মৃত্যুঞ্জয় রায়
পরিবেশদূষণ নিয়ে আরও কত যে নতুন কথা শুনতে হবে কে জানে! ইতিমধ্যে ঢাকা শহরের বায়ুদূষণ নিয়ে কথা শুনতে শুনতে কান ঝালাপালা হয়ে গেছে। রাস্তায় চলার সময় গাড়ির বেহুদা হর্নের শব্দ শুনতে শুনতে, মানুষের চিৎকার-চেঁচামেচিতে, মাইক ও সাউন্ডবক্সের উচ্চ আওয়াজেও কান ঝালাপালা হচ্ছে, আমরা শব্দদূষণের শিকার হচ্ছি। আমরা না হয় অভ্যস্ত হয়ে গেছি এসব শব্দ শুনতে শুনতে, সহ্যক্ষমতাও আমাদের অনেক বেশি। কিন্তু যে নবজাতক শিশুকে নিয়ে মা রাস্তায় বেরিয়েছেন, সেই শিশুর কী অবস্থা, একবারও কি তা ভেবে দেখেছি?
প্রায় কুড়ি বছর আগে ডেনমার্কের একটি ছোট্ট শহরে কয়েক মাস থাকার সুযোগ হয়েছিল। ছুটির দিনে মাঝেমধ্যে বেরিয়ে পড়তাম শহর ও শহরতলি দেখতে। একদিন এক রাস্তার ফুটপাতে হাঁটার সময় কিছুটা দূরে এক সহপাঠী বিদেশি বন্ধুকে দেখে জোরে চিৎকার করে আমি তাকে তার নাম ধরে ডাকলাম। সঙ্গে সঙ্গে আমার পাশে হেঁটে যাওয়া একজন ডেনিশ পথিক তাঁর ঠোঁট দুটোয় তর্জনী চেপে ধরে আমার দিকে তাকিয়ে ‘হিশশশশশ্’ শব্দ করে জানিয়ে দিলেন—না, ওভাবে চিৎকার করে কাউকে ডাকতে নেই। এতে অন্যদের অসুবিধা হয়। ওটাও নাকি শব্দদূষণ।
মোবাইল ফোনের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতার কারণে কি আমরা বিকিরণজনিত কোনো দূষণের শিকার হচ্ছি? সে কথাও নিশ্চিত জানি না। বায়ুদূষণ, মাটিদূষণ, পানিদূষণ, বর্জ্যদূষণ, তাপদূষণ, অণুজৈবিক দূষণ—এরূপ আরও কত রকমের দূষণে যে প্রতিনিয়ত আমাদের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে! এখন আবার নতুন করে আলোচনায় এসেছে যুদ্ধদূষণ এবং মহাকাশে নিক্ষিপ্ত বর্জ্যের দূষণ। এত সব দূষণের মধ্যেই আমাদের শ্বাস নিতে হচ্ছে, আমাদের ফুসফুসকে সুরক্ষিত রাখতে হচ্ছে, হৃদ্যন্ত্র ও মনকে চাঙা রেখে রোজকার কাজ করতে হচ্ছে।
ডেনমার্কের এক শহরতলিতে একদিন গিয়ে দেখলাম, বিস্তীর্ণ ফাঁকা জায়গা, দূরে দূরে একেকটা ঘরবাড়ি, বিশাল বিশাল খামার, জলাশয়, তৃণভূমি, উজ্জ্বল নীলাকাশ, দিগন্ত ছুঁয়ে দাঁড়িয়ে থাকা বিশাল থামের মাথায় পাখাওয়ালা উইন্ডমিল, প্রবল বাতাসে পাখাগুলো চরকার মতো ঘুরছে। ওগুলো বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদনের যন্ত্র। মাঝে মাঝে হলুদ সরষে ফুলের মতো ফুল ফোটা বিস্তীর্ণ ক্যানোলা খেত, গম কাটা খেতের ভেতর রোলারের মতো রোল করে রাখা খড়ের গাদা। পাকা রাস্তার পাশে বুনো গোলাপের ঝোপঝাড়, সেই সব গাছে ফুটে আছে থোকা থোকা ফুল আর ঝুলছে লাল টুকটুকে বুনো গোলাপের ফল। মন ভরে এমন দৃশ্য দেখতে ইচ্ছে করে, সেই সব দৃশ্য ছবি করে রাখতে মন চায়। ছবি তুলছি, রাস্তায় দাঁড়িয়ে। কিন্তু সেই সব রাস্তার ধারে কোনো বিদ্যুতের খাম্বা নেই, এক খাম্বা থেকে আরেক খাম্বায় ঝোলানো গুছি গুছি তারের জঞ্জাল নেই। তাই ছবিগুলোর মধ্যে কোনো দৃশ্যদূষণও নেই। সে সময়ই প্রথম একজন ড্যানিশ শিক্ষকের কাছ থেকে এ শব্দের সঙ্গে পরিচিত হয়েছিলাম, কিন্তু তখন এর কোনো অর্থ বুঝিনি। তিনি শুধু আমার কাছে জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, ‘ওসব তার থাকলে কি তোমার ভালো লাগত? ওখানকার দৃশ্য দেখে তুমি কি মজা পেতে?’ কোনো জায়গায় গেলে তো সেখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্যই থাকে। সেখানে সেই সব দৃশ্যও যে ভালো রাখতে হয়, তখন তা বুঝিনি। চলতে-ফিরতে কোনো জায়গা দেখে যদি তা মনে কোনো বিরক্তির উদ্রেক করে, তবে তাকেও যে দূষণের কাতারে ফেলা যায়—এ ধারণাটা তখন মাথায় আসেনি।
দেশে ফিরে এসে দেখি শহরের প্রতিটি রাস্তায় বিদ্যুতের খাম্বা, খাম্বার মাথায় অজস্র বৈদ্যুতিক তার, আমাদের উন্নতির পাশাপাশি এসব তারের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ডিশের কেব্ল ও ইন্টারনেটের তার। সব মিলিয়ে একটা বিরাট জটলা মাথায় করে শুয়ে আছে রাস্তাগুলো। গুলশানের এত নান্দনিক ভবন ও পরিচ্ছন্ন রাস্তা, সুপরিসর ফুটপাত, রাস্তার ধারে লাগানো সারি সারি সবুজ গাছপালা—এরূপ দৃশ্যের যখন একটা নান্দনিক ছবি তুলে প্রিয় ঢাকাকে নিয়ে গর্ব করে একটি ছবি পোস্ট দিতে চাই, ঠিক তখনই সেসব ছবির মধ্যে বাগড়া দিয়ে বসে অসংখ্য তারের দাগ। এ যেন কোনো শিল্পীর খুব যত্ন করে আঁকা কোনো চিত্রকর্মের মধ্যে কোনো দুষ্টু বালকের কয়েকটা কালো রেখার আঁচড়। বিরক্ত হয়ে ক্ষান্ত দিই।
বিরক্ত হই, যখন দেখি রাস্তার মোড়ে বা বিদ্যুতের খাম্বায় লাগানো বিলবোর্ড বা ব্যানারগুলো সিগন্যাল বাতিকে আড়াল করে দিয়েছে বা বিলবোর্ডের স্টার মডেলদের ছবি ড্রাইভারের মনোযোগ কেড়ে নিচ্ছে, ভাগাড়গুলো থেকে বর্জ্য আবর্জনা টেনে বের করছে কুকুরের দল, রাস্তার ধারের গাছগুলোতে পেরেক ঢুকিয়ে লাগানো হয়েছে সাইনবোর্ড, বাড়ি ও অফিসগুলোর প্রাচীরে প্রাচীরে লাগানো নানা কিসিমের পোস্টার ও লেখা, ঝোড়ো বাতাসে রাস্তা থেকে উড়ে গিয়ে গাছের মগডালে ঝুলে
থাকা পলিথিনের ব্যাগ, ফুটপাতজুড়ে সারি সারি অস্থায়ী দোকান, ফুটপাত ছেড়ে মানুষের রাস্তায় হাঁটা, রাস্তায় জ্যামে পড়ে মোটরসাইকেলের ফুটপাতে চলা, নর্দমাগুলো থেকে উথলে পড়া নোংরা পানি ও ময়লা, নির্মাণাধীন রাস্তা ও ভবনগুলোর আব্রুবিহীন নগ্নরূপ, সমন্বিত পরিকল্পনা ছাড়াই ইচ্ছেমতো নকশা ও স্থাপত্যে নির্মিত রংবেরঙের ভবন, সুন্দর সুন্দর ভবনের গায়ে ঝোলানো অসংখ্য এসির বাক্স, বিজ্ঞাপন ও অ্যান্টেনা, যেখানে-সেখানে দাঁড় করিয়ে রাখা গাড়ি। এসব দৃশ্যদূষণ আমাদের মানসিক পীড়া দেয়, চোখকে ক্লান্ত ও দর্শনকে বিক্ষিপ্ত করে।
দীর্ঘদিন ধরে এই অবস্থা চলতে থাকলে তা আমাদের দেশ ও শহরগুলোর জন্য নিঃসন্দেহে একদিন পরিচয়ের সংকট তৈরি করবে, জনসাধারণকে দীর্ঘমেয়াদি ভোগান্তির মধ্যে রাখবে। এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। কোনো শহরের পরিকল্পনা ও নগর ব্যবস্থাপনা দুর্বল হলে এরূপ দৃশ্যদূষণ ঘটে থাকে। দৃশ্যদূষণ বর্তমানে একটি নান্দনিক সমস্যা। পৃথিবীর অনেক দেশেই এখন দৃশ্যদূষণকে পরিবেশদূষণ হিসেবে বিবেচনা করে নানামুখী পদক্ষেপ ও আইন করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে দৃশ্যদূষণ রোধে আছে ফেডারেল হাইওয়ে বিউটিফিকেশন অ্যাক্ট, ইন্টারমোডাল সারফেস ট্রান্সপোর্টেশন ইফিসিয়েন্সি অ্যাক্ট, ব্রাজিলে আছে ক্লিন সিটি ল। মাঝে মাঝে এসে তারের জঞ্জাল কেটে সাফ করা দৃশ্যদূষণ রোধের কোনো স্থায়ী সমাধান নয়, এর জন্য আমাদেরও দরকার সঠিক পরিকল্পনা, আইন ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ।
লেখক: কৃষিবিদ ও প্রকৃতিবিষয়ক লেখক
পরিবেশদূষণ নিয়ে আরও কত যে নতুন কথা শুনতে হবে কে জানে! ইতিমধ্যে ঢাকা শহরের বায়ুদূষণ নিয়ে কথা শুনতে শুনতে কান ঝালাপালা হয়ে গেছে। রাস্তায় চলার সময় গাড়ির বেহুদা হর্নের শব্দ শুনতে শুনতে, মানুষের চিৎকার-চেঁচামেচিতে, মাইক ও সাউন্ডবক্সের উচ্চ আওয়াজেও কান ঝালাপালা হচ্ছে, আমরা শব্দদূষণের শিকার হচ্ছি। আমরা না হয় অভ্যস্ত হয়ে গেছি এসব শব্দ শুনতে শুনতে, সহ্যক্ষমতাও আমাদের অনেক বেশি। কিন্তু যে নবজাতক শিশুকে নিয়ে মা রাস্তায় বেরিয়েছেন, সেই শিশুর কী অবস্থা, একবারও কি তা ভেবে দেখেছি?
প্রায় কুড়ি বছর আগে ডেনমার্কের একটি ছোট্ট শহরে কয়েক মাস থাকার সুযোগ হয়েছিল। ছুটির দিনে মাঝেমধ্যে বেরিয়ে পড়তাম শহর ও শহরতলি দেখতে। একদিন এক রাস্তার ফুটপাতে হাঁটার সময় কিছুটা দূরে এক সহপাঠী বিদেশি বন্ধুকে দেখে জোরে চিৎকার করে আমি তাকে তার নাম ধরে ডাকলাম। সঙ্গে সঙ্গে আমার পাশে হেঁটে যাওয়া একজন ডেনিশ পথিক তাঁর ঠোঁট দুটোয় তর্জনী চেপে ধরে আমার দিকে তাকিয়ে ‘হিশশশশশ্’ শব্দ করে জানিয়ে দিলেন—না, ওভাবে চিৎকার করে কাউকে ডাকতে নেই। এতে অন্যদের অসুবিধা হয়। ওটাও নাকি শব্দদূষণ।
মোবাইল ফোনের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতার কারণে কি আমরা বিকিরণজনিত কোনো দূষণের শিকার হচ্ছি? সে কথাও নিশ্চিত জানি না। বায়ুদূষণ, মাটিদূষণ, পানিদূষণ, বর্জ্যদূষণ, তাপদূষণ, অণুজৈবিক দূষণ—এরূপ আরও কত রকমের দূষণে যে প্রতিনিয়ত আমাদের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে! এখন আবার নতুন করে আলোচনায় এসেছে যুদ্ধদূষণ এবং মহাকাশে নিক্ষিপ্ত বর্জ্যের দূষণ। এত সব দূষণের মধ্যেই আমাদের শ্বাস নিতে হচ্ছে, আমাদের ফুসফুসকে সুরক্ষিত রাখতে হচ্ছে, হৃদ্যন্ত্র ও মনকে চাঙা রেখে রোজকার কাজ করতে হচ্ছে।
ডেনমার্কের এক শহরতলিতে একদিন গিয়ে দেখলাম, বিস্তীর্ণ ফাঁকা জায়গা, দূরে দূরে একেকটা ঘরবাড়ি, বিশাল বিশাল খামার, জলাশয়, তৃণভূমি, উজ্জ্বল নীলাকাশ, দিগন্ত ছুঁয়ে দাঁড়িয়ে থাকা বিশাল থামের মাথায় পাখাওয়ালা উইন্ডমিল, প্রবল বাতাসে পাখাগুলো চরকার মতো ঘুরছে। ওগুলো বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদনের যন্ত্র। মাঝে মাঝে হলুদ সরষে ফুলের মতো ফুল ফোটা বিস্তীর্ণ ক্যানোলা খেত, গম কাটা খেতের ভেতর রোলারের মতো রোল করে রাখা খড়ের গাদা। পাকা রাস্তার পাশে বুনো গোলাপের ঝোপঝাড়, সেই সব গাছে ফুটে আছে থোকা থোকা ফুল আর ঝুলছে লাল টুকটুকে বুনো গোলাপের ফল। মন ভরে এমন দৃশ্য দেখতে ইচ্ছে করে, সেই সব দৃশ্য ছবি করে রাখতে মন চায়। ছবি তুলছি, রাস্তায় দাঁড়িয়ে। কিন্তু সেই সব রাস্তার ধারে কোনো বিদ্যুতের খাম্বা নেই, এক খাম্বা থেকে আরেক খাম্বায় ঝোলানো গুছি গুছি তারের জঞ্জাল নেই। তাই ছবিগুলোর মধ্যে কোনো দৃশ্যদূষণও নেই। সে সময়ই প্রথম একজন ড্যানিশ শিক্ষকের কাছ থেকে এ শব্দের সঙ্গে পরিচিত হয়েছিলাম, কিন্তু তখন এর কোনো অর্থ বুঝিনি। তিনি শুধু আমার কাছে জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, ‘ওসব তার থাকলে কি তোমার ভালো লাগত? ওখানকার দৃশ্য দেখে তুমি কি মজা পেতে?’ কোনো জায়গায় গেলে তো সেখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্যই থাকে। সেখানে সেই সব দৃশ্যও যে ভালো রাখতে হয়, তখন তা বুঝিনি। চলতে-ফিরতে কোনো জায়গা দেখে যদি তা মনে কোনো বিরক্তির উদ্রেক করে, তবে তাকেও যে দূষণের কাতারে ফেলা যায়—এ ধারণাটা তখন মাথায় আসেনি।
দেশে ফিরে এসে দেখি শহরের প্রতিটি রাস্তায় বিদ্যুতের খাম্বা, খাম্বার মাথায় অজস্র বৈদ্যুতিক তার, আমাদের উন্নতির পাশাপাশি এসব তারের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ডিশের কেব্ল ও ইন্টারনেটের তার। সব মিলিয়ে একটা বিরাট জটলা মাথায় করে শুয়ে আছে রাস্তাগুলো। গুলশানের এত নান্দনিক ভবন ও পরিচ্ছন্ন রাস্তা, সুপরিসর ফুটপাত, রাস্তার ধারে লাগানো সারি সারি সবুজ গাছপালা—এরূপ দৃশ্যের যখন একটা নান্দনিক ছবি তুলে প্রিয় ঢাকাকে নিয়ে গর্ব করে একটি ছবি পোস্ট দিতে চাই, ঠিক তখনই সেসব ছবির মধ্যে বাগড়া দিয়ে বসে অসংখ্য তারের দাগ। এ যেন কোনো শিল্পীর খুব যত্ন করে আঁকা কোনো চিত্রকর্মের মধ্যে কোনো দুষ্টু বালকের কয়েকটা কালো রেখার আঁচড়। বিরক্ত হয়ে ক্ষান্ত দিই।
বিরক্ত হই, যখন দেখি রাস্তার মোড়ে বা বিদ্যুতের খাম্বায় লাগানো বিলবোর্ড বা ব্যানারগুলো সিগন্যাল বাতিকে আড়াল করে দিয়েছে বা বিলবোর্ডের স্টার মডেলদের ছবি ড্রাইভারের মনোযোগ কেড়ে নিচ্ছে, ভাগাড়গুলো থেকে বর্জ্য আবর্জনা টেনে বের করছে কুকুরের দল, রাস্তার ধারের গাছগুলোতে পেরেক ঢুকিয়ে লাগানো হয়েছে সাইনবোর্ড, বাড়ি ও অফিসগুলোর প্রাচীরে প্রাচীরে লাগানো নানা কিসিমের পোস্টার ও লেখা, ঝোড়ো বাতাসে রাস্তা থেকে উড়ে গিয়ে গাছের মগডালে ঝুলে
থাকা পলিথিনের ব্যাগ, ফুটপাতজুড়ে সারি সারি অস্থায়ী দোকান, ফুটপাত ছেড়ে মানুষের রাস্তায় হাঁটা, রাস্তায় জ্যামে পড়ে মোটরসাইকেলের ফুটপাতে চলা, নর্দমাগুলো থেকে উথলে পড়া নোংরা পানি ও ময়লা, নির্মাণাধীন রাস্তা ও ভবনগুলোর আব্রুবিহীন নগ্নরূপ, সমন্বিত পরিকল্পনা ছাড়াই ইচ্ছেমতো নকশা ও স্থাপত্যে নির্মিত রংবেরঙের ভবন, সুন্দর সুন্দর ভবনের গায়ে ঝোলানো অসংখ্য এসির বাক্স, বিজ্ঞাপন ও অ্যান্টেনা, যেখানে-সেখানে দাঁড় করিয়ে রাখা গাড়ি। এসব দৃশ্যদূষণ আমাদের মানসিক পীড়া দেয়, চোখকে ক্লান্ত ও দর্শনকে বিক্ষিপ্ত করে।
দীর্ঘদিন ধরে এই অবস্থা চলতে থাকলে তা আমাদের দেশ ও শহরগুলোর জন্য নিঃসন্দেহে একদিন পরিচয়ের সংকট তৈরি করবে, জনসাধারণকে দীর্ঘমেয়াদি ভোগান্তির মধ্যে রাখবে। এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। কোনো শহরের পরিকল্পনা ও নগর ব্যবস্থাপনা দুর্বল হলে এরূপ দৃশ্যদূষণ ঘটে থাকে। দৃশ্যদূষণ বর্তমানে একটি নান্দনিক সমস্যা। পৃথিবীর অনেক দেশেই এখন দৃশ্যদূষণকে পরিবেশদূষণ হিসেবে বিবেচনা করে নানামুখী পদক্ষেপ ও আইন করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে দৃশ্যদূষণ রোধে আছে ফেডারেল হাইওয়ে বিউটিফিকেশন অ্যাক্ট, ইন্টারমোডাল সারফেস ট্রান্সপোর্টেশন ইফিসিয়েন্সি অ্যাক্ট, ব্রাজিলে আছে ক্লিন সিটি ল। মাঝে মাঝে এসে তারের জঞ্জাল কেটে সাফ করা দৃশ্যদূষণ রোধের কোনো স্থায়ী সমাধান নয়, এর জন্য আমাদেরও দরকার সঠিক পরিকল্পনা, আইন ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ।
লেখক: কৃষিবিদ ও প্রকৃতিবিষয়ক লেখক
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
২ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
২ দিন আগে