মূল্যস্ফীতি নিয়ে ইরানে একটি ‘বিরল ধর্মঘট’ ছড়িয়ে পড়ছে

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১: ১৬
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১: ২৫
Thumbnail image
তেহরানের একটি বাজারে বিক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা। ছবি: ইরান ইন্টারন্যাশনাল

ইরানের রাজধানী তেহরানের ঐতিহাসিক বাজারে আজ রোববার একটি ‘বিরল ধর্মঘট’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশের ব্যাপক মুদ্রাস্ফীতি এবং বিদেশি মুদ্রার মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা এই কর্মসূচির ডাক দেন। পরে এই প্রতিবাদ অন্যান্য বাণিজ্যিক এলাকাতেও ছড়িয়ে পড়ে।

ইরান ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, ইরানের বাণিজ্যিক কেন্দ্রগুলোতে এমন অস্থিরতা দেশটির অর্থনৈতিক দুরবস্থাকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে। ১৯৭৯ সালে ইরানের বাজারগুলোতে এই ধরনের প্রতিবাদই দেশটিতে ইসলামিক বিপ্লবের সূচনা করেছিল এবং রাজাকে ক্ষমতাচ্যুত করে বর্তমান ইসলামপন্থী সরকার ক্ষমতা দখল করেছিল।

জানা গেছে, এবারের ধর্মঘটটি তেহরানের খোরদাদ এলাকায় জুতা বিক্রেতাদের মাধ্যমে শুরু হয়। পরে অন্য ব্যবসায়ীদের মধ্যেও বিক্ষোভ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত একাধিক ভিডিওতে দেখা গেছে, বাজারের বিক্রেতারা স্লোগান দিচ্ছেন ‘ভয় পেয়ো না, বন্ধ করো’ কিংবা ‘বীর ব্যবসায়ীদের সমর্থন, সমর্থন’।

প্রতিবাদে যোগ দেওয়া এক কাপড়ের ব্যবসায়ী বলেন, ‘ডলার এখন ৮ লাখ ১০ হাজার রিয়াল ছাড়িয়ে গেছে। ফলে আমাদের খরচ আকাশছোঁয়া হয়ে গেছে। বহু কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে এবং যাঁরা এখনো চালু রেখেছেন, তাঁরা বাজারের এমন মন্দা পরিস্থিতিতে পণ্য বিক্রি করতে সংগ্রাম করছেন।’

জানা গেছে, প্রতিবাদগুলো দ্রুত ইরানের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক এলাকা, যেমন—আব্বাসাবাদ বাজার এবং বাগে সেপাহসালারেও ছড়িয়ে পড়ে। বিপুলসংখ্যক কাপড় এবং জুতা বিক্রেতারা রয়েছেন এই বাজারগুলোতে।

তেহরানের গিল্ড চেম্বারের প্রধান হামিদরেজা রাস্তগার বলেন, ‘উৎপাদকেরা আতঙ্কিত যে পণ্যের দাম সাধারণ গ্রাহকদের নাগালের বাইরে চলে যাবে।’

ইরানি রিয়ালের তীব্র অবমূল্যায়ন দেশটির অর্থনীতির ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। ব্যবসায়ীদের জন্য এটি একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।

এ অবস্থায় ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদ দমন করতে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয় এবং দিনের শেষ ভাগে বিক্ষোভগুলো শান্ত হয়ে আসে বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, ১৯৭৯ সালে ইসলামি প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইরানের অর্থনীতি বর্তমানে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে। মার্কিন নেতৃত্বাধীন নিষেধাজ্ঞাগুলো, পরমাণু কর্মসূচি, সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর প্রতি সমর্থন এবং রাশিয়ার ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য অস্ত্র সরবরাহ দেশটির অর্থনীতির ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত