বাংলাদেশে ডেঙ্গু টিকার ট্রায়ালে আশাব্যঞ্জক ফলাফল: যুক্তরাষ্ট্র-আইসিডিডিআরবির গবেষণা

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৯: ২৯
Thumbnail image

দেশে একটি ডেঙ্গু টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সম্পন্ন হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ভারমন্টের (ইউভিএম) লার্নার কলেজ অব মেডিসিন এবং আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) গবেষকদের পরিচালিত এই ট্রায়ালে আশাব্যঞ্জক ফলাফল মিলেছে। আশা করা হচ্ছে, সম্প্রতি প্রায় মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া মশাবাহিত এই মারাত্মক ভাইরাসজনিত জ্বরের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এই টিকা কার্যকর সুরক্ষা দেবে। 

এই ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ফলাফল বিজ্ঞান সাময়িকী দ্য ল্যানসেট ইনফেকশাস ডিজিজেসে ২৭ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হয়েছে। 

টেট্রাভ্যালেন্ট ডেঙ্গু ভ্যাকসিন টিভি ০০৫-এর একক ডোজের মূল্যায়ন করা ছিল গবেষকদের উদ্দেশ্য। তাঁরা দেখেছেন, এই টিকা শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য নিরাপদ এবং এটি ডেঙ্গু ভাইরাসের বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রতিরোধ সক্ষমতা প্রদর্শন করে। যেখানে বর্তমানে তরল ব্যবস্থাপনা (শরীরে পানির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ) এবং উপসর্গ নিয়ন্ত্রণই ডেঙ্গুর একমাত্র সহজলভ্য চিকিৎসা।

আইসিডিডিআরবি এবং ইউভিএমের ভ্যাকসিন টেস্টিং সেন্টারের (ভিটিসি) গবেষকেরা ২০১৫ সালে ‘ডেঙ্গু ইন ঢাকা ইনিশিয়েটিভ (ডিআইডিআই)’ শিরোনামে তাঁদের ট্রায়াল শুরু করেন। ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল এবং ল্যাবরেটরি অবকাঠামো নির্ধারণের পাশাপাশি প্রাথমিকভাবে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের সমীক্ষার কাজটি ২০১৫ সালে আইসিডিডিআরবিতেই সম্পন্ন করা হয়। 

ট্রায়ালে ১ থেকে ৪৯ বছর বয়সী প্রায় ২০০ জন স্বেচ্ছাসেবক অংশ নেন। ২০১৬ থেকে শুরু করে তিন বছরের মধ্যে টিভি ০০৫ টিকা এবং প্লাসিবো (নকল টিকা) পেয়েছেন তাঁরা। টিকা প্রয়োগের পরবর্তী তিন বছর তাঁদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়।

গবেষণায় দেখা গেছে, টিভি ০০৫ গ্রহণের ফলে উল্লেখযোগ্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। টিকা নেওয়ার পরে বেশির ভাগ স্বেচ্ছাসেবীর মধ্যে ডেঙ্গুর চারটি সেরোটাইপের (ডেঙ্গু ভাইরাসের ধরন) অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে। এর মধ্যে যারা আগে ডেঙ্গু ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছিলেন, তাঁদের শরীরে অ্যান্টিবডির পরিমাণ ছিল বেশি। তবে যাঁরা পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার আগে ডেঙ্গু আক্রান্ত হননি, তাঁদের ক্ষেত্রেও যথেষ্ট প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে উঠতে দেখা গেছে। 

এই পর্যবেক্ষণ থেকে গবেষকেরা বলছেন, টিভি ০০৫ ডেঙ্গু ভ্যাকসিন স্থানীয় মানুষের মধ্যে ব্যাপক হারে প্রয়োগযোগ্যতার কাছাকাছি অবস্থানে নিয়ে গেছে এই তথ্য-উপাত্ত। পাশাপাশি বর্তমানে চলমান তৃতীয় ধাপের কার্যকারিতা পরীক্ষার পক্ষে সমর্থন জুগিয়েছে। 

ইউভিএম ভিটিসি ২০০৯ সাল থেকে ইউএস ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ (এনআইএইচ) উদ্ভাবিত ডেঙ্গু ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা মূল্যায়ন করছে। 

আইসিডিডিআরবি বলছে, ভারত ও অন্য দেশেও এই টিকার তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল শুরু হয়েছে। সবকিছু সুষ্ঠুভাবে চললে তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে ডেঙ্গু ভ্যাকসিন বাজারে আসবে। যেখানে বিভিন্ন দেশে ৪২টি ধাপে ভ্যাকসিনটির ট্রায়াল করা হয়েছে। 

এ গবেষণায় তহবিল জোগান দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ইনট্রামুরাল রিসার্চ প্রোগ্রাম এবং জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কারা পরিদর্শক হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

ট্রাম্পের অভিষেক: সি আমন্ত্রণ পেলেও পাননি মোদি, থাকছেন আরও যাঁরা

ট্রাম্পের শপথের আগেই বার্নিকাটসহ তিন কূটনীতিককে পদত্যাগের নির্দেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে: সলিমুল্লাহ খান

সংস্কারের কিছু প্রস্তাবে মনঃক্ষুণ্ন বিএনপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত