ডেভিড হার্স্ট
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দুই সপ্তাহ আগে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে হামলার নির্দেশ দেওয়ার সময় জানতেন তিনি ঠিক কী করছেন। এই নির্দেশের মধ্য দিয়ে ইরানের শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ রেজা জাহেদি ও অন্যান্য ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডের কমান্ডারদের হত্যা করেছিলেন তিনি।
এই আক্রমণ হিজবুল্লাহর অস্ত্র সরবরাহ সীমিত করা বা তাদের উত্তর সীমান্ত থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার বিদ্যমান কৌশলের বাইরে চলে গেছে। এটি ছিল সিরিয়ায় ইরানি নেতৃত্বকে নির্মূল করারও প্রচেষ্টা।
ছয় মাস পর গাজায় যুদ্ধ খারাপভাবে চলছে। ইসরায়েলি স্থলবাহিনী জেদি ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধের মুখোমুখি হচ্ছে, যেখানে জনগণের দুর্ভোগের মধ্যেও আত্মসমর্পণ বা পালানোর কোনো চিহ্ন দেখা যাচ্ছে না। হামাস যোদ্ধাদের মধ্যে মেজাজ কঠোর হয়েছে। তারা মনে করে, সবচেয়ে খারাপটা তাদের সঙ্গে ঘটে গেছে এবং হারানোর কিছুই নেই। গাজার জনগণ তাদের বিরুদ্ধে যায়নি।
হামলায় একাধিক বার্তা
গাজায় আক্রমণের কারণে ইসরায়েলে নেতানিয়াহুর নেতৃত্বের বিরোধিতা বাড়ছে এবং জিম্মিদের জীবিত ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে একটি চুক্তির জন্য সত্যিকারের চাপ রয়েছে। তাঁর প্রধান সমর্থক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে মতপার্থক্য এখন প্রকাশ্য। বাইডেন দ্রুত বিশ্ব জনমত হারাচ্ছেন। নেতানিয়াহুর তত্ত্বাবধানে ইসরায়েল একটি অবন্ধু রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।
আবার ইসরায়েলকে যুদ্ধের জন্য এই মিথকে টিকিয়ে রাখতে হবে যে তারা অস্তিত্বের জন্য লড়াই করছে। তাই জুয়াড়ি নেতানিয়াহুর জন্য দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে আক্রমণ করার জন্য এর চেয়ে ভালো সময় আর কী ছিল? এর অর্থই বা কী?
যুক্তরাষ্ট্রও জানত যে নেতানিয়াহু কী করছেন। তিনি ১৪ বছরের মধ্যে অন্তত তৃতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্রকে ইরানে আক্রমণের জন্য টেনে আনার চেষ্টা করেছেন। এ কারণে যুক্তরাষ্ট্র ইরানিদের সরাসরি বলেছিল, দামেস্কে হামলায় তাদের কিছু করার নেই। বিমানগুলো যখন আকাশে ছিল, তখনই তারা এ-সম্পর্কে জানতে পারে।
ইরান সময় নিয়েছে। এ নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে কী ঘটেছিল, তা দেখা যাক। দামেস্কের কনস্যুলেটে হামলার নিন্দা জানিয়ে রাশিয়ার তৈরি একটি খসড়া বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স ভেটো দিয়েছিল। তখন ইরান বলেছিল, গাজায় যুদ্ধবিরতি হলে তারা ইসরায়েলে হামলা করবে না। এটিও উপেক্ষা করা হয়। তখন উল্টো প্রতিটি পশ্চিমা দেশ ইরানকে বলেছিল ইসরায়েলে হামলা না করতে। ইরানের জন্য বাইডেনের পরামর্শের একটি শব্দ ছিল: ‘(হামলা) করবেন না।’
তেহরান একটি নজির স্থাপন করতে চেয়েছিল যে তারা পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ শুরু না করেই সরাসরি ইসরায়েলকে আঘাত করতে পারে। ইসরায়েলকে যে আঘাত করা যায়, এটা তারা বোঝাতে চেয়েছিল। তারা যুক্তরাষ্ট্রকে বলতে চেয়েছিল যে ইরান উপসাগরীয় অঞ্চলে একটি শক্তি এবং হরমুজ প্রণালি তারা নিয়ন্ত্রণ করে। তারা প্রতিটি আরব রাষ্ট্রের শাসকদের বলতে চেয়েছিল, ইসরায়েলের জন্য যা ঘটছে তা তাদের ক্ষেত্রেও হতে পারে। মাত্র কয়েকটি রকেট হামলা করে তারা সে লক্ষ্যে পৌঁছেছে। তাদের পাঠানো প্রতিটি বার্তা পৌঁছে গেছে।
এই বার্তা দেওয়া হয় ইরানের বিপ্লবী গার্ডদের দ্বারা পর্তুগিজ-পতাকাবাহী ও ইসরায়েলি মালিকানাধীন একটি কনটেইনার জাহাজ আটকের মধ্য দিয়ে। এরপর তারা ইসরায়েলে হামলার জন্য আট ঘণ্টা সময় বেঁধে দেয়। এই হামলা ঠেকাতে ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা করতে ন্যূনতম ১০০ কোটি ডলার খরচ হয়েছে বলে ইসরায়েলের এক ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তা ওয়াইনেট নিউজকে জানিয়েছেন। তবে এটি খরচের সামান্য অংশ হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং জর্ডান—অন্তত চারটি দেশ ইসরায়েলকে ইরানের ড্রোন হামলা ঠেকাতে সহায়তা করেছে বলে জানা গেছে। পঞ্চম দেশটি সম্ভবত সৌদি আরব ছিল, কারণ এটি দক্ষিণ ইরাক থেকে ইসরায়েলে হামলার পথে ছিল এবং ষষ্ঠ দেশটি মিসর হতে পারে।
এই হামলায় ইরান ১৭০টি সস্তা ড্রোন ব্যবহার করে। আর ৩০টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে ২৫টি ইসরায়েল গুলি করে ভূপাতিত করেছে। এটা মিথ্যা। অস্ত্র ছিল ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং এর অল্পসংখ্যক ইসরায়েলের প্রতিরক্ষাব্যবস্থার মধ্য দিয়ে দক্ষিণ ইসরায়েলের নেভাটিম বিমানঘাঁটিতে আঘাত হানে।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, ওই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো হালকা কাঠামোগত কিছু ক্ষতি করেছে। তবে আমরা কখনোই জানতে পারব না সত্যিটা কী। তবে বার্তাটি ইসরায়েলকে পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল যে ইরান হিজবুল্লাহ, ইয়েমেনের আনসার আল্লাহ বা ইরাকের মিত্রদের ব্যবহার না করেই আঘাত করেছে এবং দূর থেকে ইসরায়েলের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করার ক্ষমতা তাদের রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কাছেও বার্তাটি সমানভাবে জোরালো। ইরান ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইসরায়েলকে আক্রমণ করতে এবং বাইডেনের সরাসরি সতর্কতা উপেক্ষা করতে তারা প্রস্তুত। উপসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো মিত্রের বিরুদ্ধে তারা একই কাজ করতে পারে। ইরান যুদ্ধ চায় না, তবে তারা জবাব দিতে সক্ষম। যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এর মূল বার্তা হলো, শিশুর মতো লালন করা ইসরায়েলকে সংযত করতে হবে।
পররাষ্ট্রনীতির ভুল
নেতানিয়াহু এখন দ্বিধাগ্রস্ত। তিনি চরম ডানপন্থীদের সন্তুষ্ট করতে এবং ইরানকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করতে পাল্টা আক্রমণের পথ বেছে নিতে পারেন। তবে এর জন্য আমেরিকার সাহায্য পাবেন না। আর যদি তা বাস্তবায়িত না হয়, তবে তেল আবিব ও তেহরানের মধ্যবর্তী আকাশপথটি নিরাপদ করা কিছুটা কঠিন হতে পারে।
নেতানিয়াহু ইরান আক্রমণ করলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার নড়বড়ে সম্পর্ক খারাপ থেকে আরও খারাপের দিকে যাবে। তিনি একটি বড় আক্রমণ শুরু চান, যা ২০১০ সাল থেকে অন্যরা বাধা দিয়ে আসছে। আর যদি তিনি কিছুই না করেন, তবে তিনি ইতিমধ্যে যা করেছেন তার চেয়ে আরও দুর্বল হবে তাঁর অবস্থান। বিরোধী দলের নেতা এবং যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সদস্য বেনি গ্যান্টজ, যিনি রোববার তেহরানের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক আক্রমণের কথা বলেছিলেন, সেটিই ঠিক হবে।
যুক্তরাষ্ট্র বুঝতে পারছে, তিন দশকের মধ্যে পঞ্চমবারের মতো তাদের পররাষ্ট্রনীতি ভেঙে পড়ছে। আফগানিস্তানে তালেবানদের পতনের সিদ্ধান্ত, ইরাকে আক্রমণ, লিবিয়ার মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতন, সিরিয়ার বাশার আল-আসাদের পতনের চেষ্টা—এই সব বৈদেশিক নীতির বিপর্যয় তো আছেই। এখন পঞ্চম স্থানে রয়েছে গাজায় ইসরায়েলের আক্রমণকে সমর্থন করার সিদ্ধান্ত।
ইরান আগেই তার বক্তব্য তুলে ধরেছে এবং এর ফলে ইসরায়েল দুর্বল হয়েছে। এই প্রথম ইরান সরাসরি আক্রমণ করল, যারা হামাসের মতোই এই ধারণা দিয়েছিল যে তারা যুদ্ধে আগ্রহী নয়। এটিও প্রথমবার যে ইসরায়েলকে বাইডেন পাল্টা আঘাত না করার জন্য বলেছেন। এ ধরনের আক্রমণের পরে দৃশ্যগুলো খারাপ দেখায়। নিজেকে রক্ষার জন্য ইসরায়েলের অন্যদের প্রয়োজন। সে জন্য তাদের এটা বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা নেই যে কীভাবে তারা পাল্টা আঘাত করবে।
আর এই আক্রমণ ইসরায়েলের রক্ষক যুক্তরাষ্ট্রের নীতি পুনর্নির্ধারণেরও একটি সুযোগ। এই মুহূর্তে সবটাই খারাপ দেখাচ্ছে।
ডেভিড হার্স্ট, প্রধান সম্পাদক ও সহ-প্রতিষ্ঠাতা, মিডল ইস্ট আই
(মিডল ইস্ট আইতে প্রকাশিত লেখাটি ইংরেজি থেকে অনূদিত ও সংক্ষেপিত)
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দুই সপ্তাহ আগে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে হামলার নির্দেশ দেওয়ার সময় জানতেন তিনি ঠিক কী করছেন। এই নির্দেশের মধ্য দিয়ে ইরানের শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ রেজা জাহেদি ও অন্যান্য ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডের কমান্ডারদের হত্যা করেছিলেন তিনি।
এই আক্রমণ হিজবুল্লাহর অস্ত্র সরবরাহ সীমিত করা বা তাদের উত্তর সীমান্ত থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার বিদ্যমান কৌশলের বাইরে চলে গেছে। এটি ছিল সিরিয়ায় ইরানি নেতৃত্বকে নির্মূল করারও প্রচেষ্টা।
ছয় মাস পর গাজায় যুদ্ধ খারাপভাবে চলছে। ইসরায়েলি স্থলবাহিনী জেদি ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধের মুখোমুখি হচ্ছে, যেখানে জনগণের দুর্ভোগের মধ্যেও আত্মসমর্পণ বা পালানোর কোনো চিহ্ন দেখা যাচ্ছে না। হামাস যোদ্ধাদের মধ্যে মেজাজ কঠোর হয়েছে। তারা মনে করে, সবচেয়ে খারাপটা তাদের সঙ্গে ঘটে গেছে এবং হারানোর কিছুই নেই। গাজার জনগণ তাদের বিরুদ্ধে যায়নি।
হামলায় একাধিক বার্তা
গাজায় আক্রমণের কারণে ইসরায়েলে নেতানিয়াহুর নেতৃত্বের বিরোধিতা বাড়ছে এবং জিম্মিদের জীবিত ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে একটি চুক্তির জন্য সত্যিকারের চাপ রয়েছে। তাঁর প্রধান সমর্থক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে মতপার্থক্য এখন প্রকাশ্য। বাইডেন দ্রুত বিশ্ব জনমত হারাচ্ছেন। নেতানিয়াহুর তত্ত্বাবধানে ইসরায়েল একটি অবন্ধু রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।
আবার ইসরায়েলকে যুদ্ধের জন্য এই মিথকে টিকিয়ে রাখতে হবে যে তারা অস্তিত্বের জন্য লড়াই করছে। তাই জুয়াড়ি নেতানিয়াহুর জন্য দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে আক্রমণ করার জন্য এর চেয়ে ভালো সময় আর কী ছিল? এর অর্থই বা কী?
যুক্তরাষ্ট্রও জানত যে নেতানিয়াহু কী করছেন। তিনি ১৪ বছরের মধ্যে অন্তত তৃতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্রকে ইরানে আক্রমণের জন্য টেনে আনার চেষ্টা করেছেন। এ কারণে যুক্তরাষ্ট্র ইরানিদের সরাসরি বলেছিল, দামেস্কে হামলায় তাদের কিছু করার নেই। বিমানগুলো যখন আকাশে ছিল, তখনই তারা এ-সম্পর্কে জানতে পারে।
ইরান সময় নিয়েছে। এ নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে কী ঘটেছিল, তা দেখা যাক। দামেস্কের কনস্যুলেটে হামলার নিন্দা জানিয়ে রাশিয়ার তৈরি একটি খসড়া বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স ভেটো দিয়েছিল। তখন ইরান বলেছিল, গাজায় যুদ্ধবিরতি হলে তারা ইসরায়েলে হামলা করবে না। এটিও উপেক্ষা করা হয়। তখন উল্টো প্রতিটি পশ্চিমা দেশ ইরানকে বলেছিল ইসরায়েলে হামলা না করতে। ইরানের জন্য বাইডেনের পরামর্শের একটি শব্দ ছিল: ‘(হামলা) করবেন না।’
তেহরান একটি নজির স্থাপন করতে চেয়েছিল যে তারা পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ শুরু না করেই সরাসরি ইসরায়েলকে আঘাত করতে পারে। ইসরায়েলকে যে আঘাত করা যায়, এটা তারা বোঝাতে চেয়েছিল। তারা যুক্তরাষ্ট্রকে বলতে চেয়েছিল যে ইরান উপসাগরীয় অঞ্চলে একটি শক্তি এবং হরমুজ প্রণালি তারা নিয়ন্ত্রণ করে। তারা প্রতিটি আরব রাষ্ট্রের শাসকদের বলতে চেয়েছিল, ইসরায়েলের জন্য যা ঘটছে তা তাদের ক্ষেত্রেও হতে পারে। মাত্র কয়েকটি রকেট হামলা করে তারা সে লক্ষ্যে পৌঁছেছে। তাদের পাঠানো প্রতিটি বার্তা পৌঁছে গেছে।
এই বার্তা দেওয়া হয় ইরানের বিপ্লবী গার্ডদের দ্বারা পর্তুগিজ-পতাকাবাহী ও ইসরায়েলি মালিকানাধীন একটি কনটেইনার জাহাজ আটকের মধ্য দিয়ে। এরপর তারা ইসরায়েলে হামলার জন্য আট ঘণ্টা সময় বেঁধে দেয়। এই হামলা ঠেকাতে ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা করতে ন্যূনতম ১০০ কোটি ডলার খরচ হয়েছে বলে ইসরায়েলের এক ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তা ওয়াইনেট নিউজকে জানিয়েছেন। তবে এটি খরচের সামান্য অংশ হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং জর্ডান—অন্তত চারটি দেশ ইসরায়েলকে ইরানের ড্রোন হামলা ঠেকাতে সহায়তা করেছে বলে জানা গেছে। পঞ্চম দেশটি সম্ভবত সৌদি আরব ছিল, কারণ এটি দক্ষিণ ইরাক থেকে ইসরায়েলে হামলার পথে ছিল এবং ষষ্ঠ দেশটি মিসর হতে পারে।
এই হামলায় ইরান ১৭০টি সস্তা ড্রোন ব্যবহার করে। আর ৩০টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে ২৫টি ইসরায়েল গুলি করে ভূপাতিত করেছে। এটা মিথ্যা। অস্ত্র ছিল ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং এর অল্পসংখ্যক ইসরায়েলের প্রতিরক্ষাব্যবস্থার মধ্য দিয়ে দক্ষিণ ইসরায়েলের নেভাটিম বিমানঘাঁটিতে আঘাত হানে।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, ওই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো হালকা কাঠামোগত কিছু ক্ষতি করেছে। তবে আমরা কখনোই জানতে পারব না সত্যিটা কী। তবে বার্তাটি ইসরায়েলকে পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল যে ইরান হিজবুল্লাহ, ইয়েমেনের আনসার আল্লাহ বা ইরাকের মিত্রদের ব্যবহার না করেই আঘাত করেছে এবং দূর থেকে ইসরায়েলের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করার ক্ষমতা তাদের রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কাছেও বার্তাটি সমানভাবে জোরালো। ইরান ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইসরায়েলকে আক্রমণ করতে এবং বাইডেনের সরাসরি সতর্কতা উপেক্ষা করতে তারা প্রস্তুত। উপসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো মিত্রের বিরুদ্ধে তারা একই কাজ করতে পারে। ইরান যুদ্ধ চায় না, তবে তারা জবাব দিতে সক্ষম। যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এর মূল বার্তা হলো, শিশুর মতো লালন করা ইসরায়েলকে সংযত করতে হবে।
পররাষ্ট্রনীতির ভুল
নেতানিয়াহু এখন দ্বিধাগ্রস্ত। তিনি চরম ডানপন্থীদের সন্তুষ্ট করতে এবং ইরানকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করতে পাল্টা আক্রমণের পথ বেছে নিতে পারেন। তবে এর জন্য আমেরিকার সাহায্য পাবেন না। আর যদি তা বাস্তবায়িত না হয়, তবে তেল আবিব ও তেহরানের মধ্যবর্তী আকাশপথটি নিরাপদ করা কিছুটা কঠিন হতে পারে।
নেতানিয়াহু ইরান আক্রমণ করলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার নড়বড়ে সম্পর্ক খারাপ থেকে আরও খারাপের দিকে যাবে। তিনি একটি বড় আক্রমণ শুরু চান, যা ২০১০ সাল থেকে অন্যরা বাধা দিয়ে আসছে। আর যদি তিনি কিছুই না করেন, তবে তিনি ইতিমধ্যে যা করেছেন তার চেয়ে আরও দুর্বল হবে তাঁর অবস্থান। বিরোধী দলের নেতা এবং যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সদস্য বেনি গ্যান্টজ, যিনি রোববার তেহরানের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক আক্রমণের কথা বলেছিলেন, সেটিই ঠিক হবে।
যুক্তরাষ্ট্র বুঝতে পারছে, তিন দশকের মধ্যে পঞ্চমবারের মতো তাদের পররাষ্ট্রনীতি ভেঙে পড়ছে। আফগানিস্তানে তালেবানদের পতনের সিদ্ধান্ত, ইরাকে আক্রমণ, লিবিয়ার মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতন, সিরিয়ার বাশার আল-আসাদের পতনের চেষ্টা—এই সব বৈদেশিক নীতির বিপর্যয় তো আছেই। এখন পঞ্চম স্থানে রয়েছে গাজায় ইসরায়েলের আক্রমণকে সমর্থন করার সিদ্ধান্ত।
ইরান আগেই তার বক্তব্য তুলে ধরেছে এবং এর ফলে ইসরায়েল দুর্বল হয়েছে। এই প্রথম ইরান সরাসরি আক্রমণ করল, যারা হামাসের মতোই এই ধারণা দিয়েছিল যে তারা যুদ্ধে আগ্রহী নয়। এটিও প্রথমবার যে ইসরায়েলকে বাইডেন পাল্টা আঘাত না করার জন্য বলেছেন। এ ধরনের আক্রমণের পরে দৃশ্যগুলো খারাপ দেখায়। নিজেকে রক্ষার জন্য ইসরায়েলের অন্যদের প্রয়োজন। সে জন্য তাদের এটা বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা নেই যে কীভাবে তারা পাল্টা আঘাত করবে।
আর এই আক্রমণ ইসরায়েলের রক্ষক যুক্তরাষ্ট্রের নীতি পুনর্নির্ধারণেরও একটি সুযোগ। এই মুহূর্তে সবটাই খারাপ দেখাচ্ছে।
ডেভিড হার্স্ট, প্রধান সম্পাদক ও সহ-প্রতিষ্ঠাতা, মিডল ইস্ট আই
(মিডল ইস্ট আইতে প্রকাশিত লেখাটি ইংরেজি থেকে অনূদিত ও সংক্ষেপিত)
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২ দিন আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৬ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৬ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৬ দিন আগে