আনিকা জীনাত, ঢাকা
একই সঙ্গে আনন্দ, রহস্য, রোমাঞ্চ আর বিভিন্ন রকমের অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হওয়া শুধু ভ্রমণেই সম্ভব। নিজের গণ্ডির বাইরের প্রকৃতি, মানুষ, সংস্কৃতি দেখা ও বোঝা যায় শুধু ভ্রমণে গেলেই। সম্ভবত সে জন্যই ভ্রমণ বিষয়টিকে ‘জীবনবীক্ষা’র আকর বলেছেন অনেক বড় মানুষ। অনেকেই বলেছেন, প্রতিবছর অন্তত একবার নতুন কোথাও ঘুরতে যাওয়া উচিত প্রতিটি মানুষের।
এই ঘোরাঘুরির অনেক ভাগ আছে। তার মধ্যে একটি হলো খাদ্যভ্রমণ। ব্যাপারটি খাবারের জন্য ঘোরা, তেমন সাধারণ বা সরল বিষয় নয়। ডেভিড রোকোকে যাঁরা চেনেন, তাঁদের জন্য খাদ্যভ্রমণ বিষয়টি বোঝা খানিক সহজ। জানিয়ে রাখি, ফক্স লাইফ টেলিভিশন চ্যানেলে ‘ডেভিড রোকো ডলচে ইতালিয়া’ নামের একটি খাবারবিষয়ক অনুষ্ঠান প্রচারিত হয়। সেখানে খাবারের পাশাপাশি ভ্রমণ চলে। খাবারের জন্য নির্দিষ্ট একটি জায়গায় যাওয়া, রাঁধুনির সঙ্গে রান্না বিষয়ে আলাপ, তারপর মনোরম কোনো জায়গায় বসে লাঞ্চ বা ডিনার সেরে নেওয়া—এ নিয়েই তৈরি ‘ডেভিড রোকো ডলচে ইতালিয়া’। খাদ্য ভ্রমণে এর সঙ্গে আরও কিছু জিনিসপত্র জড়িত।
খাদ্য ভ্রমণ কেন
পৃথিবীর প্রতিটি অঞ্চলের খাবার ভিন্ন ভিন্ন। সমতলের খাবার এক রকম আবার পাহাড়ের খাবার আরেক রকম। অন্যদিকে সামুদ্রিক এলাকার খাবারও আরেক রকম। প্রতিটি অঞ্চলের খাবার ভিন্ন ভিন্ন হয় তার ভৌগোলিক অবস্থার কারণে। ভূগোলের ওপর ভর করে গড়ে ওঠে একেক অঞ্চলের মানুষের কৃষিবিজ্ঞান, খাবারের সংস্কৃতি, রান্নার রেসিপি, পরিবেশনের রীতি, খাবার ধরন প্রভৃতি। খাদ্য ভ্রমণ বা ফুড ট্যুরিজম মানে তাই প্লেটভর্তি খাবার খাওয়া নয়; বরং খাবারের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা নির্দিষ্ট অঞ্চলের সংস্কৃতি জানা ও তার সঙ্গে একাত্ম হওয়া।
রাঙামাটিতে বেড়াতে গেলে খুঁজে খুঁজে সবাই এমন রেস্তোরাঁয় যেতে চেষ্টা করেন, যেখানে ব্যাম্বু চিকেন পাওয়া যায়। এই খাবার না খেলে জীবন বৃথা হবে না। তবে যদি না খেয়ে ফিরে আসেন, আসল ব্যাম্বু চিকেন কীভাবে তৈরি হয়, তা জানতে পারবেন না। সেই সঙ্গে অজানা থেকে যাবে ব্যাম্বু চিকেনের সঙ্গে পাহাড়ের মানুষের জীবন ও সংস্কৃতির অদ্ভুত রসায়ন। অজানা থেকে যাবে পাহাড়ের জীবনের সঙ্গে বাঁশের গভীর সম্পর্কের কথা। আবার ধরুন, দেশের দক্ষিণাঞ্চলে ঘুরতে গেলেন। সেখানকার খাবারে পাবেন প্রচুর সামুদ্রিক ও তাজা মাছ। যেগুলো হয়তো দেশের উত্তরাঞ্চলে পাবেন-ই না। পাবেন চুইঝালের ব্যবহার। আবার উত্তরাঞ্চলে গেলে সে অঞ্চলের খাবারে পাবেন প্রচুর শুঁটকির ব্যবহার। বরেন্দ্র অঞ্চল তথা রাজশাহীতে গেলে পাবেন মাষকলাইয়ের আটার রুটি, মাষকলাইয়ের বড়ি। কিংবা সিলেটে গেলে সে অঞ্চলের খাবারে পাবেন সাতকড়া বা কমলার খোসার স্বাদ। এর কারণই হলো, প্রতিটি অঞ্চলের ভূপ্রকৃতি সে অঞ্চলের মানুষের জন্য আলাদা আলাদা জীবনযাপন প্রণালি ও খাবার তৈরি করে রেখেছে। খাদ্য ভ্রমণে গিয়ে আপনি মানুষের জীবনের সঙ্গে খাবারের সম্পর্ক বিষয়টিকে খুব কাছ থেকে বুঝতে পারবেন। এটাই এ ধরনের ভ্রমণের মূল উদ্দেশ্য।
কোনো অঞ্চলের বিশেষ খাবার খেতে হলে অবশ্যই আপনাকে কিছু তথ্য বের করতে হবে। ইন্টারনেট ঘেঁটে অথবা স্থানীয় মানুষের কাছ থেকে জেনে নিয়ে তারপর যেতে হবে। পরিচিতদের মধ্যে যাঁরা খেতে গেছেন, তাঁদের পরামর্শও শুনতে পারেন। আজ থেকে ২০ বছর আগেও এসব সুবিধা ছিল না। লোকমুখে শুনে শুনে পথ চলাই ছিল বিশাল কঠিন কাজ। এখন ফোন ঘেঁটেই বের করা যায় কোন জায়গার কোন খাবার বিখ্যাত, সেখানে কীভাবে যাওয়া যায় এবং খাবারের দোকানের আশপাশে দেখার মতো কী আছে।
কোথায় যেতে পারেন
আগেই বলেছি, দেশের তো বটেই, পৃথিবীর প্রতিটি এলাকার খাবারে আছে ভিন্নতা। দেশের সিলেটের খাবারের সঙ্গে চট্টগ্রামের খাবারের মিল সামান্যই। উত্তরাঞ্চলের খাবারের সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের খাবারের মিল তেমন নেই। আবার ঢাকার খাবারের সঙ্গে রাজশাহীর খাবারের তফাত আছে বিভিন্ন দিক দিয়েই। আবার ধরুন, ভারতের মতো বিশাল দেশে এ পার্থক্য ও বৈচিত্র্য আরও বেশি। এক পশ্চিমবঙ্গেই কয়েকটি ধরন পাওয়া যাবে খাবারের। বীরভূমের খাবারের সঙ্গে কৃষ্ণনগরের খাবারের মিল সামান্যই। আবার সেখানকার খাবারের সঙ্গে কোচবিহারের খাবারের মিল পাবেন না তেমন একটা। ফলে ভ্রমণের দ্বার আপনার সামনে অবারিত। শুধু খুঁজে নিতে হবে।
খেয়াল রাখতে হবে
এ বিষয়গুলো আসলে সাধারণ জ্ঞানের বিষয়। যেমন, সামুদ্রিক এলাকার খাবারে একটা নোনা স্বাদ থাকবে। এটা মেনে নিতে হবে। থাকবে প্রচুর নারকেল ও নারকেল তেলের ব্যবহার। সেটাও মেনে নিতে হবে। পাহাড়ে মসলার ব্যবহার থাকবে খুবই কম। হার্বের ব্যবহার বেশি। এভাবে যখন যে অঞ্চলে যাবেন, সে অঞ্চলের ভূপ্রাকৃতিক অবস্থাটা জেনে নেওয়ার চেষ্টা করবেন আগে থেকে। এখন প্রচুর বইপত্রও পাওয়া যায়। সেগুলোও সংগ্রহ করতে পারেন।
যা করবেন না
একই সঙ্গে আনন্দ, রহস্য, রোমাঞ্চ আর বিভিন্ন রকমের অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হওয়া শুধু ভ্রমণেই সম্ভব। নিজের গণ্ডির বাইরের প্রকৃতি, মানুষ, সংস্কৃতি দেখা ও বোঝা যায় শুধু ভ্রমণে গেলেই। সম্ভবত সে জন্যই ভ্রমণ বিষয়টিকে ‘জীবনবীক্ষা’র আকর বলেছেন অনেক বড় মানুষ। অনেকেই বলেছেন, প্রতিবছর অন্তত একবার নতুন কোথাও ঘুরতে যাওয়া উচিত প্রতিটি মানুষের।
এই ঘোরাঘুরির অনেক ভাগ আছে। তার মধ্যে একটি হলো খাদ্যভ্রমণ। ব্যাপারটি খাবারের জন্য ঘোরা, তেমন সাধারণ বা সরল বিষয় নয়। ডেভিড রোকোকে যাঁরা চেনেন, তাঁদের জন্য খাদ্যভ্রমণ বিষয়টি বোঝা খানিক সহজ। জানিয়ে রাখি, ফক্স লাইফ টেলিভিশন চ্যানেলে ‘ডেভিড রোকো ডলচে ইতালিয়া’ নামের একটি খাবারবিষয়ক অনুষ্ঠান প্রচারিত হয়। সেখানে খাবারের পাশাপাশি ভ্রমণ চলে। খাবারের জন্য নির্দিষ্ট একটি জায়গায় যাওয়া, রাঁধুনির সঙ্গে রান্না বিষয়ে আলাপ, তারপর মনোরম কোনো জায়গায় বসে লাঞ্চ বা ডিনার সেরে নেওয়া—এ নিয়েই তৈরি ‘ডেভিড রোকো ডলচে ইতালিয়া’। খাদ্য ভ্রমণে এর সঙ্গে আরও কিছু জিনিসপত্র জড়িত।
খাদ্য ভ্রমণ কেন
পৃথিবীর প্রতিটি অঞ্চলের খাবার ভিন্ন ভিন্ন। সমতলের খাবার এক রকম আবার পাহাড়ের খাবার আরেক রকম। অন্যদিকে সামুদ্রিক এলাকার খাবারও আরেক রকম। প্রতিটি অঞ্চলের খাবার ভিন্ন ভিন্ন হয় তার ভৌগোলিক অবস্থার কারণে। ভূগোলের ওপর ভর করে গড়ে ওঠে একেক অঞ্চলের মানুষের কৃষিবিজ্ঞান, খাবারের সংস্কৃতি, রান্নার রেসিপি, পরিবেশনের রীতি, খাবার ধরন প্রভৃতি। খাদ্য ভ্রমণ বা ফুড ট্যুরিজম মানে তাই প্লেটভর্তি খাবার খাওয়া নয়; বরং খাবারের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা নির্দিষ্ট অঞ্চলের সংস্কৃতি জানা ও তার সঙ্গে একাত্ম হওয়া।
রাঙামাটিতে বেড়াতে গেলে খুঁজে খুঁজে সবাই এমন রেস্তোরাঁয় যেতে চেষ্টা করেন, যেখানে ব্যাম্বু চিকেন পাওয়া যায়। এই খাবার না খেলে জীবন বৃথা হবে না। তবে যদি না খেয়ে ফিরে আসেন, আসল ব্যাম্বু চিকেন কীভাবে তৈরি হয়, তা জানতে পারবেন না। সেই সঙ্গে অজানা থেকে যাবে ব্যাম্বু চিকেনের সঙ্গে পাহাড়ের মানুষের জীবন ও সংস্কৃতির অদ্ভুত রসায়ন। অজানা থেকে যাবে পাহাড়ের জীবনের সঙ্গে বাঁশের গভীর সম্পর্কের কথা। আবার ধরুন, দেশের দক্ষিণাঞ্চলে ঘুরতে গেলেন। সেখানকার খাবারে পাবেন প্রচুর সামুদ্রিক ও তাজা মাছ। যেগুলো হয়তো দেশের উত্তরাঞ্চলে পাবেন-ই না। পাবেন চুইঝালের ব্যবহার। আবার উত্তরাঞ্চলে গেলে সে অঞ্চলের খাবারে পাবেন প্রচুর শুঁটকির ব্যবহার। বরেন্দ্র অঞ্চল তথা রাজশাহীতে গেলে পাবেন মাষকলাইয়ের আটার রুটি, মাষকলাইয়ের বড়ি। কিংবা সিলেটে গেলে সে অঞ্চলের খাবারে পাবেন সাতকড়া বা কমলার খোসার স্বাদ। এর কারণই হলো, প্রতিটি অঞ্চলের ভূপ্রকৃতি সে অঞ্চলের মানুষের জন্য আলাদা আলাদা জীবনযাপন প্রণালি ও খাবার তৈরি করে রেখেছে। খাদ্য ভ্রমণে গিয়ে আপনি মানুষের জীবনের সঙ্গে খাবারের সম্পর্ক বিষয়টিকে খুব কাছ থেকে বুঝতে পারবেন। এটাই এ ধরনের ভ্রমণের মূল উদ্দেশ্য।
কোনো অঞ্চলের বিশেষ খাবার খেতে হলে অবশ্যই আপনাকে কিছু তথ্য বের করতে হবে। ইন্টারনেট ঘেঁটে অথবা স্থানীয় মানুষের কাছ থেকে জেনে নিয়ে তারপর যেতে হবে। পরিচিতদের মধ্যে যাঁরা খেতে গেছেন, তাঁদের পরামর্শও শুনতে পারেন। আজ থেকে ২০ বছর আগেও এসব সুবিধা ছিল না। লোকমুখে শুনে শুনে পথ চলাই ছিল বিশাল কঠিন কাজ। এখন ফোন ঘেঁটেই বের করা যায় কোন জায়গার কোন খাবার বিখ্যাত, সেখানে কীভাবে যাওয়া যায় এবং খাবারের দোকানের আশপাশে দেখার মতো কী আছে।
কোথায় যেতে পারেন
আগেই বলেছি, দেশের তো বটেই, পৃথিবীর প্রতিটি এলাকার খাবারে আছে ভিন্নতা। দেশের সিলেটের খাবারের সঙ্গে চট্টগ্রামের খাবারের মিল সামান্যই। উত্তরাঞ্চলের খাবারের সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের খাবারের মিল তেমন নেই। আবার ঢাকার খাবারের সঙ্গে রাজশাহীর খাবারের তফাত আছে বিভিন্ন দিক দিয়েই। আবার ধরুন, ভারতের মতো বিশাল দেশে এ পার্থক্য ও বৈচিত্র্য আরও বেশি। এক পশ্চিমবঙ্গেই কয়েকটি ধরন পাওয়া যাবে খাবারের। বীরভূমের খাবারের সঙ্গে কৃষ্ণনগরের খাবারের মিল সামান্যই। আবার সেখানকার খাবারের সঙ্গে কোচবিহারের খাবারের মিল পাবেন না তেমন একটা। ফলে ভ্রমণের দ্বার আপনার সামনে অবারিত। শুধু খুঁজে নিতে হবে।
খেয়াল রাখতে হবে
এ বিষয়গুলো আসলে সাধারণ জ্ঞানের বিষয়। যেমন, সামুদ্রিক এলাকার খাবারে একটা নোনা স্বাদ থাকবে। এটা মেনে নিতে হবে। থাকবে প্রচুর নারকেল ও নারকেল তেলের ব্যবহার। সেটাও মেনে নিতে হবে। পাহাড়ে মসলার ব্যবহার থাকবে খুবই কম। হার্বের ব্যবহার বেশি। এভাবে যখন যে অঞ্চলে যাবেন, সে অঞ্চলের ভূপ্রাকৃতিক অবস্থাটা জেনে নেওয়ার চেষ্টা করবেন আগে থেকে। এখন প্রচুর বইপত্রও পাওয়া যায়। সেগুলোও সংগ্রহ করতে পারেন।
যা করবেন না
কর বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে মালদ্বীপের ইনল্যান্ড অ্যাভিনিউ অথোরিটির (এমআইআরএ) মতে, এই করের রাজস্ব দিয়ে মূলত ভেলানা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের (এমএলই) রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নে ব্যয় করা হয়।
৫ ঘণ্টা আগেখাবার মজাদার করতে আমরা সাধারণভাবে তেল-মসলার খুব বাড়াবাড়ি করে ফেলি। সেখান থেকে বাদ যায় না পেঁয়াজ কিংবা রসুন। পেঁয়াজকে কায়দা করে সরিয়ে রাখলেও খাবার মজাদার হতে পারে। তেমনই কিছু রেসিপি...
৩ দিন আগেবাংলা অঞ্চলে মিষ্টিজাতীয় প্রাচীন খাবারগুলোর মধ্যে সন্দেশের নাম আছে একেবারে প্রথম দিকে। সব মিষ্টির কিছু না কিছু বদল হলেও, এর বদল হয়েছে খুবই কম। যশোরের নলেন গুড়ের সন্দেশ, মানিকগঞ্জ বা নাগরপুরের প্যারা সন্দেশ, পাবনার মাছের পেটি সন্দেশ ইত্যাদি কে না খেতে পছন্দ করে!
৩ দিন আগেজীবনানন্দ দাশের কবিতায় ঘুরেফিরে এসেছে দারুচিনি দ্বীপের কথা, তার রহস্যময় শ্যামলিমার কথা, সেই সবুজের গহিনে দিকহারা নাবিকের আশ্রয়-আকাঙ্ক্ষার কথা। এই দারুচিনি দ্বীপ কি আসলে কোনো সমুদ্রঘেরা ভূখণ্ড, নাকি বনলতা সেন নিজেই, তা নিয়ে কবিরা বিতর্ক করুক। আমরা বরং এই দ্বীপের তত্ত্বতালাশ করি।
৩ দিন আগে