মাস্টারদা সূর্য সেন

সম্পাদকীয়
প্রকাশ : ১২ জানুয়ারি ২০২৪, ০৮: ০০

গত শতকের তিরিশের দশকে একদল তরুণ বিপ্লবী ভারতবর্ষ স্বাধীন করতে মৃত্যুকে উপেক্ষা করে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন মরণপণ লড়াইয়ে। তাঁদেরই একজন ছিলেন মাস্টারদা সূর্য সেন। তাঁর প্রকৃত নাম সূর্য কুমার সেন। তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া গ্রামে।

কলেজজীবনেই তিনি বিপ্লবীদের সংস্পর্শে আসেন। স্নাতক পাসের পর তিনি শিক্ষক হিসেবে এক বিদ্যালয়ে যোগ দেন। তিনি মূলত এই পেশা গ্রহণ করেছিলেন তরুণ শিক্ষার্থীদের বিপ্লবী চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে। তিনি বিপ্লবী দল ‘যুগান্তর’-এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল রাত ৮টায় বিদ্রোহের দিন ঠিক করা হলেও সেটা পিছিয়ে ১০টা করা হয়। চারটা বাড়ি থেকে চারটা দল আক্রমণের জন্য বের হয়। একটি দল আগে থেকেই রেললাইনের ফিশপ্লেট খুলে নেয়। ফলে সমগ্র বাংলা থেকে চট্টগ্রাম বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। অন্য একটি দল চট্টগ্রামের টেলিগ্রাফ অফিস আক্রমণ করে পেট্রল দিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। আরেকটি দল রেলওয়ের অস্ত্রাগার দখল করে নেয়। সর্বশেষ পরিকল্পনা অনুযায়ী, বিপ্লবীরা পুলিশের রিজার্ভ ব্যারাক দখল করে নেয় এবং সেখানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে। চট্টগ্রাম সম্পূর্ণরূপে ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত ছিল চার দিন।

সূর্য সেনসহ ছয়জন শীর্ষস্থানীয় বিপ্লবীকে ধরার জন্য ইংরেজ সরকার ৫ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে। ২২ এপ্রিল তাঁদের বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র ইংরেজ সৈন্যদের দুই ঘণ্টা প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। এতে ব্রিটিশ বাহিনীর প্রায় ১০০ জন নিহত এবং বিপ্লবী বাহিনীর ১২ জন শহীদ হন।

এ ঘটনায় ব্রিটিশ পুলিশ অবশেষে সূর্য সেনসহ কয়েকজন সহযোগীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। তাঁদের কারাগারে বন্দী রেখে বিচারকাজ চলে। রায়ে সূর্য সেনকে ফাঁসির নির্দেশ দেওয়া হয়। জেলখানায় তাঁকে নির্মম নির্যাতন করা হয়। ১৯৩৪ সালের ১২ জানুয়ারি এই রায় কার্যকর করা হয়। ফাঁসির পর তাঁর মৃতদেহ বঙ্গোপসাগরে ভাসিয়ে দেওয়া হয়।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত