Ajker Patrika

যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চীনের প্রত্যাঘাত, ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৪ এপ্রিল ২০২৫, ১৯: ০১
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত শুল্কের পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে চীন যুক্তরাষ্ট্র থেকে নিজ দেশে আমদানি করা সব পণ্যের ওপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে। এই ঘোষণা বিশ্বকে পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্যযুদ্ধের দিকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছে। আজ শুক্রবার চীনের এই ঘোষণার পর বিশ্বজুড়ে শেয়ারবাজারে পতন আরও ত্বরান্বিত হয়েছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের ঘোষণার পর বিশ্বজুড়ে শেয়ারবাজারে লোকসানের পরিমাণ আরও বেড়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজার এসঅ্যান্ডপি-৫০০ এর ভবিষ্যৎ সূচক ৩ দশমিক ৭ শতাংশ এবং ইউরোপব্যাপী ‘Stoxx-600’ শেয়ারবাজারে সূচক ৫ দশমিক ২ শতাংশ কমেছে।

চীনা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আজ শুক্রবার বলেছে, ট্রাম্পের তরফ থেকে বেইজিংয়ের ওপর আরোপ করা সর্বশেষ শুল্কের সমান এই শুল্ক যুক্তরাষ্ট্র থেকে সব আমদানি করা পণ্যের ওপর ধার্য করা হবে; যা কার্যকর হবে ১০ এপ্রিল থেকে। আমেরিকার পাল্টাপাল্টি শুল্ক কার্যকর হওয়ার এক দিন পর এর ঘোষণা এল।

গত সপ্তাহে চীনা পণ্যের ওপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন ট্রাম্প। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা চীনা পণ্যের ওপর মোট শুল্ক ৬০ শতাংশের বেশি হবে। বেইজিং আগে এই স্তরের শুল্ককে ‘সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি’ হিসেবে বিবেচনা করলেও নতুন মার্কিন শুল্ককে ‘সাধারণ একতরফা ধমকিপূর্ণ পদক্ষেপ’ বলে নিন্দা করেছে।

দেশটি আরও বলেছে, গত সপ্তাহে আরোপ করা মার্কিন শুল্ক ‘আন্তর্জাতিক বাণিজ্যরীতির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয় এবং চীনের বৈধ অধিকার ও স্বার্থের মারাত্মক ক্ষতি করবে।’ বেইজিংয়ের এই সর্বশেষ পদক্ষেপের ফলে মার্কিন কৃষি রপ্তানি; বিশেষ করে সয়াবিন, গম ও ভুট্টা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ ছাড়া চীন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফার্মাসিউটিক্যালস পণ্য, অপরিশোধিত তেল, পেট্রোলিয়াম গ্যাস এবং তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসেরও একটি গুরুত্বপূর্ণ আমদানিকারক দেশ।

চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের কাছে এই বাণিজ্যযুদ্ধ এমন এক স্পর্শকাতর সময়ে এসেছে, যখন তিনি নিজ দেশে আবাসন খাতে মন্দা ও মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস মোকাবিলায় বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির চালিকা শক্তি হিসেবে রপ্তানির ওপর নির্ভর করছেন।

এদিকে বিশ্বের বিভিন্ন বাণিজ্য অংশীদারদের ওপর ট্রাম্পের কঠোর শুল্ক আরোপের পদক্ষেপ শেয়ারবাজারকে বিপর্যস্ত করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ওয়াল স্ট্রিট শেয়ারবাজার থেকে প্রায় আড়াই ট্রিলিয়ন ডলার মূলধন উধাও হয়েছে এবং ডলার ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ার পর যে দর অর্জন করেছিল, তার পুরোটাই হারিয়েছে।

শুক্রবার দরপতন অব্যাহত থাকায় ফিন্যান্সিয়াল টাইম স্টক এক্সচেঞ্জ-১০০ ৪ শতাংশ এবং জার্মানির ডিএএক্স ৫ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে। বিনিয়োগকারীরা মার্কিন ট্রেজারি বন্ডের দিকে ঝুঁকেছে। ফলে দিনের শুরুতে লভ্যাংশ শূন্য দশমিক ২ শতাংশ পয়েন্টের বেশি কমে ৩ দশমিক ৯ শতাংশের নিচে নেমে আসে, যা অক্টোবরের শুরুর দিকের পর সর্বনিম্ন।

ট্রাম্পের পাল্টাপাল্টি শুল্কের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য বেইজিং। চলতি বছরের শুরুতে এরই মধ্যে তিনি চীনের ওপর ২০ শতাংশের আলাদা শুল্ক আরোপ করেছিলেন। বাজার বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান কন্ট্রোল রিস্কসের চীনবিষয়ক বিশ্লেষণের প্রধান অ্যান্ড্রু গিলহোম বলেন, চীনের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত এবং এরই মধ্যে আরোপিত শুল্কের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের পালটা জবাব দিলে বেইজিং ‘বড় ধরনের আত্মঘাতী ক্ষতির’ শিকার হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত