দক্ষিণ কোরিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত: ১৮১ আরোহীর দুজন ছাড়া সবাই নিহত

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০: ৪৪
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১: ২২
মুয়ান বিমানবন্দরে দুর্ঘটনার পর আগুন ধরে যাওয়া সেই বিমান। ছবি: ইয়ুনহাপ

দক্ষিণ কোরিয়ার মুয়ান বিমানবন্দরে একটি যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ১৭৯ জন নিহত হয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত বিমানটি থেকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে মাত্র দুজনকে। স্থানীয় সময় আজ রোববার সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইয়ুনহাপের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

স্থানীয় সময় আজ রোববার সকালে একটি যাত্রীবাহী বিমানবন্দরের রানওয়ে থেকে ছিটকে গিয়ে পাশের দেয়ালে আঘাত হানলে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জেজু এয়ারের ফ্লাইট ৭ সি-২২১৬ স্থানীয় সময় আজ রোববার সকাল ৯টা ৭ মিনিটে মুয়ান বিমানবন্দরে অবতরণের সময় এ দুর্ঘটনার শিকার হয়। উদ্ধারকারীরা দুজনকে জীবিত উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন।

বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ার পর বিমানটি দেয়ালে আঘাত করলে সঙ্গে সঙ্গেই আগুন ধরে যায়। স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, বিমানটির ল্যান্ডিং গিয়ার কাজ না করায় এটি রানওয়ে বরাবর অনেক দূর পর্যন্ত ছেঁচড়ে যায় এবং দেয়ালে আঘাতের ফলে বিমানটিতে আগুন ধরে যায় এবং এর ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন দিকে।

ফ্লাইট ট্র্যাকিংবিষয়ক ওয়েবসাইট ফ্লাইটরাডার-২৪ জানিয়েছে, বিমানটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের। বোয়িং কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। এদিকে, বিমানটির মালিক সংস্থা জেজু এয়ারের মুখপাত্র জানিয়েছেন, তাঁরা দুর্ঘটনার কারণ তদন্ত করছেন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন।

এদিকে, দুর্ঘটনার পর দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট চোই সুং-মোক জরুরি ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁর কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছেন এবং সর্বাত্মক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিমানের ধ্বংসাবশেষ থেকে ধোঁয়া ও আগুন বের হতে দেখা গেছে। ফায়ার ব্রিগেড ও উদ্ধারকর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং উদ্ধারকাজ শুরু করে। দুর্ঘটনার কারণ এখনো পরিষ্কার নয়। তবে তদন্তকারীরা ধারণা করছেন, ল্যান্ডিং গিয়ার কাজ না করার কারণে এটি ঘটেছে। বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের বিমানের পূর্বে এ ধরনের যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা গেছে কি না, তা-ও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে এই দুর্ঘটনা ঘটল। শুক্রবার নতুন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করা চোই সুং-মোক এই প্রথম এমন একটি জাতীয় সংকট মোকাবিলা করছেন। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। উদ্ধারকাজ শেষ হলে নিহতদের পরিচয় নিশ্চিত করে তাঁদের পরিবারের কাছে খবর দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

এদিকে, দুর্ঘটনার পর দক্ষিণ কোরিয়ার সবচেয়ে কম খরচের বিমান পরিবহন সংস্থা জেজু এয়ার ক্ষমা চেয়েছে। তারা জানিয়েছে, তারা এই দুর্ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট সবাইকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে। এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, ‘জেজু এয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে আমরা এ দুর্ঘটনার জন্য গভীর দুঃখ প্রকাশ করছি। আমরা এ ঘটনায় সম্ভাব্য সবকিছু করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। উদ্বেগের কারণ হওয়ায় আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২১ লাখ ডলার পাচারের তথ্য না দিয়ে জরিমানা গুনল ব্র্যাক ব্যাংক

চীনের পর এবার ব্রহ্মপুত্রে বাঁধ দিতে চায় ভারতও, সংকটে পড়বে ভাটির বাস্তুতন্ত্র

‘৫৪ বছর আগের একটি সংবিধান আমাদের ভাবনাকে থামিয়ে দিবে—এটা মানতে রাজি না’

নিষিদ্ধ না হলে আ.লীগের নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা নেই: সিইসি

জানি না ৩১ ডিসেম্বর ছাত্ররা কী ঘোষণা দেবে: ফরহাদ মজহার

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত