় নিয়োজিত
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
১ দিন আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৫ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৫ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৫ দিন আগে