রাজবাড়ীতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষে ব্যস্ত চাষিরা

রাজবাড়ী প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৮ নভেম্বর ২০২২, ১৫: ২০

রাজবাড়ীতে পেঁয়াজের সুনাম রয়েছে বহু বছর আগে থেকেই। সারা দেশের উৎপাদিত পেঁয়াজের ১৪ শতাংশ এ জেলায় হয়। এই জেলায় প্রতি মৌসুমে মুড়িকাটা ও হালি—এই দুই জাতের পেঁয়াজের চাষ হয়। এর মধ্যে আগাম জাত মুড়িকাটা। এবারও জেলা সদর, পাংশা, কালুখালী, বালিয়াকান্দি ও গোয়ালন্দ উপজেলায় এ জাতের পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। মুড়িকাটা পেঁয়াজ রোপণের ৯০ দিনের মধ্যে ফলন তোলা যায়। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে কৃষকের রোপণ করা অনেক পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে। যে কারণে খরচ হচ্ছে দ্বিগুণ। কাঙ্ক্ষিত ফলন নিয়েও দুশ্চিন্তায় কৃষকেরা।

সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে রোপণ করা মুড়িকাটা পেঁয়াজ পরিচর্যায় মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। কেউ জমিতে নিড়ানি দিচ্ছেন, কেউ আগাছা পরিষ্কার করছেন, কেউ কীটনাশক ছিটাচ্ছেন। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে অনেক কৃষকের রোপণ করা পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে। অনেকেই নতুন করে পেঁয়াজ রোপণ করছেন, যে কারণে খরচ হচ্ছে দ্বিগুণ। কাঙ্ক্ষিত ফলন নিয়েও দুশ্চিন্তায় চাষিরা।

কৃষক আবজাল হোসেন বলেন, এক বিঘা জমি লিজে বছরে ২০ হাজার টাকা দিতে হয়। জমি চাষ, সেচ, সার, পেঁয়াজবীজ, শ্রমিক দিয়ে প্রতি বিঘায় পেঁয়াজ চাষে খরচ পড়ে ৫০-৬০ হাজার টাকা। এ বছর ঘূর্ণিঝড়ের কারণে জমিতে লাগানো অনেক পেঁয়াজ পচে গেছে, আবার নতুন করে লাগানো হচ্ছে।

একই গ্রামের কৃষক সোহরাব মোল্লা বলেন, ‘একবার পেঁয়াজ লাগাইছিলাম, বৃষ্টিতে পচে গেছে আবার লাগাচ্ছি। এক বিঘায় খরচ পড়বে ৩৫-৪০ হাজার টাকা। শেষ পর্যন্ত আল্লাহ কী যে দিবি, সেটা বলা যাবে না।’

আরেক কৃষক মো. হাশেম বলেন, ‘এ বছর জমি চাষ, সার, সেচ ও শ্রমিক খরচ বেড়ে যাওয়ায় ঘরে উঠানো পর্যন্ত বিঘাপ্রতি মুড়িকাটা পেঁয়াজে খরচ পড়বে ৩৫-৪০ হাজার টাকা আর বিঘাপ্রতি পেঁয়াজ উৎপাদন হবে ৫০-৬০ মণ। ভারতের পেঁয়াজ আমদানি না করলে কিছুটা লাভ থাকবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখন পেঁয়াজখেত নিড়ানি দিচ্ছি, স্প্রে করছি, আগাছা পরিষ্কার করছি।

বৃষ্টিতে তো অনেক পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে। জমি থেকে ঘরে তোলা পর্যন্ত এক মণ পেঁয়াজে খরচ হয় প্রায় এক হাজার টাকা আর বিক্রি করতে হয় ৮০০-৯০০ টাকায়। এতে কৃষকের লোকসান হয়। পেঁয়াজের দাম ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা হলে কৃষক লাভবান হবেন।’

রাজবাড়ী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বাহাউদ্দিন সেক বলেন, ‘জেলায় মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ চলছে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে অনেক কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাদের এই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার জন্য আমরা বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছি। এ বছর জেলায় ৫ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে।’ 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত