ডা. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম
দুঃখজনক বিষয় হলো, কিডনি রোগের লক্ষণ যত দিনে প্রকট হয়, তত দিনে অনেক দেরি হয়ে যায়। তাই ছোট ছোট লক্ষণ আগে থেকেই খেয়াল করতে পারা খুব জরুরি।
জেনে নিন কিডনি রোগের লক্ষণ সম্পর্কে
বারবার প্রস্রাব হওয়া
যদি প্রায়ই প্রস্রাব করার প্রয়োজন অনুভব হয়, বিশেষ করে রাতে, এটি কিডনি রোগের লক্ষণ হতে পারে। যখন কিডনির ফিল্টারগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখন এটি প্রস্রাব করার তাগিদ বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। পুরুষদের ক্ষেত্রে কখনো কখনো এটি মূত্রনালির সংক্রমণ বা বেড়ে যাওয়া প্রোস্টেটের লক্ষণও হতে পারে। ডায়াবেটিসও প্রস্রাব বৃদ্ধির একটি কারণ; যা পরে কিডনির রোগ সৃষ্টি করে। দীর্ঘমেয়াদি কিডনির রোগে একসময় প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যায়।
প্রস্রাবে রক্তের উপস্থিতি
পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করার পরও যদি প্রস্রাবের রং গাঢ় থাকে, সেটা প্রস্রাবে রক্ত বের হওয়ার কারণে হতে পারে। এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। স্বাস্থ্যকর কিডনি সাধারণত রক্ত থেকে বর্জ্য ফিল্টার করার সময় শরীরের রক্তের কোষগুলো আলাদা করে রাখে। কিন্তু যখন কিডনির ফিল্টারগুলো (গ্লোমেরুলার বেইজমেন্ট মেমব্রেন) ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখন এই রক্তকণিকাগুলো প্রস্রাবের মধ্যে আসতে শুরু করে। কিডনি রোগ ছাড়াও প্রস্রাবে রক্ত আসা যেকোনো টিউমার, কিডনিতে পাথর বা সংক্রমণের নির্দেশক হতে পারে।
প্রস্রাবে ফেনা হওয়া
কিডনি সাধারণত ফিল্টার করে প্রয়োজনীয় আমিষ শরীরে ধরে রাখে। ডিমের সাদা অংশ ফেটালে যে রকম ফেনা তৈরি হয়, প্রস্রাবে সেই রকম ফেনার উপস্থিতি কিডনি রোগের আশঙ্কা তৈরি করে। এই ফেনার উপস্থিতি মানে হলো কিডনি দিয়ে আমিষ (এলবুমিন) বের হয়ে যাচ্ছে। কিডনির কাঠামোর ক্ষতির কারণে এমন হয়।
শরীরের বিভিন্ন অংশ ফুলে যাওয়া
শরীর থেকে প্রস্রাবের মাধ্যমে আমিষ বের হয়ে গেলে রক্ত তরল ধরে রাখতে পারে না। ফলে সেই তরল কোষের ফাঁকে ফাঁকে জমা হয়ে ফোলা ভাব তৈরি করে; বিশেষ করে সকালবেলা পায়ের পাতা, মুখমণ্ডল ও চোখের চারপাশে ফুলে থাকা এর লক্ষণ হতে পারে।
ক্লান্তি, অবসাদ ও অমনোযোগিতা
কিডনির কার্যকারিতা মারাত্মকভাবে কমে যাওয়ার ফলে রক্তে টক্সিন ও বর্জ্য পদার্থ জমা হতে পারে। এতে ক্লান্তি ও অবসাদ বোধ হতে পারে। এ অবস্থা কোনো কাজে মনোনিবেশ করা কঠিন করে তুলতে পারে।
রক্তস্বল্পতা
কিডনির রোগের কারণে বোনম্যারো ক্ষতিগ্রস্ত হয়, রক্ত উৎপাদনের প্রয়োজনীয় হরমোন কমে যায়। ফলে দেখা দেয় রক্তশূন্যতা। দুর্বলতা ও বমি ভাব রক্তশূন্যতার লক্ষণ।
ঘুমের সমস্যা
যখন কিডনি সঠিকভাবে শরীরের তরল পদার্থ ফিল্টার করতে পারে না, তখন বিষাক্ত পদার্থ প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে রক্তে থেকে যায়। এটি ঘুমাতে অসুবিধা করতে পারে। স্থূলতা ও দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের মধ্যেও একটি যোগসূত্র রয়েছে। সুস্থ মানুষের তুলনায় দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে স্লিপ অ্যাপনিয়া বেশি দেখা যায়—ঘুমের মধ্যে নাক ডাকা যার অন্যতম লক্ষণ।
শুষ্ক ত্বক ও চুলকানি
শুষ্ক ত্বক ও চুলকানি খনিজ লবণের অসামঞ্জস্য এবং হাড়ের রোগের লক্ষণ হতে পারে, যা প্রায়ই দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগের লক্ষণ। যখন কিডনি আর রক্তে খনিজ এবং পুষ্টির সঠিক ভারসাম্য রাখতে অক্ষম হয়, তখন তা ত্বকের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।
ক্ষুধামান্দ্য
শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ বের না হলে সেগুলোর কারণে যেসব উপসর্গ তৈরি হয়, এর মধ্যে অন্যতম হলো ক্ষুধামান্দ্য।
মাংসপেশির ক্র্যাম্প
কিডনি শরীরে ক্যালসিয়াম আর ফসফেটের ভারসাম্য বজায় রাখে। রোগের কারণে এগুলোর ভারসাম্য ব্যাহত হলে মাসল ক্র্যাম্প দেখা দিতে পারে।
এই লক্ষণগুলো অন্য অনেক রোগের কারণেও হতে পারে। কিন্তু এর অবজ্ঞা করলে পরে এগুলো অনেক বড় কিডনি রোগে রূপান্তরিত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। তাই এসব লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া দরকার।
ডা. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, এমবিবিএস, বিসিএস (স্বাস্থ্য), রেসিডেন্ট, নেফ্রোলজি বিভাগ,ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
দুঃখজনক বিষয় হলো, কিডনি রোগের লক্ষণ যত দিনে প্রকট হয়, তত দিনে অনেক দেরি হয়ে যায়। তাই ছোট ছোট লক্ষণ আগে থেকেই খেয়াল করতে পারা খুব জরুরি।
জেনে নিন কিডনি রোগের লক্ষণ সম্পর্কে
বারবার প্রস্রাব হওয়া
যদি প্রায়ই প্রস্রাব করার প্রয়োজন অনুভব হয়, বিশেষ করে রাতে, এটি কিডনি রোগের লক্ষণ হতে পারে। যখন কিডনির ফিল্টারগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখন এটি প্রস্রাব করার তাগিদ বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। পুরুষদের ক্ষেত্রে কখনো কখনো এটি মূত্রনালির সংক্রমণ বা বেড়ে যাওয়া প্রোস্টেটের লক্ষণও হতে পারে। ডায়াবেটিসও প্রস্রাব বৃদ্ধির একটি কারণ; যা পরে কিডনির রোগ সৃষ্টি করে। দীর্ঘমেয়াদি কিডনির রোগে একসময় প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যায়।
প্রস্রাবে রক্তের উপস্থিতি
পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করার পরও যদি প্রস্রাবের রং গাঢ় থাকে, সেটা প্রস্রাবে রক্ত বের হওয়ার কারণে হতে পারে। এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। স্বাস্থ্যকর কিডনি সাধারণত রক্ত থেকে বর্জ্য ফিল্টার করার সময় শরীরের রক্তের কোষগুলো আলাদা করে রাখে। কিন্তু যখন কিডনির ফিল্টারগুলো (গ্লোমেরুলার বেইজমেন্ট মেমব্রেন) ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখন এই রক্তকণিকাগুলো প্রস্রাবের মধ্যে আসতে শুরু করে। কিডনি রোগ ছাড়াও প্রস্রাবে রক্ত আসা যেকোনো টিউমার, কিডনিতে পাথর বা সংক্রমণের নির্দেশক হতে পারে।
প্রস্রাবে ফেনা হওয়া
কিডনি সাধারণত ফিল্টার করে প্রয়োজনীয় আমিষ শরীরে ধরে রাখে। ডিমের সাদা অংশ ফেটালে যে রকম ফেনা তৈরি হয়, প্রস্রাবে সেই রকম ফেনার উপস্থিতি কিডনি রোগের আশঙ্কা তৈরি করে। এই ফেনার উপস্থিতি মানে হলো কিডনি দিয়ে আমিষ (এলবুমিন) বের হয়ে যাচ্ছে। কিডনির কাঠামোর ক্ষতির কারণে এমন হয়।
শরীরের বিভিন্ন অংশ ফুলে যাওয়া
শরীর থেকে প্রস্রাবের মাধ্যমে আমিষ বের হয়ে গেলে রক্ত তরল ধরে রাখতে পারে না। ফলে সেই তরল কোষের ফাঁকে ফাঁকে জমা হয়ে ফোলা ভাব তৈরি করে; বিশেষ করে সকালবেলা পায়ের পাতা, মুখমণ্ডল ও চোখের চারপাশে ফুলে থাকা এর লক্ষণ হতে পারে।
ক্লান্তি, অবসাদ ও অমনোযোগিতা
কিডনির কার্যকারিতা মারাত্মকভাবে কমে যাওয়ার ফলে রক্তে টক্সিন ও বর্জ্য পদার্থ জমা হতে পারে। এতে ক্লান্তি ও অবসাদ বোধ হতে পারে। এ অবস্থা কোনো কাজে মনোনিবেশ করা কঠিন করে তুলতে পারে।
রক্তস্বল্পতা
কিডনির রোগের কারণে বোনম্যারো ক্ষতিগ্রস্ত হয়, রক্ত উৎপাদনের প্রয়োজনীয় হরমোন কমে যায়। ফলে দেখা দেয় রক্তশূন্যতা। দুর্বলতা ও বমি ভাব রক্তশূন্যতার লক্ষণ।
ঘুমের সমস্যা
যখন কিডনি সঠিকভাবে শরীরের তরল পদার্থ ফিল্টার করতে পারে না, তখন বিষাক্ত পদার্থ প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে রক্তে থেকে যায়। এটি ঘুমাতে অসুবিধা করতে পারে। স্থূলতা ও দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের মধ্যেও একটি যোগসূত্র রয়েছে। সুস্থ মানুষের তুলনায় দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে স্লিপ অ্যাপনিয়া বেশি দেখা যায়—ঘুমের মধ্যে নাক ডাকা যার অন্যতম লক্ষণ।
শুষ্ক ত্বক ও চুলকানি
শুষ্ক ত্বক ও চুলকানি খনিজ লবণের অসামঞ্জস্য এবং হাড়ের রোগের লক্ষণ হতে পারে, যা প্রায়ই দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগের লক্ষণ। যখন কিডনি আর রক্তে খনিজ এবং পুষ্টির সঠিক ভারসাম্য রাখতে অক্ষম হয়, তখন তা ত্বকের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।
ক্ষুধামান্দ্য
শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ বের না হলে সেগুলোর কারণে যেসব উপসর্গ তৈরি হয়, এর মধ্যে অন্যতম হলো ক্ষুধামান্দ্য।
মাংসপেশির ক্র্যাম্প
কিডনি শরীরে ক্যালসিয়াম আর ফসফেটের ভারসাম্য বজায় রাখে। রোগের কারণে এগুলোর ভারসাম্য ব্যাহত হলে মাসল ক্র্যাম্প দেখা দিতে পারে।
এই লক্ষণগুলো অন্য অনেক রোগের কারণেও হতে পারে। কিন্তু এর অবজ্ঞা করলে পরে এগুলো অনেক বড় কিডনি রোগে রূপান্তরিত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। তাই এসব লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া দরকার।
ডা. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, এমবিবিএস, বিসিএস (স্বাস্থ্য), রেসিডেন্ট, নেফ্রোলজি বিভাগ,ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
সুস্থভাবে জীবনযাপন করার জন্য দেহের পুষ্টির চাহিদা মেটাতে হয়। সাধারণত পুষ্টির কথা ভাবলে মনে করি সবটুকুই আমার খাদ্য থেকেই অর্জন করি। তবে এই ধারণাটি ভুল বললেন বিজ্ঞানীরা। নতুন গবেষণায় বলা যায়, মানুষ কিছু পুষ্টি বায়ু থেকেও শোষণ করতে পারে!
৩ দিন আগেবিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষকে প্রভাবিত করে উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন। হৃদরোগ, স্ট্রোক, কিডনির ক্ষতি এবং দৃষ্টি শক্তিসহ বেশ কিছু গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার প্রধান ঝুঁকির কারণ এটি। এই ধরনের ঝুঁকি কমানোর জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা ও বিভিন্ন ধরনের ওষুধ সেবনের পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। তবে সম্প্রতি যুক্তরাষ
৪ দিন আগেডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ১ হাজার ৩৮৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে আজ রোববার পর্যন্ত এ রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলো ৭৯ হাজার ৯৮৪ জন। মারা গেছে আরও আটজন।
৫ দিন আগেএমন সময়ে এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হলো, যখন ইংল্যান্ডে একটি লক্ষ্যভিত্তিক ফুসফুস স্বাস্থ্য পরীক্ষা কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। এই কর্মসূচির লক্ষ্য ২০২৫ সালের মার্চের মধ্যে সম্ভাব্য ৪০ শতাংশ ব্যক্তিকে স্ক্রিনিং করা এবং ২০৩০ সালের মধ্যে সবাইকে এর আওতায় আনা।
৬ দিন আগে