সাজিদ মোহন, শিশুসাহিত্যিক
এক ভদ্রলোক বিয়ের জন্য কনেপক্ষের কাছে জীবনবৃত্তান্ত পাঠাবেন। সঙ্গে ছবিও লাগবে। ভদ্রলোক পড়লেন জটিল সমস্যায়। কোট পরা ছবি দিলে ভালো হয়, কিন্তু তাঁর যে কোট নেই। অগত্যা তিনি গেলেন ছবি তোলার স্টুডিওতে। সমাধান মিলল। ফটোগ্রাফার বললেন, এটা কোনো সমস্যা নয়। তিনি ভদ্রলোকের একটা ছবি তুলে, কম্পিউটারে বসে ফটো এডিটিংয়ের সাহায্যে ভদ্রলোকের মাথাটা কেটে কোট পরা আরেক ভদ্রলোকের ছবিতে মাথাটা জুড়ে দিলেন। ব্যস, হয়ে গেল কোট পরা ফিটফাট নিখুঁত ছবি।
গ্রিক পুরাণে আমরা এমন কিছু চরিত্রের দেখা পাই, শরীরের কিছু অংশ মানুষ, বাকি অংশ অন্য কোনো প্রাণীর। যেমন অর্ধেক সাপ, অর্ধেক মানবী (এচিডনা)। রোমান, মিসরীয়, হিন্দু পুরাণেও দেখা মেলে মানুষের মাথা, সিংহের শরীর নিয়ে স্ফিংস, মানুষের শরীর, শুঁড়অলা হাতির মাথা নিয়ে গণেশের। রূপকথা ও লোকগল্পে এ ধরনের চরিত্রের ছড়াছড়ি। এমন সংকর চরিত্র সৃষ্টিকে পণ্ডিতেরা আমাদের ভেতরের আদিম পশুত্বের ঘৃণা-ভালোবাসার সম্পর্কের সহজাত মনস্তাত্ত্বিক প্রকাশ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। সুকুমার রায় তাঁর ‘খিচুড়ি’ কবিতায় হাঁসের মাথা, শজারুর শরীর মিলিয়ে তৈরি করেছিলেন বিখ্যাত হাঁসজারু। বকের মাথা, কচ্ছপের শরীর নিয়ে বকচ্ছপ কিংবা হাতির মাথা ও তিমির শরীর নিয়ে হাতিমি তৈরি করে ছবিও এঁকে দিয়েছিলেন নিছক হাস্যরস সৃষ্টির জন্য।
ইদানীং একধরনের সংকরায়নের বিকৃত রূপ দেখা যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ছবি সম্পাদনার কয়েকটি প্রযুক্তি ব্যবহার করে একজনের শরীরের সঙ্গে আরেকজনের মাথা, শরীরের এক অংশের সঙ্গে অন্য অংশজুড়ে দিয়ে মিথ্যাচার, মানহানি, অপপ্রচার ও গুজব সৃষ্টি করা হয়।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খাবার টেবিলে কয়েকজন আলাদা ব্যক্তির ভোজনরত অবস্থার কয়েকটি ছবি ভাইরাল হয়। একটি ছবিতে দেখা যায়, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ প্রায় ১৭-১৮ রকমের খাবার সামনে নিয়ে বসে আছেন।
অন্য ছবিগুলোতে একই খাবার টেবিলে মন্ত্রীর বদলে অন্য ব্যক্তিদের দেখা যায়। মজার ব্যাপার হলো, প্রত্যেকের মাথার নিচের অংশ একই, শুধু মাথাটা ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তির।
ছবিগুলো নিয়ে তৈরি হয় বিভ্রান্তি। আসলে ছবিটা কার? শুরু হয় আলোচনা, সমালোচনা। সাধারণ নেটিজেন থেকে শুরু করে বিখ্যাত ব্যক্তিরাও যোগ দেন। তথ্যমন্ত্রীর ছবিটিসহ আরও দুটি ছবি যুক্ত করে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী লেখেন, ‘চোরের মার বড় গলা...। এত মিথ্যা বলার কী প্রয়োজন ছিল? সোশ্যাল মিডিয়ার এ যুগে কোনো কিছুই হাইড করা যায় না। এই বোধশক্তিটুকুও এই বেকুবদের নেই, অথচ এরাই চালায় দেশ।’
ছবি নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর প্রতিবাদে হাছান মাহমুদের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে তাঁর বিরুদ্ধে সব অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। পরে অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে অসত্য তথ্য ও ছবি বিকৃতির অভিযোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তিনটি মামলাও করা হয়।
এ ধরনের ছবি সম্পাদনা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ও অস্থিরতা সৃষ্টির ঘটনা আমাদের দেশে নতুন কিছু নয়। কিছুদিন আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ছবি ছড়ানো হয়, যেখানে দেখা যায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাঁ পাশে বসে আছেন হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল হক। যাচাই করে দেখা যায়, নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে মামুনুল হকের এ ছবিটি সম্পাদনা করা।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এ ধরনের ছবি সাদা চোখে ধরা পড়লেও, নিখুঁত সম্পাদনার কারণে কিছু কিছু ছবির সত্য-মিথ্যা যাচাই করা কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। অনলাইনে ছবি যাচাইয়ের ওয়েবসাইট ফটো-ফরেনসিক, আরেকটি ছবি খুঁজে পাওয়ার জন্য রিভার্স ইমেজ সার্চ প্রযুক্তিসহ অন্যান্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসল-নকল ছবি যাচাই করা যায়। কিন্তু সেসব প্রযুক্তির ব্যবহার কয়জন জানে? সাধারণ মানুষের মনের ভেতর তৈরি হওয়া ‘হাঁসজারু’ থেকে হাঁস ও শজারুকে আলাদা করার উপায় কী?
এক ভদ্রলোক বিয়ের জন্য কনেপক্ষের কাছে জীবনবৃত্তান্ত পাঠাবেন। সঙ্গে ছবিও লাগবে। ভদ্রলোক পড়লেন জটিল সমস্যায়। কোট পরা ছবি দিলে ভালো হয়, কিন্তু তাঁর যে কোট নেই। অগত্যা তিনি গেলেন ছবি তোলার স্টুডিওতে। সমাধান মিলল। ফটোগ্রাফার বললেন, এটা কোনো সমস্যা নয়। তিনি ভদ্রলোকের একটা ছবি তুলে, কম্পিউটারে বসে ফটো এডিটিংয়ের সাহায্যে ভদ্রলোকের মাথাটা কেটে কোট পরা আরেক ভদ্রলোকের ছবিতে মাথাটা জুড়ে দিলেন। ব্যস, হয়ে গেল কোট পরা ফিটফাট নিখুঁত ছবি।
গ্রিক পুরাণে আমরা এমন কিছু চরিত্রের দেখা পাই, শরীরের কিছু অংশ মানুষ, বাকি অংশ অন্য কোনো প্রাণীর। যেমন অর্ধেক সাপ, অর্ধেক মানবী (এচিডনা)। রোমান, মিসরীয়, হিন্দু পুরাণেও দেখা মেলে মানুষের মাথা, সিংহের শরীর নিয়ে স্ফিংস, মানুষের শরীর, শুঁড়অলা হাতির মাথা নিয়ে গণেশের। রূপকথা ও লোকগল্পে এ ধরনের চরিত্রের ছড়াছড়ি। এমন সংকর চরিত্র সৃষ্টিকে পণ্ডিতেরা আমাদের ভেতরের আদিম পশুত্বের ঘৃণা-ভালোবাসার সম্পর্কের সহজাত মনস্তাত্ত্বিক প্রকাশ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। সুকুমার রায় তাঁর ‘খিচুড়ি’ কবিতায় হাঁসের মাথা, শজারুর শরীর মিলিয়ে তৈরি করেছিলেন বিখ্যাত হাঁসজারু। বকের মাথা, কচ্ছপের শরীর নিয়ে বকচ্ছপ কিংবা হাতির মাথা ও তিমির শরীর নিয়ে হাতিমি তৈরি করে ছবিও এঁকে দিয়েছিলেন নিছক হাস্যরস সৃষ্টির জন্য।
ইদানীং একধরনের সংকরায়নের বিকৃত রূপ দেখা যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ছবি সম্পাদনার কয়েকটি প্রযুক্তি ব্যবহার করে একজনের শরীরের সঙ্গে আরেকজনের মাথা, শরীরের এক অংশের সঙ্গে অন্য অংশজুড়ে দিয়ে মিথ্যাচার, মানহানি, অপপ্রচার ও গুজব সৃষ্টি করা হয়।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খাবার টেবিলে কয়েকজন আলাদা ব্যক্তির ভোজনরত অবস্থার কয়েকটি ছবি ভাইরাল হয়। একটি ছবিতে দেখা যায়, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ প্রায় ১৭-১৮ রকমের খাবার সামনে নিয়ে বসে আছেন।
অন্য ছবিগুলোতে একই খাবার টেবিলে মন্ত্রীর বদলে অন্য ব্যক্তিদের দেখা যায়। মজার ব্যাপার হলো, প্রত্যেকের মাথার নিচের অংশ একই, শুধু মাথাটা ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তির।
ছবিগুলো নিয়ে তৈরি হয় বিভ্রান্তি। আসলে ছবিটা কার? শুরু হয় আলোচনা, সমালোচনা। সাধারণ নেটিজেন থেকে শুরু করে বিখ্যাত ব্যক্তিরাও যোগ দেন। তথ্যমন্ত্রীর ছবিটিসহ আরও দুটি ছবি যুক্ত করে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী লেখেন, ‘চোরের মার বড় গলা...। এত মিথ্যা বলার কী প্রয়োজন ছিল? সোশ্যাল মিডিয়ার এ যুগে কোনো কিছুই হাইড করা যায় না। এই বোধশক্তিটুকুও এই বেকুবদের নেই, অথচ এরাই চালায় দেশ।’
ছবি নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর প্রতিবাদে হাছান মাহমুদের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে তাঁর বিরুদ্ধে সব অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। পরে অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে অসত্য তথ্য ও ছবি বিকৃতির অভিযোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তিনটি মামলাও করা হয়।
এ ধরনের ছবি সম্পাদনা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ও অস্থিরতা সৃষ্টির ঘটনা আমাদের দেশে নতুন কিছু নয়। কিছুদিন আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ছবি ছড়ানো হয়, যেখানে দেখা যায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাঁ পাশে বসে আছেন হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল হক। যাচাই করে দেখা যায়, নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে মামুনুল হকের এ ছবিটি সম্পাদনা করা।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এ ধরনের ছবি সাদা চোখে ধরা পড়লেও, নিখুঁত সম্পাদনার কারণে কিছু কিছু ছবির সত্য-মিথ্যা যাচাই করা কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। অনলাইনে ছবি যাচাইয়ের ওয়েবসাইট ফটো-ফরেনসিক, আরেকটি ছবি খুঁজে পাওয়ার জন্য রিভার্স ইমেজ সার্চ প্রযুক্তিসহ অন্যান্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসল-নকল ছবি যাচাই করা যায়। কিন্তু সেসব প্রযুক্তির ব্যবহার কয়জন জানে? সাধারণ মানুষের মনের ভেতর তৈরি হওয়া ‘হাঁসজারু’ থেকে হাঁস ও শজারুকে আলাদা করার উপায় কী?
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
৪ দিন আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৮ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৮ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৮ দিন আগে