টিকা নিতে ভিড়, বাড়ল ঝুঁকি

কাজল সরকার, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০২১, ০৬: ০৫
আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২১, ১০: ২৮

হবিগঞ্জে শিক্ষার্থীদের করোনাভাইরাস প্রতিরোধে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। টিকা গ্রহণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ দেখা গেলেও অভিযোগ উঠেছে অনেক অব্যবস্থাপনার। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে গাদাগাদি করে টিকা নিতে ভিড় করে কেন্দ্রে। এ সময় টিকা গ্রহীতাদের মুখে ছিল না মাস্ক। এতে করোনা সংক্রমণ আরও বৃদ্ধি পাওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকেরা।

গতকাল মঙ্গলবার টিকা দেওয়া হয়েছে নবীগঞ্জ উপজেলার শিক্ষার্থীদের। এদিন ১ হাজার ৯৯৫ জন নিবন্ধ করলেও টিকা নেয় ১ হাজার ৭৪৬ শিক্ষার্থী। টিকা নিতে আসা শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ছিল নানা অব্যবস্থাপনা এবং স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘনের। টিকা কেন্দ্রের সামনে ছিল শিক্ষার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অভিভাবকদের ভিড়ও ছিল কেন্দ্রে।

এদিকে স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব শিক্ষা বিভাগের। আর শিক্ষা বিভাগ বলছে কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল তাদের।

টিকা নিতে আসা নবীগঞ্জ কলেজের শিক্ষার্থী মৌমিতা দাশ বলে, ‘সকালে টিকার জন্য এসেছি। কিন্তু এত ভিড় যে আমরা উপরেই উঠতে পারছি না। একদিনে এত শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার কারণে এই ভিড় হয়েছে।’

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জানা যায়, গত ১৮ নভেম্বর শিক্ষার্থীদের টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান। ২১ অক্টোবর থেকে শুধুমাত্র এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের টিকা প্রদানের উদ্যোগ নেয় জেলা শিক্ষা বিভাগ। সে অনুযায়ী নিবন্ধকৃত শিক্ষার্থীদের টিকা গ্রহণের জন্য এসএমএসের মাধ্যমে তারিখ ও সময় জানিয়ে দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদানের জন্য হবিগঞ্জ শহরের সাইফুর রহমান টাউন হলকে কেন্দ্র হিসেবে নির্ধারণ করা হয়।

গেল তিন দিনে ৫ হাজার ৩৬৮ জন শিক্ষার্থী টিকা গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে ছেলে ২ হাজার ১৫০ জন এবং মেয়ে ৩ হাজার ২১৮ জন। তবে নিবন্ধন করলেও টিকা গ্রহণ করেনি ১ হাজার ৫৫০ জন শিক্ষার্থী।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় আরও জানায়, ২১ নভেম্বর টিকা দেওয়া হয় শায়েস্তাগঞ্জ, আজমিরীগঞ্জ ও বাহুবল উপজেলার এইচএসসি শিক্ষার্থীদের। ওই দিন তিন উপজেলার ২ হাজার ৬০৩ জন শিক্ষার্থী টিকার জন্য নিবন্ধন করেন। কিন্তু টিকা গ্রহণ করেছেন ১ হাজার ৭৪৪ জন। ২২ নভেম্বর টিকা দেওয়া হয় চুনারুঘাট এবং মাধবপুর উপজেলার শিক্ষার্থীদের। ওই দিন ২ হাজার ৩২০ জন শিক্ষার্থী টিকার জন্য নিবন্ধন করলেও গ্রহণ করেছেন ১ হাজার ৮৭৮ জন।

জয়নাল মিয়া নামে এক শিক্ষার্থী বলে, ‘টিকা নিতে এসেছি করোনা থেকে রক্ষা পেতে। কিন্তু এখানে অনেক ভিড়, এমন অবস্থায় উল্টো সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে। এখানে কোনো স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই। নেই কোনো শৃঙ্খলা।’

এ ব্যাপারে জেলা সিভিল সার্জন ডা. একেএম মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা আছে শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের কোনো ব্যবস্থাপনা নেই। আমরা শুধু টিকা দেব। টিকাকেন্দ্র নির্ধারণসহ বাকি সব ব্যবস্থাপনা করবে শিক্ষা বিভাগ।’

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার মোহাম্মদ রুহুল্লাহ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের টিকা গ্রহণে আগ্রহ দেখা গেছে। তবে শতভাগ নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। আমরা স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতও করেছি। কিন্তু একটি কেন্দ্রে টিকা প্রদান এবং শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি থাকার কারণে ভিড়ের সমস্যা হয়েছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত