কিডনি সুস্থ থাকবে যেভাবে

অধ্যাপক ডা. এ কে এম মূসা 
প্রকাশ : ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৮: ৫৭
আপডেট : ২৭ জুলাই ২০২৪, ১৩: ৩৬

বারডেম জেনারেল হাসপাতাল এবং ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ কিডনি আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এর গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো:

  • রক্ত পরিশোধিত করে দূষিত বর্জ্য পদার্থ প্রস্রাবের মাধ্যমে বের করে দেওয়া।
  • হরমোন এরিথ্রোপয়েটিন তৈরি করা, যা শরীরে রক্ত তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • শরীরে পানি, খনিজ ও রাসায়নিক পদার্থের ভারসাম্য রক্ষা করা।
  • ভিটামিন ডি তৈরি করা, যা হাড়ের সুরক্ষা দেয়।

কিডনি রোগের কারণ

আমাদের দেশের ৮ থেকে ১০ শতাংশ মানুষ কিডনির রোগে আক্রান্ত। দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগের কারণ

  • ডায়াবেটিস
  • উচ্চ রক্তচাপ
  • নেফ্রাইটিস
  • কিডনি সংক্রমণ
  • বংশগত কিডনি রোগ
  • ভাগকুলাইটিস‍এসএলই, পিএন ইত্যাদি

হঠাৎ সৃষ্ট কিডনি রোগ

  • ডায়রিয়া ও অন্যান্য কারণে সৃষ্ট পানিশূন্যতা।
  • শরীর থেকে হঠাৎ অনেক রক্তক্ষরণ, পাকস্থলী থেকে অথবা প্রসবজনিত রক্তক্ষরণ।
  • নেফ্রাইটিস।
  • ব্যথানাশক ওষুধ সেবন।
  • কিডনি ও মূত্রনালিতে পাথর।
  • প্রোস্টেট গ্রন্থি বড় হওয়া।

কিডনি রোগের লক্ষণ

  • শরীরে পানি জমা। এ কারণে প্রথমে মুখ ফোলা।
  • প্রস্রাব কম হওয়া।
  • প্রস্রাব বেশি হওয়া, বিশেষ করে রাতে।
  • প্রস্রাব লাল হওয়া, দুর্গন্ধ হওয়া। 
    ক্ষুধামান্দ্য ও বমি হওয়া।
  • রক্তশূন্যতা।
  • চর্মরোগ ছাড়া শরীর চুলকানো।
  • প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া করা।
  • কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসা।
  • হঠাৎ উচ্চ রক্তচাপ দেখা দেওয়া।

কিডনি ভালো রাখতে যা করবেন

  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ কিডনির শক্র। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য মুখে খাওয়ার ওষুধের সঙ্গে প্রয়োজনে ইনসুলিন নিতে হবে এবং এইচবিএওয়ানসি-৭-এর নিচে রাখতে হবে।
  • ব্লাড প্রেশারের জন্য এক বা একাধিক ওষুধ সেবনের সময় বিপি ১৩০/৮০-এর নিচে রাখতে হবে।
  • ডায়রিয়া ও অন্যান্য পানিশূন্যতা ও রক্তক্ষরণের সঠিক চিকিৎসা করতে হবে।
  • কিডনি সংক্রমণ রোগের যথাযথ চিকিৎসা করতে হবে।
  • প্রোস্টেট গ্রন্থি বড় হলে এবং কিডনিতে পাথর হলে চিকিৎসা নিতে হবে।
  • ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
  • ধূমপান বাদ দিতে হবে।
  • চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যথার ওষুধ ও অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া যাবে না।
  • রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
  • প্রতিদিন কিছু ব্যায়াম করতে হবে।
  • যাঁদের বয়স ৪০, তাঁদের বছরে একবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হবে। কিডনি টেস্ট, যেমন এস, ইউরিয়া, ক্রিয়েটিনিন, প্রস্রাবের আর/ই এবং এসিআর টেস্ট করাতে হবে।

কিডনি ভালো রাখতে খাওয়াদাওয়া

  • প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করতে হবে।
  • কোমল পানীয় পান করা বাদ দিতে হবে।
  • লবণ কম খেতে হবে।
  • প্রতিদিন সবুজ শাকসবজি খেতে হবে।
  • অস্বাস্থ্যকর খাবার বাদ দিতে হবে।
  •  চর্বিযুক্ত মাছ, সামুদ্রিক মাছ ও অন্যান্য মাছ পরিমিত খেতে হবে। প্রতিদিন একটি করে ডিম খেতে হবে।
  • মাংস খেতে হবে নিয়ন্ত্রিত পরিমাণে এবং লাল মাংস যথাসম্ভব এড়িয়ে যেতে হবে।

জেনে নিন

  • কিডনি রোগের চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল।
  • কিডনির ৫০ শতাংশ ক্ষতি না হওয়া পর্যন্ত সেরাম ক্রিয়েটিনিন বাড়ে না।
  • কিডনির ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ ক্ষতি না হওয়া পর্যন্ত শারীরিক কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায় না।
  •  দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগ যখন ধরা পড়ে, তারপর সেরাম ক্রিয়েটিনিন কমার সুযোগ থাকে না। যথাযথ চিকিৎসায় কিডনির ক্ষতির হার কমানো গেলেও তা স্বাভাবিক করা যাবে না।

পরামর্শ দিয়েছেন: মেডিসিন ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ, বিভাগীয় প্রধান, মেডিসিন

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত