বাড়িতেই বাড়ুক ঔষধি গাছ

সানজিদা সামরিন, ঢাকা
আপডেট : ১৪ আগস্ট ২০২১, ১০: ০৮
Thumbnail image

শরীরের সুস্থতা থেকে শুরু করে ত্বক ও চুলের সমস্যা দূর করতে ভারতীয় উপমহাদেশে বিভিন্ন ভেষজ ব্যবহৃত হয়ে আসছে সেই প্রাচীনকাল থেকে। এসব একপাশে রেখে যদি পরিবেশের কথাই ভাবি, তাহলে এসব ঔষধি গাছ বাতাস বিশুদ্ধ রাখতেও সহায়তা করে। বাসার ছোট পরিসরেও যত্নে বেড়ে উঠতে পারে এসব উদ্ভিদ।

তুলসী
ভেষজ গাছের মধ্যে তুলসী সবচেয়ে বেশি পরিচিত। স্বাস্থ্যের জন্য ভালো বলে বাড়ির উঠোনে, বারান্দায় ও ছাদে অনেকেই তুলসীর চারা লাগান। অ্যাংজাইটি, স্ট্রেস, দুর্বলতা, অ্যাজমা, ব্রংকাইটিস, ঠান্ডা ও ফ্লুর জন্য তুলসীগাছের পাতা খুবই উপকারী। তুলসীগাছের জন্য বিশেষ তেমন কোনো পরিচর্যার প্রয়োজন পড়ে না। কেবল নিয়মিত পানি ও সূর্যের আলো পেলেই সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠে এ গাছ। 

অ্যালোভেরা
বহুল পরিচিত ভেষজ গাছের মধ্যে অ্যালোভেরা উল্লেখযোগ্য। অ্যান্টি–অক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ অ্যালোভেরা শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে রোজ অ্যালোভেরা জেল দিয়ে তৈরি শরবত খেলে উপকার পাওয়া যায়। এসব ছাড়াও এতে ‘কুলিং ইফেক্ট’ রয়েছে বলে ত্বক পুড়ে গেলে অ্যালোভেরা জেল লাগালে আরাম পাওয়া যায়। অ্যালোভেরা জেল ত্বক ও চুলের যত্নে বহুল ব্যবহৃত একটি উপাদান। বারান্দায় খুব সহজেই অ্যালোভেরার গাছ রাখা সম্ভব। খুবই কম পানির প্রয়োজন পড়ে এ গাছের জন্য।

নিম
অ্যান্টি–এজিং, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাঙ্গাল গুণ থাকার কারণে নিম ভারতীয় উপমহাদেশে ভীষণ জনপ্রিয় একটি ভেষজ উপাদান। ত্বক পরিচ্ছন্ন রাখতে, বলিরেখা, চুলকানি ও চর্মরোগ সারাতে নিমপাতা বাটার জুড়ি নেই। এ ছাড়া বাতাস বিশুদ্ধ রাখতেও নিম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পেট পরিষ্কার রাখতে নিমপাতা বেটে বড়ি বানিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়। বাড়ির ছাদে বড় ড্রামে নিমগাছ লাগাতে পারেন। উঠোনেও স্বচ্ছন্দে বেড়ে উঠতে পারে উপকারী এই ভেষজ গাছ।

পুদিনা
সালাদ ছাড়াও শরবত ও চায়ে ব্যবহৃত হয় পুদিনা। বদহজম, বমিভাব, মাথাব্যথা, সর্দি, দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে, খুশকি ও উকুন দূর করতে এবং পেশির ব্যথা দূর করতে পুদিনা খুব উপকারী। বুনে দিলে খুব সহজেই টবে বেড়ে ওঠে এই ভেষজ। রোজ সালাদে যোগ করতে রান্নাঘরের জানালার ধারে বা বারান্দায় বুনতে পারেন পুদিনা।

মেথি
পাঁচফোড়নের এক ফোড়ন মেথি। মেথি কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে। এটি টেলে গুঁড়ো করে কৌটায় ভরে ডাইনিংয়ে রাখুন। ভাতের সঙ্গে ১ চা-চামচ মেথি গুঁড়ো মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়। এ ছাড়া মেথি বাটা ত্বক ও চুলের যত্নে ব্যবহৃত হয়। ছাদে মেথিগাছ লাগাতে পারেন। মেথির শাক খেতেও সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। 

শতমূলী
শতমূলীর স্বাস্থ্য উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। এতে রয়েছে আঁশ, ফলেট, ভিটামিন এ, সি ও কে। বাড়তি ওজন কমাতে, হজমশক্তি বাড়াতে ও রক্তচাপ ঠিক রাখতে শতমূলী খাওয়া যেতে পারে। প্রশস্ত ও গভীর পটে শতমূলী লাগানো যায়। খুব সহজে ছাদে লাগাতে পারেন শতমূলী।

গাঁদা
গাঁদা ফুলের গাছ কেবল বাড়ির শোভাবর্ধনই করে না, এটি ভীষণ উপকারী একটি গাছ। শরীরের কোথাও কেটে গেলে গাঁদার পাতা বেঁটে লাগালে রক্ত পড়া বন্ধ হয় ও ক্ষত দ্রুত সারে। এ ছাড়া গাঁদা ফুলের চা নিয়মিত পান করলে মুখের ব্রণ দূর হয়, ত্বক মসৃণ হয়, হজমশক্তি বাড়ে, হাড়ের ক্ষয়রোধ হয় ও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হয়। গাঁদা ফুল রোপণের ভালো সময় ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাস। রোদ, সার ও নিয়মিত পানি প্রয়োজন এই গাছের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত