Ajker Patrika

প্রজননকেন্দ্রে ‘বাটাগুর বাসকা’র ৩৩ ছানা

মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি 
আপডেট : ০৮ মে ২০২২, ১২: ০১
প্রজননকেন্দ্রে ‘বাটাগুর বাসকা’র ৩৩ ছানা

সুন্দরবনের করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজননকেন্দ্রে বিলুপ্তপ্রায় কাইট্রা কচ্ছপ বা ‘বাটাগুর বাসকা’ প্রজাতির কচ্ছপের ৩৩টি ছানা জন্ম নিয়েছে। ৬২ দিন নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে রাখার পর গতকাল শনিবার সকালে ৩৪টি ডিম থেকে এই ৩৩টি ছানা পেয়েছে কেন্দ্র। প্রজননকেন্দ্র থেকে জানানো হয়েছে, ৩৪টি ডিমের মধ্যে একটি অনুর্বর ছিল। বাকি ডিম থেকে সদ্য ফুটে বের হওয়া বাচ্চাগুলোর শারীরিক অবস্থা খুবই ভালো। বাচ্চাগুলো সুস্থ ও সবল আছে। শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে কেন্দ্রের সুরক্ষিত চৌবাচ্চায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজননকেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, বাটাগুর বাসকা প্রজাতির কচ্ছপ বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার উপকূলীয় অঞ্চলে দেখা যেত। কিন্তু অন্যান্য দেশে এই প্রজাতির কচ্ছপ এখন প্রায় দেখাই যায় না। বাংলাদেশেও এই প্রজাতির কচ্ছপ বিলুপ্তির পথে। এই প্রজাতিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য বাংলাদেশে ২০১০ সালে ভিয়েনা চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের সহায়তায় বন বিভাগ, আমেরিকান টারটেল সারভাইভাল অ্যালায়েন্স ও বেসরকারি সংস্থা ক্যারিনামের যৌথ উদ্যোগে গাজীপুরের ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানে এই প্রজাতির বংশবিস্তার রক্ষায় প্রথম কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১২ ও ১৩ সালে দুই বছরে এ কেন্দ্রে কৃত্রিমভাবে ৮৪টি বাচ্চা উৎপাদন করা হয়। যেহেতু এই প্রজাতি উপকূলীয় অঞ্চলে পাওয়া যায়, সে জন্য ২০১৪ সালে অন্য তিনটি সংস্থার সঙ্গে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে বন বিভাগের করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজননকেন্দ্রে এর দ্বিতীয় প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয়।

গাজীপুরের ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান থেকে এবং জেলেদের জালে আটক বড় ৮টি ও ছোট ২০টি মিলিয়ে মোট ২৮টি বাটাগুর বাসকা কচ্ছপ দিয়ে এর কার্যক্রম শুরু হয়। একজন কর্মকর্তা ও একজন কর্মচারী দিয়ে এই কেন্দ্রের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। বাটাগুর বাসকার প্রজনন, বংশবিস্তার, খাদ্যাভ্যাস, গতিবিধি নির্ণয়সহ নানা বিষয়ে তাঁরা কাজ করে যাচ্ছেন।

করমজল কেন্দ্রের কচ্ছপ প্রজনন ও রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ আব্দুর রব বলেন, ‘এ কেন্দ্রে ২০১৭ সাল থেকে কচ্ছপগুলো ডিম দেওয়া শুরু করে। সে বছর ১৯ মার্চ ৩২টি ডিম দেয় ‘বাটাগুর বাসকা’ প্রজাতির একটি নারী কচ্ছপ। সেই ৩২টি ডিম থেকে গত ২১-২৩ মে দুপুর পর্যন্ত তিন ধাপে ২৯টি ডিম থেকে ২৯টি বাচ্চা পায় কেন্দ্র। বাকি তিনটি ডিমের মধ্যে একটি বাচ্চা ডিমের মধ্যে মারা যায় ও দুটি নষ্ট হয়ে যায়। এর আগে ওই বছর ১৩ মে অন্য একটি নারী কচ্ছপের দেওয়া ৩১টি ডিম থেকে ২৮টি বাচ্চা পায় কেন্দ্র। ২০১৭ সালে দুই নারী কচ্ছপের দেওয়া ৬৩টি ডিম থেকে ৫৭টি বাচ্চা পাওয়া যায়। ২০১৮ সালে ৪৬টি ডিম দেয়, তা থেকে ২২টি বাচ্চা হয়।

২০১৯ সালে একটি বাটাগুর বাসকা কচ্ছপ ৩২টি ডিম দেয়; যা থেকে ৩২টি ছানা ফোটে। চলতি বছর আমরা দুটি মা কচ্ছপ থেকে ৩৪টি ডিম পেয়েছি। এর থেকে এই ৩৩টি বাচ্চা আমরা পেয়েছি। আব্দুর রব আরও বলেন, ‘এ কেন্দ্রে জন্ম নেওয়া কচ্ছপগুলো একটু বড় হলে পর্যায়ক্রমে সুন্দরবনসহ উপকূলীয় নদ-নদীতে ছেড়ে দেওয়া হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহাবুব আলম বলেন, দেশি ভাষায় পরিচিত কাইট্যা কচ্ছপ বা বড় কাইট্রার বৈজ্ঞানিক নাম বাটাগুর বাসকা। ইংরেজিতে একে নর্দার্ন রিভার টেরাপিন বলে। একটি পূর্ণ বয়স্ক বাটাগুর বাসকার ওজন দাঁড়ায় ১৮ থেকে ২৩ কেজি পর্যন্ত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আমিনুল ইসলাম নন, শিক্ষা উপদেষ্টা হচ্ছেন অধ্যাপক আবরার

গণপিটুনিতে নিহত জামায়াত কর্মী নেজাম ও তাঁর বাহিনী গুলি ছোঁড়ে, মিলেছে বিদেশি পিস্তল: পুলিশ

উপদেষ্টা হচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

বসুন্ধরায় ছিনতাইকারী সন্দেহে ২ বিদেশি নাগরিককে মারধর

বিএনপির দুই পেশাজীবী সংগঠনের কমিটি বিলুপ্ত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত