চাহিদা বেশি দেশি গরুর

মীর মো. মহিব্বুল্লাহ, পটুয়াখালী
আপডেট : ০৮ জুলাই ২০২২, ১২: ৪০
Thumbnail image

পবিত্র ঈদুল আজহার ঠিক আগে জমজমাট পটুয়াখালী জেলার পশুর হাটগুলো। এসব হাটে চলছে শেষ মুহূর্তের কেনাবেচা। হাটগুলোতে বিদেশি জাতের গরুর চেয়ে চাহিদা বেশি দেশি গরুর প্রতি। গত দুই বছরের চেয়ে এবার দামও বেশি। তাই এখনো গরু কম ছাড়ছেন বিক্রেতারা—অভিযোগ ক্রেতাদের। এমনটাই দেখা গেছে বিভিন্ন হাট ঘুরে।

সদর উপজেলার হেতালিয়া বাঁধঘাটের স্থায়ী পশুর হাটে কোরবানির জন্য গরু কিনতে এসেছেন মনিরুজ্জামান। পেশায় তিনি চাকরিজীবী। প্রতিবছর বিদেশি জাতের গরু দিয়ে কোরবানি দিলেও এবার দেশি গরু কেনার সিদ্ধান্ত নেন। হাটে প্রবেশের পর থেকেই দেখা গেছে মনিরুজ্জামান গরুর ব্যাপারী ও মালিকদের সঙ্গে দামদর করছেন। হাটের এ মাথা-ও মাথা পুরোটাই ঘুরছেন, তবু মিলছে না সাধ্যের মধ্যে গরু। শেষমেশ তাঁর চোখে ধরেছে একটি লালচে বর্ণের গরু। গরুর মালিক হেলাল উদ্দিন তাঁর পালিত তিনটি দেশি গরু হাটে আনেন। দুটি বিক্রি হলেও এটিই ছিল তাঁর শেষ গরু, তাই তিনি দাম হাঁকলেন ৭০ হাজার টাকা। শেষ পর্যন্ত ৬৫ হাজার টাকায় মনিরুজ্জামানের কাছে বিক্রি করলেন গরুটি। মনিরুজ্জামান গরুটি কিনলেও দাম নিয়ে ছিলেন একটু অসন্তুষ্ট, আবার দেশি গরু কিনতে পেরে খুশি।

মনিরুজ্জামান বলেন, ‘এ বছর দেশি গরু দিয়ে কোরবানি দেব বলেই হাটে এসেছি। আর না হলে ফার্ম থেকে বিদেশি জাতের গরু কিনতাম। তবে যা দেখলাম, গত দুই বছর গরুর দাম কম থাকলেও এ বছর দাম তুলনামূলক অনেক বেশি।’

কথা হয় আরেক ক্রেতা সোহরাব হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘যে কয়টা হাট ঘুরলাম, সব কয়টি হাটই জমজমাট। তবে দাম চায় বেশি। এখনো দাম ছাড়েন না বিক্রেতারা। এখন দেখছি হাটের শেষ দিনে একটি দেশি গরু কিনে বাড়ি ফিরতে হবে।’

গরুর হাটের ব্যবসায়ী সাত্তার গাজী বলেন, ‘আমি প্রতিবছর কোরবানির আগে ১৫-২০টি গরু নিয়ে হাটে ব্যবসা করি। এ বছর হাটে ১৩টি গরু উঠাইছি। এখন পর্যন্ত একটি গরু বিক্রি করেছি। আমার এখানে সর্বনিম্ন দেড় লাখ টাকার গরু আছে, আর সর্বোচ্চ আছে ৩ লাখ টাকার। গোখাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় গরুর খরচ বেড়েছে, তাই এ বছর দাম একটু বেশি। ক্রেতারা দেশি গরু বেশি কিনছেন।’

সদর উপজেলার মাঠে গরুর হাট ইজারাদার সিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, ‘আমাদের হাট তিন দিন হয়েছে শুরু করেছি। গত বছরের তুলনায় এ বছর বেচাকেনা ভালো। এখানে দেশি গরু বিক্রি বেশি হচ্ছে। আমাদের হাঁটে পাঁচ শতাধিক গরু এবং ২০০-এর মতো ছাগল রয়েছে। আশা করি বাকি দিনগুলো ভালো বেচাকেনা হবে।’

জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, পটুয়াখালী জেলায় এ বছর ৮০টি পশুর হাট বসেছে। এর মধ্যে স্থায়ী ৬৩টি এবং অস্থায়ী ১৭টি। এ ছাড়া এ বছর এই জেলায় হাঁটে বিক্রির জন্য ১ লাখ ২৮ হাজার ৯৫টি পশুর চাহিদা ধরা হয়েছে। তবে জেলায় ১ লাখ ৩৪ হাজার ৫০টি গরু-ছাগল প্রস্তুত করা হয়েছে, যা চাহিদার থেকে ৬ হাজার বেশি।

পটুয়াখালী প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. সঞ্জীব কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবে পটুয়াখালী জেলার হাটগুলোতে পশু বেচাকেনা হচ্ছে। হাটে যাতে কোনো ধরনের অসুস্থ পশু না আনা হয়, তাই প্রতিটি হাটে আমাদের একটি টিম কাজ করছে।’

পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি) মোহাম্মদ শহীদুল্লা বলেন, ‘ঈদুল আজহার পশুর হাটে বিশৃঙ্খলা এড়াতে ও নকল টাকা শনাক্তে কাজ করছি আমরা। কোরবানির পশু যাতে চুরি না হয়ে যায়, সে জন্যও তৎপর রয়েছে জেলা পুলিশ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত