পাকিস্তানের মেয়েদের শিক্ষায় সহযোগিতা করছেন অটোচালক

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ১৬ মার্চ ২০২৪, ১২: ১৪
আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১৩: ৫৮

সমাজের অনেক সমস্যার মুখে অসহায় বোধ না করে এগিয়ে এলে কত বড় ফল পাওয়া যায়, পাকিস্তানের এক অটোচালক তা দেখিয়ে দিচ্ছেন৷ সেই পাকিস্তানি ভাইজানের কল্যাণে অনেক মেয়ের শিক্ষার পথ সুগম হচ্ছে৷

পেশোয়ার শহরের উপকণ্ঠে পির বালা এলাকায় অটোরিকশা চালান আরাব শাহ৷ এলাকার মেয়েদের শিক্ষার লক্ষ্যে নিজের সময় দিয়ে সাহায্য করেন তিনি; তাদের বিনা মূল্যে পরিবহণের ব্যবস্থা করেন৷ 

নিজের উদ্যোগ সম্পর্কে আরাব বলেন, ‘আমি প্রায় ৯ বছর ধরে বিনা মূল্যে মেয়েদের বাসা থেকে তুলে আবার বাসায় নামিয়ে দেওয়ার পরিষেবা দিয়ে চলেছি৷ আমার পাঁচ বোন আছে৷ পরিবহনের অভাবে তারা স্কুলে যেতে পারেনি৷ অন্য মেয়েরাও শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হোক, আমি সেটা চাই না৷ তাই আমি দুই শতাধিক মেয়ের জন্য এই পরিষেবা দিয়ে আসছি৷ আমার পরিষেবা মেয়েদের উপকার করে আসছে৷’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার সহায়তার কারণে তাদের মধ্যে অনেকে কলেজ, হাইস্কুল এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়েও পড়াশোনা করেছে৷ আমার পরিবহনের কল্যাণে এই মেয়েরা শিক্ষার নাগাল পায়৷ প্রায় সবাই অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের মেয়ে৷ বেশির ভাগই যাতায়াতের খরচের কারণে স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছিল না৷ আমি তাদের স্কুলে ভর্তি করিয়েছি এবং বিনা মূল্যে পরিবহনের সুবিধা দিয়ে আসছি৷’

গোটা অঞ্চলে নিরাপদ ও সঠিক পরিবহনের অভাব মেয়েদের শিক্ষার পথে বড় অন্তরায়৷ পির বালার অনেক মেয়ে বলে, শাহের পরিষেবার কারণেই তারা স্কুলে যেতে পেরেছে৷ যেমন আরজু আহমেদ নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, ‘পরিবহন নিয়ে আমার সমস্যা ছিল৷ কিন্তু এখন ভাইজানের কল্যাণে সমস্যার সমাধান হয়েছে৷ আমার ভাইয়া খুবই উপকারী৷ তিনি না থাকলে আমাদের পক্ষে শিক্ষা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হতো না৷’

নোশিন খানও আরব শাহের প্রতি কৃতজ্ঞ৷ সে বলে, ‘শিক্ষা আমার কাছে সব কিছু৷ আমি ডাক্তার হতে চাই৷ আমি ভাইজানের কাছ গভীরভাবে কৃতজ্ঞ৷ তিনি আমাকে শুধু স্কুলে ভর্তি করান নি, প্রতিদিন আমি যাতে নিরাপদে বাসায় ফিরি, সেটাও নিশ্চিত করেছেন৷ তিনি আমার কাছে আদরের বড় ভাইয়ের মতো৷’

নিজের কাজ ও আন্তরিকতার দৌলতে আরাব শাহ মেয়েদের পরিবারের আস্থা ও শ্রদ্ধা অর্জন করেছেন৷ আরজু আহমেদের বাবা মহাম্মাদ রেহান জানান, ‘আমার তিন মেয়ে৷ একজন সবে প্রাইমারি স্কুল শেষ করেছে৷ আরাব শাহের সহায়তায় সে হাই স্কুলে যাচ্ছে৷ বাকি দুই মেয়ে এখানকার প্রাইমারি স্কুলে পড়ছে৷ আরাব শাহের ভূমিকা বড় ভাইয়ের মতো৷ তার কল্যাণেই আমার মেয়েরা পড়াশোনা চালিয়ে যেতে অনেক সাহায্য পাচ্ছে৷’

পির বালায় এ কাজের জন্য শাহ অনেক সম্মান ও স্বীকৃতি পাচ্ছেন৷ নিজের স্বপ্ন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানে মেয়েরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত৷ গোটা পাকিস্তানে পরিবহ নেটওয়ার্কের সম্প্রসারণ করা আমার লক্ষ্য৷ সব বঞ্চিত শিক্ষার্থীর কাছে সেই পরিষেবা যেন পৌঁছে যায়৷’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আবু সাঈদকে ৪–৫ ঘণ্টা পরে হাসপাতালে নেওয়া হয়—শেখ হাসিনার দাবির সত্যতা কতটুকু

মেট্রোরেল থেকে আমলাদের বিদায়, অগ্রাধিকার প্রকৌশলীদের

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

বিমানবন্দরে সাংবাদিক নূরুল কবীরকে হয়রানির তদন্তের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ৩৫ কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত