Ajker Patrika

কিডনির এক নীরব ঘাতক

ডা. মনিরুল ইসলাম ফাহিম
আপডেট : ২৮ মে ২০২২, ১৭: ০১
কিডনির এক নীরব ঘাতক

কিডনির বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে কিছু যেমন প্রকট লক্ষণ নিয়ে হাজির হয়, তেমনি কিছু ক্ষতি করে যায় নীরবে। এর এক উদাহরণ হাইড্রোনেফ্রোসিস। হাইড্রোনেফ্রোসিস হলো, প্রস্রাব জমার কারণে কিডনি ফুলে যাওয়া বা বড় হয়ে যাওয়া। সাধারণত কিডনি থেকে প্রস্রাব তৈরি হয়ে মূত্রনালির মাধ্যমে মূত্রথলিতে যায়। সেখান থেকে মূত্রাশয়ের মাধ্যমে নির্গত হয়। যখন কোনো বাধা বা ব্লকের কারণে প্রস্রাব কিডনি থেকে মূত্রাশয় দিয়ে বের হয়ে যেতে পারে না, তখন হাইড্রোনেফ্রোসিস হয়। এটি এক দিকের বা উভয় কিডনিতে ঘটতে পারে।

লক্ষণ
হাইড্রোনেফ্রোসিস উপসর্গ সৃষ্টি করতে পারে বা না-ও করতে পারে। প্রধান উপসর্গগুলোর মধ্যে:

  • পেটের পাশে এবং পিঠে, পেটে বা কুঁচকিতে ব্যথা।
  • প্রস্রাবের সময় ব্যথা।
  • প্রস্রাবের সঙ্গে অন্যান্য সমস্যা, যেমন বেশি বা কম পরিমাণ প্রস্রাব, বারবার প্রস্রাবের বেগ আসা, প্রস্রাবের থলি পুরো খালি না হওয়া ইত্যাদি।
  • বমি বমি ভাব।
  • জ্বর। 

কীভাবে হয়
হাইড্রোনেফ্রোসিস সাধারণত অন্য অন্তর্নিহিত অসুস্থতা বা ঝুঁকির কারণে সৃষ্টি হয়। যেমন: 

  • কিডনিতে পাথর। এর জন্য প্রস্রাবের পথ আটকে থাকে। 
  • জন্মগতভাবে ইউরিনারি ট্রাক্টের কোনো অংশে বাধা বা ব্লক থাকা। 
  • রক্ত জমাট বেঁধে প্রস্রাবের পথ আটকে যাওয়া।
  • আঘাত বা পূর্ববর্তী অপারেশন থেকে ক্ষত থাকা।
  • টিউমার বা ক্যানসার, যেমন মূত্রাশয়, জরায়ুমুখ, কোলন বা প্রোস্টেট ক্যানসার ইত্যাদি।
  • প্রোস্টেট বড় হয়ে যাওয়া।
  • গর্ভাবস্থা।
  • মূত্রনালির প্রদাহ সৃষ্টিকারী অন্যান্য রোগ।

পরীক্ষা-নিরীক্ষা

  • কিডনি ও ইউরিনারি ট্রাস্টের আলট্রাসনোগ্রাফি।
  • কিডনি ও তলপেট অংশের এক্স-রে।
  • সিটি স্ক্যান ও ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স ইমার্জিং (এমআরআই)।
  • সিস্টোস্কোপিও।
  • রক্ত, প্রস্রাব ও কিডনির কার্যকারিতা পরীক্ষা।

চিকিৎসা 
হাইড্রোনেফ্রোসিস সাধারণত অন্তর্নিহিত রোগ বা কারণের সমাধান করে চিকিৎসা করা হয়। কিছু ক্ষেত্রে অপারেশন ছাড়াই সমাধান করা যেতে পারে। অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে সংক্রমণের চিকিৎসা করা যেতে পারে। কখনো কখনো অপারেশনের প্রয়োজন হতে পারে।
জটিল হাইড্রোনেফ্রোসিসের ক্ষেত্রে মূত্রাশয় থেকে প্রস্রাব নিষ্কাশনের জন্য একটি ক্যাথেটার ব্যবহার করে বা কিডনি থেকে প্রস্রাব বের করার জন্য নেফ্রোস্টোমি নামক একটি বিশেষ টিউব ব্যবহার করে অতিরিক্ত প্রস্রাব অপসারণ করতে হতে পারে। একদম শেষ পর্যায়ে ডায়ালাইসিস বা কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হতে পারে। কিডনির স্থায়ী ক্ষতি এড়াতে চিকিৎসার মূল চাবিকাঠি হলো, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এটির সমাধান করা।

লেখক: আবাসিক চিকিৎসক নেফ্রোলজি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মিডিয়া ছুটায় দেব, চেনো আমাদের’—সাংবাদিককে হুমকি কুড়িগ্রামের এসপির

বান্দরবান, মণিপুর, মিজোরাম ও রাখাইন নিয়ে খ্রিষ্টান রাষ্ট্র করার ষড়যন্ত্র চলছে: বজলুর রশীদ

ইসলামপুর বিএনপির সহসভাপতি যোগ দিলেন জামায়াতে

যশোরে সেপটিক ট্যাংকে গৃহবধূর মরদেহ: ভিসেরা প্রতিবেদনে ধর্ষণের পর হত্যার আলামত

জুলাই ফাউন্ডেশনে অর্থ কেলেঙ্কারির অভিযোগে নাগরিক কমিটির পিংকি কারাগারে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত