যখন তাঁর পা দুটি সবার লক্ষ্য

ক্রীড়া ডেস্ক
প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২২, ১০: ৫০
আপডেট : ২৮ নভেম্বর ২০২২, ১১: ৩৪

দুর্দান্ত ছন্দে থেকে বিশ্বকাপ খেলতে কাতারে এসেছিলেন নেইমার। ব্রাজিলের ‘হেক্সা’ জয়ের মিশনে এবারও কোচ তিতের অন্যতম ভরসা তিনি। গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে সার্বিয়ার বিপক্ষে গোল না পেলেও চেনা চেহারায় ছিলেন ৩০ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড। কিন্তু প্রতিপক্ষের লক্ষ্য যাঁর দুটি পা, তিনি কি আর চোট না পেয়ে থাকতে পারেন!

আবারও চোটে পড়ে বিশ্বকাপের পরের দুই ম্যাচের জন্য ছিটকে গেছেন নেইমার। সার্বিয়ার বিপক্ষে শেষ বাঁশি বাজার ১৩ মিনিট আগে ডান পায়ের গোড়ালিতে আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। ম্যাচের পর এমআরআই করার পর রিপোর্ট আসে, লিগামেন্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাঁর। পুরো ম্যাচে ৯ বার ফাউলের শিকার হয়েছেন ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার।

বিশ্বকাপে খেলবেন আর নেইমার চোটে পড়বেন, এটাই যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। জাতীয় দলের জার্সিতে হোক বা ক্লাব ফুটবলে—ক্যারিয়ারে নেইমার যে কতবার চোটে পড়েছেন, ইয়ত্তা নেই। ২০১৭ সালে বার্সেলোনা ছেড়ে পিএসজিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে এখনো পর্যন্ত চোট, অসুস্থতা, ফিটনেস সমস্যা ও বিশ্রাম মিলিয়ে মোট ৩৫৬ দিন মাঠের বাইরে কাটিয়েছেন। এর মধ্যে মেটাটারসাল বা পায়ের পাতার হাড়ে চোট পেয়ে ২০১৭-১৮ মৌসুম ৯০ দিনের জন্য ছিটকে যান। এ তো গেল নেইমারের ক্লাব ক্যারিয়ারের চোটের কথা। দেখে নেওয়া যাক, গত দুই বিশ্ব আসরে তাঁর চোটের ঘটনা—

 ২০১৪ বিশ্বকাপ
ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ হওয়ায় সেবার ফেবারিট ছিল ব্রাজিল। সবার আশা ছিল সেলেসাওদের হেক্সা মিশন পূরণ করবেন নেইমার। কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনালে কলম্বিয়ার বিপক্ষে কোমরে মারাত্মক চোট পেয়ে বিশ্বকাপই শেষ হয়ে যায় নেইমারের। ভাগ্য ভালো যে, সেই চোট কাটিয়ে ফুটবলে ফিরতে পেরেছেন তিনি। চোটটা এতই মারাত্মক ছিল যে, ক্যারিয়ারই শেষ হয়ে যেতে পারত তাঁর। ম্যাচটিতে ফাউল হয়েছিল মোট ৫৪টি। ওই বিশ্বকাপে নেইমারের ফাউলের শিকারের অনুপাতের হার ছিল ৩ দশমিক ৬।

নেইমারের পা দেখছেন পাকুয়েতা২০১৮ বিশ্বকাপ
রাশিয়া বিশ্বকাপেও তিতের অন্যতম অস্ত্র ছিলেন নেইমার। বড় চোট কাটিয়ে দলে ফিরে সেই আশাও জাগিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এবারও সেলেসাওরা বিদায় নেয় শেষ আট থেকে। নেইমার অবশ্য প্রতি ম্যাচেই খেলেছিলেন। পুরো আসরে তাঁর ফাউলের শিকার হওয়ার অনুপাতের হার ছিল ৫ দশমিক ২।

নেইমারের ফেরার বার্তা
এই জার্সি পরে আমি যে গর্ব ও ভালোবাসা অনুভব করি, তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। যদি ঈশ্বর আমাকে নির্দিষ্ট কোনো একটি দেশে জন্ম নেওয়ার জন্য বেছে নিতে সুযোগ দেন, তবে সব সময় সেটি হবে ব্রাজিল। আমি জীবনে কোনো কিছু সহজে লাভ করিনি। আমাকে সব সময় নিজের স্বপ্ন ও লক্ষ্যের পথে ক্রমাগত ছুটতে হয়েছে। আজকের এই দিনটি আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন মুহূর্তগুলোর একটি। এবং আবারও বিশ্বকাপে। হ্যাঁ, আমি চোটে পড়েছি। এটা যন্ত্রণা দেবে, তবে আমি ফিরে আসতে পারব। নিজের দেশ, সতীর্থ এবং নিজেকে সহায়তা করতে সম্ভাব্য সবকিছু করব। অনেক অপেক্ষার পর শত্রুরা এভাবে আমাকে হারিয়ে দেবে? কখনো না। আমি সৃষ্টিকর্তার সন্তান এবং আমার বিশ্বাস চিরন্তন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত