Ajker Patrika

আলাউদ্দিন আলী

সম্পাদকীয়
আলাউদ্দিন আলী

সুরের জগতে এক কিংবদন্তির নাম আলাউদ্দিন আলী। একই সঙ্গে তিনি গীতিকার, সুরকার, সংগীত পরিচালক ছিলেন। পুরো সত্তরের দশক তিনি মাতিয়ে রেখেছিলেন তাঁর সম্মোহনী সুরের মায়াজালে। অসংখ্য কালজয়ী গানের সংগীত পরিচালক তিনি। ‘একবার যদি কেউ ভালোবাস তো’, ‘যে ছিল দৃষ্টির সীমানায়’, ‘প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ’, ‘ভালোবাসা যত বড় জীবন তত বড় নয়’, ‘সূর্যোদয়ে তুমি, সূর্যাস্তেও তুমি ও আমার বাংলাদেশ’, ‘যেটুকু সময় তুমি থাকো কাছে’, ‘এমনও তো প্রেম হয়, চোখের জলে কথা কয়’, ‘কেউ কোনো দিন আমারে তো কথা দিল না’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি মাগো’—তাঁরই সংগীত পরিচালনায় এই গানগুলো শ্রোতাদের হৃদয়ে গেঁথে আছে আজও।

১৯৫২ সালের ২৪ ডিসেম্বর পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে তাঁর জন্ম। পৈতৃক বাড়ি মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার বাঁশবাড়ি গ্রামে। বাবা ওস্তাদ জাদব আলীও ছিলেন গানের মানুষ। তিনি চাকরি করতেন বাংলাদেশ বেতারে। শৈশব থেকে সংগীতজগতের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ঘটে পরিবারে সংগীতচর্চার কারণে। ছোটবেলায় ‘অল পাকিস্তান চিলড্রেনস’ প্রতিযোগিতায় বেহালা বাজানোর জন্য পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি।

ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন বেহালাবাদক হিসেবে। ষাটের দশকেই প্রথম চলচ্চিত্রে বেহালাবাদক হিসেবে কাজ শুরু করেন। তাঁর বেহালার সুরে মুগ্ধ হতেন অনেকেই। তবে শেষ পর্যন্ত সংগীতই হয়ে ওঠে তাঁর ধ্যান-জ্ঞান।

সংগীত পরিচালনায় সত্তরের দশক থেকে পরিচিত নাম হয়ে ওঠে আলাউদ্দিন আলী। ১৯৭৫ সালে প্রথম সংগীত পরিচালনা করেন ‘সন্ধিক্ষণ’ চলচ্চিত্রে। এরপর ১৯৭৭ সালে ‘গোলাপি এখন ট্রেনে’ আর ‘ফকির মজনু শাহ’ চলচ্চিত্রে সংগীত পরিচালনা করেন তিনি।

চলচ্চিত্র, বেতার, টেলিভিশন মিলে প্রায় পাঁচ হাজার গান তৈরি করেছেন আলাউদ্দিন আলী। মোট আটবার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। ‘একতারা মাল্টিমিডিয়া প্রোডাকশন’ নামে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান।

এই সংগীত জগতের কিংবদন্তি মানুষটি দেহত্যাগ করলেও শ্রোতাদের মনে ঠিকই বেঁচে আছেন, থাকবেন তাঁর সুর করা গানের মাধ্যমে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত