জাহীদ রেজা নূর, ঢাকা
পাকিস্তানের প্রথম গণপরিষদের সভায় মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ যে কথা বলেন, তা আমরা আগেই উল্লেখ করেছি। এ দেশের সব ধর্মের মানুষ পাকিস্তানি বলে বিবেচিত হবে এবং ধর্মীয় প্রশ্নে কেউ সংখ্যালঘু হবে না, এ বার্তা ছিল জিন্নাহর ভাষণে।
কিন্তু ভাষার প্রশ্নটি তখন ছিল অমীমাংসিত। যেহেতু দেশভাগের আগে হিন্দুরা হিন্দিকে এবং মুসলিমরা উর্দুকে জাতীয় ভাষা হিসেবে চাইছিলেন, তাই স্বাধীন পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষাকে অনায়াসেই উর্দু করা হতে পারে বলে ধরে নিয়েছিলেন তখনকার নেতৃস্থানীয় রাজনীতিবিদেরা। কিন্তু স্বাধীনতা লাভের মাত্র ৬ মাসের মধ্যেই বাঙালি মুসলমানেরা বুঝতে পারছিলেন, ব্রিটিশ উপনিবেশবাদের হাত থেকে মুক্তি হলেও আরও একটি নতুন উপনিবেশবাদের কবলে পড়তে যাচ্ছেন তাঁরা। ভাষার মাধ্যমেই সেই উপনিবেশবাদ ধীরে ধীরে বাংলা ও বাঙালিকে গ্রাস করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
১৯৪৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল কাশেমের নেতৃত্বে গড়ে উঠেছিল তমদ্দুন মজলিস। তাঁরা ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা না উর্দু’ নামে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করেন ১৫ সেপ্টেম্বর। ডিসেম্বরেই গড়ে ওঠে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ। এরপর ১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি গণপরিষদের অধিবেশনে বাংলা ভাষাবিষয়ক কংগ্রেস সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের প্রস্তাবের কথাও আমরা বলেছি। তারই পথ ধরে ১৯৪৮ সালের ভাষা আন্দোলন দানা বেঁধে ওঠে। ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলে পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ, বিভিন্ন ছাত্রাবাসের নেতৃত্ব ও তমদ্দুন মজলিসের উদ্যোগে সভা হয় এবং ‘রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ গঠিত হয়। তাঁদের উদ্যোগে ১১ মার্চ হলো ধর্মঘট। ছাত্ররা পিকেটিং করলেন। হাইকোর্ট ও সচিবালয়ের গেটে পুলিশ ছাত্রদের লাঠিপেটা করল। গ্রেপ্তার হলেন শামসুল হক, শেখ মুজিব, অলি আহাদ, শওকত আলী, কাজী গোলাম মাহবুব প্রমুখ।
ছাত্ররা যখন ফুঁসছেন, তখন মুখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দীনের টনক নড়ল। ১৯ মার্চ পাকিস্তানের মূল নেতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ আসবেন পূর্ব বাংলার রাজধানী ঢাকায়। সে সময় যদি শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন, তাহলে খাজাদের রাজনীতিতে তা কালো দাগ রেখে দেবে। তাই তড়িঘড়ি করে ১৫ মার্চ মুখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দীন রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। ছাত্রদের সঙ্গে একটি চুক্তি করেন তিনি। চুক্তিতে ছিল, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মুক্তি, তদন্ত কমিটি গঠন, শিক্ষার মাধ্যম বাংলা এবং বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার করার প্রস্তাব আইন পরিষদে তোলা হবে।
ছাত্রনেতাদের সঙ্গে প্রাদেশিক মুসলিম লীগ প্রধান খাজা নাজিমুদ্দীনের মধ্যে এ চুক্তি হওয়ায় মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর ঢাকা আগমনের পথে আর কোনো বাধা থাকল না।
জিন্নাহ ঢাকায় আসেন ১৯ মার্চ। ২১ ও ২৪ মার্চ রেসকোর্স ও কার্জন হলে বক্তব্য দেন। বাঙালি জিন্নাহর মুখ থেকে উর্দুর সাফাই শুনতে চায়নি, সে কথাই এবার বলা হবে।
পাকিস্তানের প্রথম গণপরিষদের সভায় মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ যে কথা বলেন, তা আমরা আগেই উল্লেখ করেছি। এ দেশের সব ধর্মের মানুষ পাকিস্তানি বলে বিবেচিত হবে এবং ধর্মীয় প্রশ্নে কেউ সংখ্যালঘু হবে না, এ বার্তা ছিল জিন্নাহর ভাষণে।
কিন্তু ভাষার প্রশ্নটি তখন ছিল অমীমাংসিত। যেহেতু দেশভাগের আগে হিন্দুরা হিন্দিকে এবং মুসলিমরা উর্দুকে জাতীয় ভাষা হিসেবে চাইছিলেন, তাই স্বাধীন পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষাকে অনায়াসেই উর্দু করা হতে পারে বলে ধরে নিয়েছিলেন তখনকার নেতৃস্থানীয় রাজনীতিবিদেরা। কিন্তু স্বাধীনতা লাভের মাত্র ৬ মাসের মধ্যেই বাঙালি মুসলমানেরা বুঝতে পারছিলেন, ব্রিটিশ উপনিবেশবাদের হাত থেকে মুক্তি হলেও আরও একটি নতুন উপনিবেশবাদের কবলে পড়তে যাচ্ছেন তাঁরা। ভাষার মাধ্যমেই সেই উপনিবেশবাদ ধীরে ধীরে বাংলা ও বাঙালিকে গ্রাস করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
১৯৪৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল কাশেমের নেতৃত্বে গড়ে উঠেছিল তমদ্দুন মজলিস। তাঁরা ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা না উর্দু’ নামে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করেন ১৫ সেপ্টেম্বর। ডিসেম্বরেই গড়ে ওঠে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ। এরপর ১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি গণপরিষদের অধিবেশনে বাংলা ভাষাবিষয়ক কংগ্রেস সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের প্রস্তাবের কথাও আমরা বলেছি। তারই পথ ধরে ১৯৪৮ সালের ভাষা আন্দোলন দানা বেঁধে ওঠে। ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলে পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ, বিভিন্ন ছাত্রাবাসের নেতৃত্ব ও তমদ্দুন মজলিসের উদ্যোগে সভা হয় এবং ‘রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ গঠিত হয়। তাঁদের উদ্যোগে ১১ মার্চ হলো ধর্মঘট। ছাত্ররা পিকেটিং করলেন। হাইকোর্ট ও সচিবালয়ের গেটে পুলিশ ছাত্রদের লাঠিপেটা করল। গ্রেপ্তার হলেন শামসুল হক, শেখ মুজিব, অলি আহাদ, শওকত আলী, কাজী গোলাম মাহবুব প্রমুখ।
ছাত্ররা যখন ফুঁসছেন, তখন মুখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দীনের টনক নড়ল। ১৯ মার্চ পাকিস্তানের মূল নেতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ আসবেন পূর্ব বাংলার রাজধানী ঢাকায়। সে সময় যদি শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন, তাহলে খাজাদের রাজনীতিতে তা কালো দাগ রেখে দেবে। তাই তড়িঘড়ি করে ১৫ মার্চ মুখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দীন রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। ছাত্রদের সঙ্গে একটি চুক্তি করেন তিনি। চুক্তিতে ছিল, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মুক্তি, তদন্ত কমিটি গঠন, শিক্ষার মাধ্যম বাংলা এবং বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার করার প্রস্তাব আইন পরিষদে তোলা হবে।
ছাত্রনেতাদের সঙ্গে প্রাদেশিক মুসলিম লীগ প্রধান খাজা নাজিমুদ্দীনের মধ্যে এ চুক্তি হওয়ায় মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর ঢাকা আগমনের পথে আর কোনো বাধা থাকল না।
জিন্নাহ ঢাকায় আসেন ১৯ মার্চ। ২১ ও ২৪ মার্চ রেসকোর্স ও কার্জন হলে বক্তব্য দেন। বাঙালি জিন্নাহর মুখ থেকে উর্দুর সাফাই শুনতে চায়নি, সে কথাই এবার বলা হবে।
গত সপ্তাহে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে আশাজাগানিয়া একটি খবর প্রচারিত হওয়ার পর দেশব্যাপী বেশ আলোচনা চলছে। ৫ এপ্রিল থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের উপপ্রধানমন্ত্রী ইউ থান শিউ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও রোহিঙ্গা...
১ দিন আগেসমগ্র বাংলাদেশ এখন স্বপ্ন দেখছে। আমূল বদলে যাওয়ার স্বপ্ন। বাংলাদেশকে এই স্বপ্ন দেখাচ্ছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। আরও নির্দিষ্ট করে বললে, এই স্বপ্ন দেখাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তাঁকে কেন্দ্র করেই স্বপ্নগুলো আবর্তিত হতে শুরু করেছে।
১ দিন আগেভারতবর্ষে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে বিভিন্ন ধর্ম, বর্ণ ও জাতিগোষ্ঠীর মানুষ সহাবস্থান করলেও ঔপনিবেশিক শাসন এবং ব্রিটিশদের বিভেদমূলক রাজনৈতিক কৌশলের কারণে সাম্প্রদায়িক বিভাজন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গভীর হয়ে ওঠে। তারই চূড়ান্ত প্রকাশ ঘটে ১৯৪৭ সালে, যখন উপমহাদেশ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে জন্ম নেয় ভারত ও পাকিস্তান।
১ দিন আগেকেন্দ্রীয় আকর্ষণ হিসেবে উঠে এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ আয়োজিত ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’। আশির দশকে শুরু হওয়া এই শোভাযাত্রা আজ জাতীয় পরিচয়ের এক জীবন্ত প্রতীক। ২০১৬ সালে ইউনেসকো একে অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও আমাদের সাংস্কৃতিক মর্যাদার প্রতীক হিসেবে...
১ দিন আগে