পশ্চিমবঙ্গকে কেটে ছোট করার প্রস্তাব রাজ্য বিজেপির

কলকাতা সংবাদদাতা
Thumbnail image

চলতি বছরের ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে ৪২টি আসনের মধ্যে ১২টি পেয়েছে বিজেপি। পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণবঙ্গ বিজেপির থেকে মুখ ফেরালেও উত্তরবঙ্গের মানুষ বিজেপির থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়নি। উত্তরবঙ্গে ৮ আসনে ৬ আসনে জয়ী হয়েছেন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। এবার সেই উত্তরবঙ্গকে উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে যুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছেন বালুরঘাটের এমপি ও রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।

গত বুধবার (২৪ জুলাই) রাজ্য বিজেপির সভাপতি ও বালুরঘাটের দুই বারের এমপি সুকান্ত মজুমদার জানান, তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে একটি প্রস্তাব জমা দিয়ে এসেছেন। তাতে উত্তরবঙ্গের ৮ জেলাকে উত্তর-পূর্ব উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের অন্তর্ভুক্ত করার কথা রয়েছে। 

রাজ্য বিজেপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার আরও বলেন, ‘আমার মনে হয়, রাজ্য সরকারের এতে আপত্তি থাকবে না। রাজ্য সরকারের সহযোগিতা আমরা পাব।’  

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে এই প্রস্তাব দেওয়ার প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘এটা বাস্তবায়িত হলে উত্তরবঙ্গে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা অনেক বেশি পরিমাণে পাওয়া যাবে। এলাকার উন্নয়ন হবে।’ 

এই ঘটনার পরেই পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এই প্রস্তাব দেওয়ার পরেই রাজ্যভাগের চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। 

তৃণমূল কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা ও এমপি সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় সুকান্ত মজুমদারের এই বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করে বলেছেন, ‘বাংলাকে বিভাজন করার প্রচেষ্টা প্রথম থেকেই রুখেছি। সুকান্তের এই বক্তব্যের সমর্থন করি না ও প্রশ্রয় দিই না। তীব্রভাবে প্রতিবাদ করছি।’ 

সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যর পরেই তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার এমপি সুখেন্দু শেখর রায় দাবি করেছেন, ‘বালুরঘাটের দুই বারের এমপি ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার একটি বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির কাছে প্রস্তাব দিয়েছেন, সেখানে বাংলার উত্তরাংশের সঙ্গে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোর অনেক মিল রয়েছে দাবি করে উন্নয়নের ক্ষেত্রে কাজের সুবিধা হবে বলেও লিখেছেন। এই দাবিকে তীব্রভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’ 

বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের বিরুদ্ধে সরাসরি পশ্চিমবঙ্গ ভাগের চক্রান্ত করার অভিযোগ এনেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ সদস্য সুখেন্দু শেখর রায়। 

সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও সুখেন্দু শেখর রায়ের পর বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাবেক রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুনাল ঘোষ। তিনি বলেন, উত্তরবঙ্গকে পৃথক প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদার যে মন্তব্য করেন, তা মানুষকে উত্তেজিত করার প্রচেষ্টা। উত্তর বা দক্ষিণ কোনো বঙ্গের মানুষের বন্ধুই সুকান্ত মজুমদার নন। 

অন্যদিকে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র ও রাজ্যসভার এমপি শমীক ভট্টাচার্য পাল্টা বলেছেন, ‘আমরা বাংলা ভাগের পক্ষে নই। এটা নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী কাঞ্চন কন্যা তৈরি করেছেন। কিন্তু উত্তরবঙ্গে বাজেট বরাদ্দে চিঁড়ে ভেজে না। বিজেপি মনে করে সীমারেখা অটুট রেখে উন্নয়নই সম্ভব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত