মহিউদ্দিন খান মোহন
‘আচ্ছা, একজন আইজিপি চাকরিজীবনের শুরু থেকে অবসর নেওয়া পর্যন্ত কত টাকা বেতন-ভাতা হিসেবে পেতে পারেন বলে আপনার ধারণা?’ টেলিফোনে প্রশ্নটি করলেন পরিচিত এক ভদ্রলোক। বললাম, সঠিক বলতে পারব না। তবে সব মিলিয়ে পাঁচ কোটি টাকা হতে পারে। এর মধ্য থেকে সংসার খরচ চালিয়ে উদ্বৃত্ত আর অবসরের পারিতোষিক মিলিয়ে তাঁর হাতে কতই বা থাকতে পারে, বড়জোর কোটি দুয়েক। জবাব শুনে ভদ্রলোক প্রশ্ন করলেন, তাহলে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ এত সম্পদের মালিক হলেন কী করে?
তাঁর কাছে কি আলাদিনের জাদুর চেরাগ আছে? ভদ্রলোকের এই প্রশ্নের কোনো সদুত্তর আমার জানা নেই; বরং তাঁর এ প্রশ্নটি ভাবিয়ে তুলেছে সবার মতো আমাকেও। যদিও আমাদের সরকারি প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর পর্বততুল্য ধন-সম্পদের যেসব বিবরণ মাঝেমধ্যে সংবাদমাধ্যমে বেরোয়, তাতে মনে হওয়াটা স্বাভাবিক, তাঁরা চেরাগটেরাগ একটা কিছু হয়তো পেয়ে গেছেন।
খবর হলো, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৩ মে ঢাকা মহানগর স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের সব স্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন। ক্রোকাদেশ অনুযায়ী, গোপালগঞ্জ ও ঢাকায় বেনজীরের চার শতাধিক একর জমি রয়েছে; যার বেশির ভাগ তাঁর স্ত্রী জীশান মির্জা ও মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীরের নামে ক্রয় করা। এসব সম্পদের মধ্যে ঢাকার উত্তর বাড্ডায় রূপায়ণ মিলেনিয়াম কেয়ার ভবনের পার্টনার বেনজীরের স্ত্রী জীশান মির্জা।
এ ছাড়া জীশান মির্জার নামে গোপালগঞ্জে বিভিন্ন দলিলে কয়েক শ একর জমি রয়েছে। ৬৫টি দলিলের অধিকাংশ সাবেক আইজিপি বেনজীরের স্ত্রী ও মেয়ের নামে। তা ছাড়া বেনজীর আহমেদের ৩৩টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব অ্যাকাউন্টে বেনজীর ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের লেনদেনের তথ্য রয়েছে। (সূত্র: আজকের পত্রিকা, ২৪ মে, ২০২৪)।
এদিকে ২৬ মে আদালত মাদারীপুর জেলায় বেনজীরের স্ত্রীর নামে থাকা ২৭৩ বিঘা জমি এবং রাজধানীর গুলশানের চারটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাটও ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন। এসব জমি ২০২১ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ক্রয় করা, যার দলিল মূল্য ১০ কোটি টাকার ওপরে। সাবেক পুলিশপ্রধান ও তাঁর স্ত্রী-কন্যার সম্পদের পরিমাণ দেখে যে কারও চক্ষু চড়কগাছ হওয়ার কথা।
সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ চাকরিতে থাকার সময়ই নানা কারণে আলোচিত ছিলেন। সরকারের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে তিনি ছিলেন মহাক্ষমতাধর। ক্ষমতাসীন সরকারের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে ছিল তাঁর নিত্য ওঠাবসা। ফলে তিনি হয়তো ভেবেছিলেন, যা খুশি করবেন, কেউ তাঁর কেশাগ্রও স্পর্শ করতে পারবে না। কিন্তু তাঁর হয়তো জানা ছিল না ‘চোরের দশ দিন, গেরস্তের এক দিন’ প্রবাদটি এখনো চালু আছে। আর তারই সার্থক রূপ দেখা যাচ্ছে বেনজীর আহমেদের বেলায়।
ওদিকে সেনাবাহিনীতে দায়িত্ব পালনকালে গুরুতর দুর্নীতিতে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অযোগ্য হবেন। যুক্তরাষ্ট্রের ফরেন অপারেশনস অ্যাক্টের ৭০৩১ (সি) ধারা মোতাবেক, এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার।
অভিযোগে বলা হয়েছে, আজিজ আহমেদ নিজের ভাইকে বাংলাদেশে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহি এড়াতে সাহায্য করতে গিয়ে রাষ্ট্রের কাজে হস্তক্ষেপ করেন। উল্লেখ্য, সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ তাঁর দুই ভাই হারিস আহমেদ ও তোফায়েল আহমেদ জোসেফকে দেশত্যাগে সহায়তা করেছেন—এমন একটি তথ্য বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়েছিল। সরকার ঘোষিত শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকায় তাঁদের নাম ছিল।
পিতার নাম এবং ঠিকানা বদল করে পাসপোর্ট বানিয়ে তাঁদের বিদেশে পালিয়ে যেতে আজিজ আহমেদ সহায়তা করেছেন—এমন একটি খবর একসময় চাউর হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন অভিযোগ করেছে, আজিজ আহমেদ অন্যায়ভাবে নিজের ভাইকে সামরিক ঠিকাদারি কাজ পাইয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখেন। তা ছাড়া, সরকারি পদে নিয়োগ দেওয়ার বিনিময়ে আজিজ ঘুষ নিয়েছেন বলে অভিযোগ এনেছে মার্কিন প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও আইনের শাসন শক্তিশালী করতে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহের প্রতিফলন হিসেবে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আদৌ শক্তিশালী দেখতে চায় কি না বা কতটুকু শক্তিশালী দেখতে চায়, তা নিয়ে অবশ্যই বিতর্ক তোলা যায়। তবে এটা অনস্বীকার্য যে সাবেক সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে জারি করা এই নিষেধাজ্ঞা সেনাবাহিনী ও দেশের জন্য অস্বস্তিকর। কেননা, সারা বিশ্বে আমাদের সেনাবাহিনী একটি উৎকৃষ্ট পেশাদার বাহিনী হিসেবে সমাদৃত। মুক্তিযুদ্ধেও রয়েছে এই বাহিনীর গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা। এমন একটি উজ্জ্বল ভাবমূর্তির বাহিনীর একজন সাবেক প্রধান যখন দুর্নীতি ও অপরাধমূলক কাজে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে একটি বিদেশি রাষ্ট্র কর্তৃক ‘পারসন ননগ্র্যাটা’, অর্থাৎ ‘অবাঞ্ছিত ব্যক্তি’ হিসেবে নিষিদ্ধ হন, সংগত কারণেই তা আমাদের ব্যথিত না করে পারে না।
দুর্ভাগ্যজনক হলো, খুব কাছাকাছি সময়ের ব্যবধানে দেশের এমন দুটি বাহিনীর সাবেক প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশিত হলো, যে দুটি বাহিনী দেশবাসীর কাছে আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতীক। জনগণের জানমাল ও সমাজের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ বাহিনী যেমন নির্ভরতার প্রতীক, তেমনি দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সুরক্ষায় সেনাবাহিনী জনগণের আস্থার প্রতীক। কারও ব্যক্তিগত কুকর্মের কারণে জাতীয় কোনো প্রতিষ্ঠানের ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ন হবে, তা মেনে নেওয়া যায় না। সরকারকে অবশ্যই এ বিষয়টি গুরুত্বসহ বিবেচনা ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
আজিজ আহমেদ ও বেনজীর আহমেদ উভয়ে আমাদের সরকারি প্রশাসনের কর্মকর্তাদের একটি অংশের মধ্যে সৃষ্ট পচনের উদাহরণ। প্রবাদে আছে, ‘মাছের পচন শুরু হয় মাথা থেকে’। তেমনি আমাদের রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন অঙ্গের মাথায় পচন ধরেছে অনেক আগেই। এখন সেই পচন সর্বগ্রাসী রূপ নিতে শুরু করেছে।
লেখক: সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক
‘আচ্ছা, একজন আইজিপি চাকরিজীবনের শুরু থেকে অবসর নেওয়া পর্যন্ত কত টাকা বেতন-ভাতা হিসেবে পেতে পারেন বলে আপনার ধারণা?’ টেলিফোনে প্রশ্নটি করলেন পরিচিত এক ভদ্রলোক। বললাম, সঠিক বলতে পারব না। তবে সব মিলিয়ে পাঁচ কোটি টাকা হতে পারে। এর মধ্য থেকে সংসার খরচ চালিয়ে উদ্বৃত্ত আর অবসরের পারিতোষিক মিলিয়ে তাঁর হাতে কতই বা থাকতে পারে, বড়জোর কোটি দুয়েক। জবাব শুনে ভদ্রলোক প্রশ্ন করলেন, তাহলে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ এত সম্পদের মালিক হলেন কী করে?
তাঁর কাছে কি আলাদিনের জাদুর চেরাগ আছে? ভদ্রলোকের এই প্রশ্নের কোনো সদুত্তর আমার জানা নেই; বরং তাঁর এ প্রশ্নটি ভাবিয়ে তুলেছে সবার মতো আমাকেও। যদিও আমাদের সরকারি প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর পর্বততুল্য ধন-সম্পদের যেসব বিবরণ মাঝেমধ্যে সংবাদমাধ্যমে বেরোয়, তাতে মনে হওয়াটা স্বাভাবিক, তাঁরা চেরাগটেরাগ একটা কিছু হয়তো পেয়ে গেছেন।
খবর হলো, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৩ মে ঢাকা মহানগর স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের সব স্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন। ক্রোকাদেশ অনুযায়ী, গোপালগঞ্জ ও ঢাকায় বেনজীরের চার শতাধিক একর জমি রয়েছে; যার বেশির ভাগ তাঁর স্ত্রী জীশান মির্জা ও মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীরের নামে ক্রয় করা। এসব সম্পদের মধ্যে ঢাকার উত্তর বাড্ডায় রূপায়ণ মিলেনিয়াম কেয়ার ভবনের পার্টনার বেনজীরের স্ত্রী জীশান মির্জা।
এ ছাড়া জীশান মির্জার নামে গোপালগঞ্জে বিভিন্ন দলিলে কয়েক শ একর জমি রয়েছে। ৬৫টি দলিলের অধিকাংশ সাবেক আইজিপি বেনজীরের স্ত্রী ও মেয়ের নামে। তা ছাড়া বেনজীর আহমেদের ৩৩টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব অ্যাকাউন্টে বেনজীর ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের লেনদেনের তথ্য রয়েছে। (সূত্র: আজকের পত্রিকা, ২৪ মে, ২০২৪)।
এদিকে ২৬ মে আদালত মাদারীপুর জেলায় বেনজীরের স্ত্রীর নামে থাকা ২৭৩ বিঘা জমি এবং রাজধানীর গুলশানের চারটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাটও ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন। এসব জমি ২০২১ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ক্রয় করা, যার দলিল মূল্য ১০ কোটি টাকার ওপরে। সাবেক পুলিশপ্রধান ও তাঁর স্ত্রী-কন্যার সম্পদের পরিমাণ দেখে যে কারও চক্ষু চড়কগাছ হওয়ার কথা।
সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ চাকরিতে থাকার সময়ই নানা কারণে আলোচিত ছিলেন। সরকারের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে তিনি ছিলেন মহাক্ষমতাধর। ক্ষমতাসীন সরকারের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে ছিল তাঁর নিত্য ওঠাবসা। ফলে তিনি হয়তো ভেবেছিলেন, যা খুশি করবেন, কেউ তাঁর কেশাগ্রও স্পর্শ করতে পারবে না। কিন্তু তাঁর হয়তো জানা ছিল না ‘চোরের দশ দিন, গেরস্তের এক দিন’ প্রবাদটি এখনো চালু আছে। আর তারই সার্থক রূপ দেখা যাচ্ছে বেনজীর আহমেদের বেলায়।
ওদিকে সেনাবাহিনীতে দায়িত্ব পালনকালে গুরুতর দুর্নীতিতে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অযোগ্য হবেন। যুক্তরাষ্ট্রের ফরেন অপারেশনস অ্যাক্টের ৭০৩১ (সি) ধারা মোতাবেক, এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার।
অভিযোগে বলা হয়েছে, আজিজ আহমেদ নিজের ভাইকে বাংলাদেশে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহি এড়াতে সাহায্য করতে গিয়ে রাষ্ট্রের কাজে হস্তক্ষেপ করেন। উল্লেখ্য, সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ তাঁর দুই ভাই হারিস আহমেদ ও তোফায়েল আহমেদ জোসেফকে দেশত্যাগে সহায়তা করেছেন—এমন একটি তথ্য বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়েছিল। সরকার ঘোষিত শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকায় তাঁদের নাম ছিল।
পিতার নাম এবং ঠিকানা বদল করে পাসপোর্ট বানিয়ে তাঁদের বিদেশে পালিয়ে যেতে আজিজ আহমেদ সহায়তা করেছেন—এমন একটি খবর একসময় চাউর হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন অভিযোগ করেছে, আজিজ আহমেদ অন্যায়ভাবে নিজের ভাইকে সামরিক ঠিকাদারি কাজ পাইয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখেন। তা ছাড়া, সরকারি পদে নিয়োগ দেওয়ার বিনিময়ে আজিজ ঘুষ নিয়েছেন বলে অভিযোগ এনেছে মার্কিন প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও আইনের শাসন শক্তিশালী করতে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহের প্রতিফলন হিসেবে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আদৌ শক্তিশালী দেখতে চায় কি না বা কতটুকু শক্তিশালী দেখতে চায়, তা নিয়ে অবশ্যই বিতর্ক তোলা যায়। তবে এটা অনস্বীকার্য যে সাবেক সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে জারি করা এই নিষেধাজ্ঞা সেনাবাহিনী ও দেশের জন্য অস্বস্তিকর। কেননা, সারা বিশ্বে আমাদের সেনাবাহিনী একটি উৎকৃষ্ট পেশাদার বাহিনী হিসেবে সমাদৃত। মুক্তিযুদ্ধেও রয়েছে এই বাহিনীর গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা। এমন একটি উজ্জ্বল ভাবমূর্তির বাহিনীর একজন সাবেক প্রধান যখন দুর্নীতি ও অপরাধমূলক কাজে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে একটি বিদেশি রাষ্ট্র কর্তৃক ‘পারসন ননগ্র্যাটা’, অর্থাৎ ‘অবাঞ্ছিত ব্যক্তি’ হিসেবে নিষিদ্ধ হন, সংগত কারণেই তা আমাদের ব্যথিত না করে পারে না।
দুর্ভাগ্যজনক হলো, খুব কাছাকাছি সময়ের ব্যবধানে দেশের এমন দুটি বাহিনীর সাবেক প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশিত হলো, যে দুটি বাহিনী দেশবাসীর কাছে আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতীক। জনগণের জানমাল ও সমাজের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ বাহিনী যেমন নির্ভরতার প্রতীক, তেমনি দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সুরক্ষায় সেনাবাহিনী জনগণের আস্থার প্রতীক। কারও ব্যক্তিগত কুকর্মের কারণে জাতীয় কোনো প্রতিষ্ঠানের ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ন হবে, তা মেনে নেওয়া যায় না। সরকারকে অবশ্যই এ বিষয়টি গুরুত্বসহ বিবেচনা ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
আজিজ আহমেদ ও বেনজীর আহমেদ উভয়ে আমাদের সরকারি প্রশাসনের কর্মকর্তাদের একটি অংশের মধ্যে সৃষ্ট পচনের উদাহরণ। প্রবাদে আছে, ‘মাছের পচন শুরু হয় মাথা থেকে’। তেমনি আমাদের রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন অঙ্গের মাথায় পচন ধরেছে অনেক আগেই। এখন সেই পচন সর্বগ্রাসী রূপ নিতে শুরু করেছে।
লেখক: সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক
বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
৩ দিন আগেগাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪দেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২০ নভেম্বর ২০২৪