পি চিদাম্বরম
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একজন স্বঘোষিত ‘শক্তিশালী’ নেতা। তিনি প্রায়ই ৫৬ ইঞ্চি বুকের ছাতি নিয়ে গর্ব করতেন। তাঁর অনুসারীরা খান মার্কেট চক্রের নিয়ন্ত্রণ, শহুরে নকশালদের উপড়ে ফেলা, টুকড়ে-টুকড়ে গ্যাংকে ধ্বংস করা, পাকিস্তানকে শিক্ষা দেওয়া, সরকারি সহযোগী ভাষা হিসেবে কার্যত ইংরেজিকে বিলুপ্ত করা, মূলধারার মিডিয়াকে বশীভূত করা এবং বিশ্বগুরু হিসেবে ভারতের মর্যাদার দিকে ইঙ্গিত করে।
একজন দাপুটে নেতার সঙ্গে আছে লোকসভার ৩০৩টি আসন। আছেন ১২ জন মুখ্যমন্ত্রী, যাঁরা নিজ নিজ রাজ্যে প্রচারে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বিজেপির এককভাবে ৩৭০ আসনের দিকে এগিয়ে যাওয়া—এটাই উত্তম পন্থা হওয়া উচিত ছিল। যা-ই হোক, যেহেতু বিজেপি নেতারা ব্যক্তিগতভাবে স্বীকার করেছেন, ৩৭০ বা ৪০০+ আসন পাওয়া সম্ভব নয়, সে জন্য বিজেপি সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে খুশি হবেন তাঁরা।
কেন গিয়ার পরিবর্তন
নরেন্দ্র মোদি তাঁর প্রচার শুরু করেছিলেন বেশ আত্মবিশ্বাস আর দৃঢ়তার সঙ্গে। কংগ্রেসের ইশতেহার প্রকাশিত হয় ৫ এপ্রিল। তখন মোদি অবজ্ঞার সঙ্গে তা উপেক্ষা করেছিলেন। বিজেপির ইশতেহারটি প্রকাশিত হয় ১৪ এপ্রিল। তবে এর বিষয়বস্তুর আঙ্গিকে তা প্রচারের জন্য কোনো প্রয়াস ছিল না। ইশতেহারের শিরোনাম ছিল ‘মোদি কি গ্যারান্টি’। এর বিষয়বস্তু পাশ কাটিয়ে মোদি যখনই একটি সমাবেশে বক্তব্য দিয়েছেন, তিনি ঘোষণা দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন, ‘এটিই মোদির গ্যারান্টি।’ মোদির গ্যারান্টির সংখ্যা আমি হারিয়ে ফেলেছি।
যা-ই হোক, যা দাঁড়িয়েছে তা হলো, নরেন্দ্র মোদি সাধারণ মানুষের সবচেয়ে গভীর উদ্বেগের দুটি বিষয়—বেকারদের জন্য কর্মসংস্থান বা ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি সম্পর্কে কোনো গ্যারান্টি দেননি। তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে এ ব্যাপারে কথা বলেননি, যেমন একজন প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনের সময় বলা উচিত। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, উন্নয়ন, কৃষিসংকট, শিল্পে রুগ্ণতা, বহুমাত্রিক দারিদ্র্য, আর্থিক স্থিতিশীলতা, জাতীয় ঋণ, পারিবারিক ঋণ, শিক্ষার মান, স্বাস্থ্যসেবা, চীনা দখল বা শত শত গুরুতর বিষয় নিয়ে কোনো কথা বলেননি প্রধানমন্ত্রী।
গত ১৯ এপ্রিল প্রথম ধাপে ১০২ আসনে ভোট গ্রহণ শেষ হয়। সম্ভবত ২১ এপ্রিল তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, কিছু একটা গোলমাল হয়ে গেছে এবং প্রধানমন্ত্রী মোদি রাজস্থানের জালোর এবং বাঁশোয়ারায় জনসভায় কংগ্রেসের বিরুদ্ধে পূর্ণোদ্যমে আক্রমণ শুরু করেন। মোদি বলেন: ‘কংগ্রেস বামপন্থী এবং শহুরে নকশালদের খপ্পরে আটকা পড়েছে। কংগ্রেস তার ইশতেহারে যা বলেছে, তা গুরুতর ও উদ্বেগজনক। তারা বলেছে, “সরকার গঠন করলে প্রত্যেকের সম্পত্তির জরিপ করা হবে।” আমাদের বোনেরা কত সোনার মালিক, সরকারি কর্মচারীদের কাছে কত টাকা আছে, তা খতিয়ে দেখা হবে। তারা আরও বলেছে যে আমাদের বোনদের মালিকানাধীন সোনা সমানভাবে বিতরণ করা হবে। সরকারের কি আপনার সম্পত্তি নেওয়ার অধিকার আছে?’
আমরা কেবল অনুমান করতে পারি, ১৯ থেকে ২১ এপ্রিলের মধ্যে মোদি এমন কিছু তথ্য (সম্ভবত গোয়েন্দা সূত্রে) পেয়েছেন, যা তাঁকে গিয়ার পরিবর্তন করতে বাধ্য করেছিল।
কেন মিথ্যা এবং আরও মিথ্যা
ওপরোল্লিখিত মোদির বক্তব্যের প্রতিটি অভিযোগ মিথ্যা। দিন যত গড়াচ্ছে, মিথ্যা আরও বড় এবং আপত্তিকর হয়ে উঠছে। নরেন্দ্র মোদি অভিযোগ করেছেন, সম্পত্তি থেকে, সোনা থেকে, মঙ্গলসূত্র থেকে, নারীধন থেকে শুরু করে বাড়িঘর—কংগ্রেস সব বাজেয়াপ্ত করবে এবং মুসলমান, অনুপ্রবেশকারী এবং যাদের বেশি সন্তান রয়েছে, তাদের মধ্যে বিতরণ করবে। অন্য একটি সমাবেশে মোদি ধর্মভিত্তিক কোটা এবং উত্তরাধিকার কর নিয়ে আগ্রাসী ভাষায় কথা বলেন। মিথ্যার শেষ ছিল না তাতে। মোদি এমনকি ‘মহিষের ওপর উত্তরাধিকার কর’-এর মতো একটি অর্থনৈতিক রত্ন নিক্ষেপ করেন এবং বলেন, যাঁর দুটি মহিষ থাকবে, তাঁর থেকে একটি কেড়ে নেওয়া হবে।
তাৎক্ষণিকভাবে এর উদ্দেশ্য ছিল পরিষ্কার। এটা ছিল ভারতীয় মুসলমানদের গায়ে কালিমা লেপন করা এবং ভোটারদের মেরূকরণের মাধ্যমে হিন্দু ভোটারদের একত্র করা।
প্রধানমন্ত্রী কী কী মিথ্যা বলছেন, তা নিশ্চয় গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী কেন এমন মিথ্যা কথা বলছেন। উল্লেখ্য, এটি একটি মিথ্যা নয়, এটি মিথ্যার একটি মালা এবং এই মিথ্যা চলতেই থাকে। একজন প্রধানমন্ত্রী, যিনি ৩৭০ বা ৪০০+ আসনে জিততে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন, তিনি কেন তাঁর প্রতিপক্ষদের সম্পর্কে বেপরোয়াভাবে মিথ্যার তির ছুড়বেন? ভাঙা রেকর্ড বাজিয়ে তিনি বিরোধী দলগুলোকে বিতর্কে জড়াতে চান। মোদির পছন্দ মিথ্যা, কাজের রেকর্ড নয়। এটাই আসলে উন্মোচন করতে হবে।
কেন নিজেকে সন্দেহ
ধরুন, ইভিএমের গোপন রহস্য জানেন নরেন্দ্র মোদি। তারপরও তাঁর উদ্বিগ্ন হওয়ার হাজারো কারণ থাকতে পারে। মূল কারণ মাঠের পরিস্থিতি, যা ২০১৯-এর থেকে একেবারেই আলাদা। প্রথমত, মোদি নির্বাচনের খেলাটা নিজের মতো করে সেট করতে পারছেন না। তিনি বিতর্কের সূচনা করছেন না, কংগ্রেসের ইশতেহারে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন মাত্র, যদিও তার সবই কাল্পনিক। দ্বিতীয়ত, তিনি কংগ্রেসের প্রতিশ্রুতির সঙ্গে তাঁর প্রতিশ্রুতি মেলাতে পারছেন না। ভোটারদের নজর কাড়তে পারছেন না। তৃতীয়ত, জনগণ বিজেপির ক্লান্তিকর স্লোগানে ক্ষুব্ধ। কিন্তু মোদির ‘আচ্ছে দিন’ আর আসছে না। আর এর মতো একটি নতুন স্লোগানও তৈরি করতে পারছেন না। চতুর্থত, কম ভোট পড়ার হার তাঁকে হতাশ করে থাকতে পারে। কারণ এটি এই ইঙ্গিত হতে পারে যে তাঁর অনুগত ভোটাররা ভোটবিমুখ। সর্বশেষ, বুথগুলোতে আরএসএস স্বেচ্ছাসেবকদের অনুপস্থিতি এবং তাদের শীর্ষস্থানীয় কর্তাদের নীরবতা বিজেপি শিবিরে বিপদের ঘণ্টা বেজে ওঠার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
সম্ভবত কংগ্রেস এবং অন্যান্য বিরোধী দল উল্লেখযোগ্য সাফল্য পাবে। এ ধরনের ‘লাভ’ বিজেপির জন্য ‘নিট ক্ষতি’র কারণ হবে কি না, তা কোটি টাকার প্রশ্ন। এটা হতে পারে যে মোদি আরও বাস্তববাদী হবেন এবং বুঝবেন, ২০২৪ সালের নির্বাচনে জেতা মানেই সব পাওয়া হয়ে গেল—তা নয়। মোদি এভাবেই উপসংহার টানতে পারেন যে অধরা লাভ নয়; বরং সম্ভাব্য নিট লোকসান হিসাব করা উচিত। এই চিন্তা তাঁকে উদ্বিগ্ন করতে পারে। আর এই উদ্বেগ হয়তো মিথ্যায় রূপান্তরিত হচ্ছে।
আমি ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারি না যে জনগণ কীভাবে ভোট দেবে। তবে আমি নিশ্চিত, জনগণ নরেন্দ্র মোদিকে মিথ্যার মাধ্যম হিসেবে দেখতে পাচ্ছে এবং তারা এই ভেবে বিস্মিত যে একজন দাপুটে নেতাকে কেন মিথ্যা কথা বলতে হচ্ছে?
পি চিদাম্বরম, ভারতের কংগ্রেস নেতা ও সাবেক অর্থমন্ত্রী
(ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকায় প্রকাশিত লেখাটি ইংরেজি থেকে অনূদিত)
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একজন স্বঘোষিত ‘শক্তিশালী’ নেতা। তিনি প্রায়ই ৫৬ ইঞ্চি বুকের ছাতি নিয়ে গর্ব করতেন। তাঁর অনুসারীরা খান মার্কেট চক্রের নিয়ন্ত্রণ, শহুরে নকশালদের উপড়ে ফেলা, টুকড়ে-টুকড়ে গ্যাংকে ধ্বংস করা, পাকিস্তানকে শিক্ষা দেওয়া, সরকারি সহযোগী ভাষা হিসেবে কার্যত ইংরেজিকে বিলুপ্ত করা, মূলধারার মিডিয়াকে বশীভূত করা এবং বিশ্বগুরু হিসেবে ভারতের মর্যাদার দিকে ইঙ্গিত করে।
একজন দাপুটে নেতার সঙ্গে আছে লোকসভার ৩০৩টি আসন। আছেন ১২ জন মুখ্যমন্ত্রী, যাঁরা নিজ নিজ রাজ্যে প্রচারে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বিজেপির এককভাবে ৩৭০ আসনের দিকে এগিয়ে যাওয়া—এটাই উত্তম পন্থা হওয়া উচিত ছিল। যা-ই হোক, যেহেতু বিজেপি নেতারা ব্যক্তিগতভাবে স্বীকার করেছেন, ৩৭০ বা ৪০০+ আসন পাওয়া সম্ভব নয়, সে জন্য বিজেপি সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে খুশি হবেন তাঁরা।
কেন গিয়ার পরিবর্তন
নরেন্দ্র মোদি তাঁর প্রচার শুরু করেছিলেন বেশ আত্মবিশ্বাস আর দৃঢ়তার সঙ্গে। কংগ্রেসের ইশতেহার প্রকাশিত হয় ৫ এপ্রিল। তখন মোদি অবজ্ঞার সঙ্গে তা উপেক্ষা করেছিলেন। বিজেপির ইশতেহারটি প্রকাশিত হয় ১৪ এপ্রিল। তবে এর বিষয়বস্তুর আঙ্গিকে তা প্রচারের জন্য কোনো প্রয়াস ছিল না। ইশতেহারের শিরোনাম ছিল ‘মোদি কি গ্যারান্টি’। এর বিষয়বস্তু পাশ কাটিয়ে মোদি যখনই একটি সমাবেশে বক্তব্য দিয়েছেন, তিনি ঘোষণা দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন, ‘এটিই মোদির গ্যারান্টি।’ মোদির গ্যারান্টির সংখ্যা আমি হারিয়ে ফেলেছি।
যা-ই হোক, যা দাঁড়িয়েছে তা হলো, নরেন্দ্র মোদি সাধারণ মানুষের সবচেয়ে গভীর উদ্বেগের দুটি বিষয়—বেকারদের জন্য কর্মসংস্থান বা ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি সম্পর্কে কোনো গ্যারান্টি দেননি। তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে এ ব্যাপারে কথা বলেননি, যেমন একজন প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনের সময় বলা উচিত। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, উন্নয়ন, কৃষিসংকট, শিল্পে রুগ্ণতা, বহুমাত্রিক দারিদ্র্য, আর্থিক স্থিতিশীলতা, জাতীয় ঋণ, পারিবারিক ঋণ, শিক্ষার মান, স্বাস্থ্যসেবা, চীনা দখল বা শত শত গুরুতর বিষয় নিয়ে কোনো কথা বলেননি প্রধানমন্ত্রী।
গত ১৯ এপ্রিল প্রথম ধাপে ১০২ আসনে ভোট গ্রহণ শেষ হয়। সম্ভবত ২১ এপ্রিল তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, কিছু একটা গোলমাল হয়ে গেছে এবং প্রধানমন্ত্রী মোদি রাজস্থানের জালোর এবং বাঁশোয়ারায় জনসভায় কংগ্রেসের বিরুদ্ধে পূর্ণোদ্যমে আক্রমণ শুরু করেন। মোদি বলেন: ‘কংগ্রেস বামপন্থী এবং শহুরে নকশালদের খপ্পরে আটকা পড়েছে। কংগ্রেস তার ইশতেহারে যা বলেছে, তা গুরুতর ও উদ্বেগজনক। তারা বলেছে, “সরকার গঠন করলে প্রত্যেকের সম্পত্তির জরিপ করা হবে।” আমাদের বোনেরা কত সোনার মালিক, সরকারি কর্মচারীদের কাছে কত টাকা আছে, তা খতিয়ে দেখা হবে। তারা আরও বলেছে যে আমাদের বোনদের মালিকানাধীন সোনা সমানভাবে বিতরণ করা হবে। সরকারের কি আপনার সম্পত্তি নেওয়ার অধিকার আছে?’
আমরা কেবল অনুমান করতে পারি, ১৯ থেকে ২১ এপ্রিলের মধ্যে মোদি এমন কিছু তথ্য (সম্ভবত গোয়েন্দা সূত্রে) পেয়েছেন, যা তাঁকে গিয়ার পরিবর্তন করতে বাধ্য করেছিল।
কেন মিথ্যা এবং আরও মিথ্যা
ওপরোল্লিখিত মোদির বক্তব্যের প্রতিটি অভিযোগ মিথ্যা। দিন যত গড়াচ্ছে, মিথ্যা আরও বড় এবং আপত্তিকর হয়ে উঠছে। নরেন্দ্র মোদি অভিযোগ করেছেন, সম্পত্তি থেকে, সোনা থেকে, মঙ্গলসূত্র থেকে, নারীধন থেকে শুরু করে বাড়িঘর—কংগ্রেস সব বাজেয়াপ্ত করবে এবং মুসলমান, অনুপ্রবেশকারী এবং যাদের বেশি সন্তান রয়েছে, তাদের মধ্যে বিতরণ করবে। অন্য একটি সমাবেশে মোদি ধর্মভিত্তিক কোটা এবং উত্তরাধিকার কর নিয়ে আগ্রাসী ভাষায় কথা বলেন। মিথ্যার শেষ ছিল না তাতে। মোদি এমনকি ‘মহিষের ওপর উত্তরাধিকার কর’-এর মতো একটি অর্থনৈতিক রত্ন নিক্ষেপ করেন এবং বলেন, যাঁর দুটি মহিষ থাকবে, তাঁর থেকে একটি কেড়ে নেওয়া হবে।
তাৎক্ষণিকভাবে এর উদ্দেশ্য ছিল পরিষ্কার। এটা ছিল ভারতীয় মুসলমানদের গায়ে কালিমা লেপন করা এবং ভোটারদের মেরূকরণের মাধ্যমে হিন্দু ভোটারদের একত্র করা।
প্রধানমন্ত্রী কী কী মিথ্যা বলছেন, তা নিশ্চয় গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী কেন এমন মিথ্যা কথা বলছেন। উল্লেখ্য, এটি একটি মিথ্যা নয়, এটি মিথ্যার একটি মালা এবং এই মিথ্যা চলতেই থাকে। একজন প্রধানমন্ত্রী, যিনি ৩৭০ বা ৪০০+ আসনে জিততে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন, তিনি কেন তাঁর প্রতিপক্ষদের সম্পর্কে বেপরোয়াভাবে মিথ্যার তির ছুড়বেন? ভাঙা রেকর্ড বাজিয়ে তিনি বিরোধী দলগুলোকে বিতর্কে জড়াতে চান। মোদির পছন্দ মিথ্যা, কাজের রেকর্ড নয়। এটাই আসলে উন্মোচন করতে হবে।
কেন নিজেকে সন্দেহ
ধরুন, ইভিএমের গোপন রহস্য জানেন নরেন্দ্র মোদি। তারপরও তাঁর উদ্বিগ্ন হওয়ার হাজারো কারণ থাকতে পারে। মূল কারণ মাঠের পরিস্থিতি, যা ২০১৯-এর থেকে একেবারেই আলাদা। প্রথমত, মোদি নির্বাচনের খেলাটা নিজের মতো করে সেট করতে পারছেন না। তিনি বিতর্কের সূচনা করছেন না, কংগ্রেসের ইশতেহারে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন মাত্র, যদিও তার সবই কাল্পনিক। দ্বিতীয়ত, তিনি কংগ্রেসের প্রতিশ্রুতির সঙ্গে তাঁর প্রতিশ্রুতি মেলাতে পারছেন না। ভোটারদের নজর কাড়তে পারছেন না। তৃতীয়ত, জনগণ বিজেপির ক্লান্তিকর স্লোগানে ক্ষুব্ধ। কিন্তু মোদির ‘আচ্ছে দিন’ আর আসছে না। আর এর মতো একটি নতুন স্লোগানও তৈরি করতে পারছেন না। চতুর্থত, কম ভোট পড়ার হার তাঁকে হতাশ করে থাকতে পারে। কারণ এটি এই ইঙ্গিত হতে পারে যে তাঁর অনুগত ভোটাররা ভোটবিমুখ। সর্বশেষ, বুথগুলোতে আরএসএস স্বেচ্ছাসেবকদের অনুপস্থিতি এবং তাদের শীর্ষস্থানীয় কর্তাদের নীরবতা বিজেপি শিবিরে বিপদের ঘণ্টা বেজে ওঠার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
সম্ভবত কংগ্রেস এবং অন্যান্য বিরোধী দল উল্লেখযোগ্য সাফল্য পাবে। এ ধরনের ‘লাভ’ বিজেপির জন্য ‘নিট ক্ষতি’র কারণ হবে কি না, তা কোটি টাকার প্রশ্ন। এটা হতে পারে যে মোদি আরও বাস্তববাদী হবেন এবং বুঝবেন, ২০২৪ সালের নির্বাচনে জেতা মানেই সব পাওয়া হয়ে গেল—তা নয়। মোদি এভাবেই উপসংহার টানতে পারেন যে অধরা লাভ নয়; বরং সম্ভাব্য নিট লোকসান হিসাব করা উচিত। এই চিন্তা তাঁকে উদ্বিগ্ন করতে পারে। আর এই উদ্বেগ হয়তো মিথ্যায় রূপান্তরিত হচ্ছে।
আমি ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারি না যে জনগণ কীভাবে ভোট দেবে। তবে আমি নিশ্চিত, জনগণ নরেন্দ্র মোদিকে মিথ্যার মাধ্যম হিসেবে দেখতে পাচ্ছে এবং তারা এই ভেবে বিস্মিত যে একজন দাপুটে নেতাকে কেন মিথ্যা কথা বলতে হচ্ছে?
পি চিদাম্বরম, ভারতের কংগ্রেস নেতা ও সাবেক অর্থমন্ত্রী
(ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকায় প্রকাশিত লেখাটি ইংরেজি থেকে অনূদিত)
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
১ দিন আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৫ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৫ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৫ দিন আগে