মৃত্যুঞ্জয় রায়
মাঝে মাঝে মনে হয়, করোনাকালই বোধহয় ভালো ছিল। শাটডাউনে সব বন্ধ, রাস্তায় যানবাহন নেই, মানুষের চলাচল সীমিত, যারাও বাইরে যাচ্ছে তাদের মুখে মাস্ক পরা। রাস্তার ধারের গাছগুলোতে ধুলার পর্দা পড়ছে না, কলকারখানার চোঙা দিয়ে ধোঁয়া বের হচ্ছে না, বায়ুদূষণও কমে এসেছে। এক অদেখা জীবাণুর আতঙ্কে আমাদের কী দুঃসময়ই না কেটেছে। ভেবেছিলাম, ধূলিদূষণ ও বাতাসে থাকা জীবাণু এবং ক্ষতিকর গ্যাস থেকে বাঁচতে আমাদের অন্তত মাস্ক পরার অভ্যাসটা অব্যাহত থাকবে। কিন্তু করোনাকাল কাটতেই সে অভ্যাসও ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। আমরা আবার ধুলার রাজ্যে বীরপুরুষের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছি। নাক দিয়ে টেনে নিচ্ছি ধূলিকণাভরা দূষিত বাতাস।
এতে কী পরিমাণ স্বাস্থ্যঝুঁকি যে বেড়ে গেছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। বিশেষ করে শহরে বাস করা শিশু ও বয়স্ক লোকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি ও শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ অনেক বেড়ে গেছে। প্রতিবছর পৃথিবীতে ঘরের বাইরের বায়ুদূষণে মরছে ৪ কোটি ২০ লাখের বেশি মানুষ, যার ৮৯ শতাংশ মানুষের বাস নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে এই মৃত্যুহার বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বায়ুদূষণজনিত কারণে এসব মৃত্যুর প্রায় ৬৮ শতাংশ ঘটছে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের কারণে। সারা বিশ্বে বায়ুদূষণ বর্তমানে অসংক্রামক রোগে মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ। বায়ুদূষণের এক অন্যতম নিয়ামক ধূলিকণা।
বায়ুদূষণের পাঁচটি প্রধান দূষক হলো ধূলিকণা বা পার্টিকুলেট ম্যাটার এবং কার্বন মনো-অক্সাইড, ওজোন, নাইট্রাস অক্সাইড ও সালফার ডাই-অক্সাইড গ্যাস। বায়ুদূষণের একটি প্রধান উপাদান হলো ধূলিকণা বা ডাস্ট। বিভিন্ন উৎস থেকে রোজ বাতাসে বিভিন্ন আকারের ধূলিকণা বাতাসে মিশে ধূলিদূষণ ও বায়ুদূষণ সৃষ্টি করে। সাধারণভাবে বলা হয়, দুই ধরনের ধূলিকণা বাতাসে মেশে—স্থূল ধূলিকণা, যেগুলোর আকার বা ব্যাস ২ দশমিক ৫ মিলিমাইক্রনের চেয়ে বেশি এবং সূক্ষ্ম ধূলিকণা, যেগুলোর আকার বা ব্যাস ২ দশমিক ৫ মিলিমাইক্রনের চেয়ে কম। ঢাকা শহরে ধূলিদূষণ মাত্রার চেয়ে তিন গুণ বেশি। পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা অনুযায়ী ধূলিদূষণ মাত্রা যেখানে বাতাসে প্রতি ঘনমিটারে সর্বোচ্চ ১৫০ মাইক্রোগ্রাম, সেখানে শুষ্ক মৌসুমে ঢাকা শহরে এই মাত্রা প্রতি ঘনমিটারে ৪১৯ মাইক্রোগ্রাম। শুরু হয়েছে শুষ্ক মওসুম, এতে নগরে নগরে বাড়বে ধূলিদূষণের মাত্রাও। এর অর্থ, তাতে নগরের গাছপালার ক্ষতি, মাটি ও পানির ভৌত এবং রাসায়নিক ধর্মের পরিবর্তন ঘটা, বায়ুদূষণ, মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যাওয়া।
ধূলিদূষণ কমাতে ধুলার উৎসগুলো নিয়ে ভাবতে হবে—দেখতে হবে কোথা থেকে কী পরিমাণ ধূলিকণা প্রতিদিন নগরের বাতাসে মিশছে, আমাদের সহ্যক্ষমতার চেয়ে তা কত গুণ বেশি, কে বা কারা এর জন্য দায়ী। এসব নিয়ে জরিপ বা গবেষণার পর সেসব তথ্য বিশ্লেষণ করে বাস্তবসম্মত কিছু পদক্ষেপ ও প্রয়োজনে নীতিমালা সংস্কার অথবা নতুন আইন তৈরি করতে হবে। এ দেশের আবহাওয়ায় শুষ্ক দিনে স্বাভাবিকভাবেই প্রচুর ধূলিকণা তৈরি হয় ও তা ছড়ায়।
প্রতিদিন প্রসারমান নগরীতে দীর্ঘদিন ধরে আমাদের ইমারত নির্মাণের ধুলাবালু হজম করতে হয়, এর প্রত্যক্ষ ক্ষতির শিকার বেশি হয় ওই নির্মাণশ্রমিকেরাই। ভবন ভাঙা বা নির্মাণের সময় তার ধুলাবালু নিয়ন্ত্রণ বা রোধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিশ্চিত না করে কেউ যেন সেসব কাজ করতে না পারে, প্রয়োজনে ভবন নির্মাণ নীতিমালায় এসব বিষয়কে যুক্ত করতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো গার্হস্থ্য বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। সেসব বর্জ্য যেখানে জমা করা হচ্ছে বা ফেলা হচ্ছে, সেখান থেকে বাযুদূষণ ও ধূলিদূষণ ঘটছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আরও আধুনিকায়ন দরকার।
ইটভাটা, পাথর ভাঙা, খনি খনন, রাস্তা ও সেতু নির্মাণ এবং অন্যান্য কলকারখানার পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোয় ধূলিদূষণের মাত্রা বেশি। নগরের যেসব খোলা স্থান রয়েছে সেগুলোর মাটি উন্মুক্ত থাকায় সেখানকার ধুলাবালু সহজে বাতাসের বেগে উড়ে উড়ে চারদিকে ছড়াচ্ছে। অনেক দেশেই এ ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা রয়েছে, কৃষিজমি ছাড়া নগরে কোনো উদলা জায়গা বা মাটি বের হওয়া স্থান থাকতে পারবে না, আবার সেসব স্থান কংক্রিট দিয়েও ঢাকা যাবে না। ফুটপাতে কংক্রিট বা টাইলস থাকলেও রাস্তার পাশে, মাঠে, ডোবা বা জলাশয়ের চারপাশে, পার্কের খোলা জায়গা, প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাঙ্গনের আঙিনা ইত্যাদি সবুজ ঘাসে ঢেকে রাখতে হবে। এতে ধুলার উড়ন অনেক কমে। তা ছাড়া কার্পেটের মতো সেসব ঘাস নিয়মিত ছেঁটে সুন্দর করে রাখলে তা ওইসব স্থানে এক আলাদা সৌন্দর্য তৈরি করে, ভূমিক্ষয় কমে, মাটির রস বা আর্দ্রতা সংরক্ষিত হয়। এসব ঘাসের আস্তরণ অনেক মাকড়সার আবাসস্থল, যা অনেক ক্ষতিকর পোকা খেয়ে পরিবেশ ভালো রাখে। আবার বৃষ্টিবাদল হলে সেসব পানি সহজে মাটিতে প্রবেশ করতে পারে।
ধূলিদূষণের আরেকটি বড় উৎস হলো নগরের যানবাহন। ফিটনেসবিহীন অনেক গাড়ি ভস ভস করে কালো ধোঁয়া ছেড়ে রাস্তার ধুলা উড়িয়ে একটার পিছে একটা ছুটে চলেছে। ফিটনেসবিহীন গাড়ির চলাচল বন্ধ তো করতেই হবে, সেই সঙ্গে ফুটপাত ও রাস্তাগুলোও রাতের বেলায় পরিষ্কার করার যন্ত্র দিয়ে রোজ পরিষ্কার করে রাখতে হবে। প্রয়োজনে সিটি করপোরেশন এসব রাস্তা পরিষ্কার করার গাড়ি বা স্ট্রিট সুইপার ভেহিকেল কিনতে পারে। সম্প্রতি বেশ কিছু আধুনিক গাড়ি বেরিয়েছে, যেগুলো কম কার্বন নিঃসরণ করে ও বায়ুশোষণের দ্বারা রাস্তার ধুলাবালু টেনে তুলে নিয়ে আসে, পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের ঝাড়ু দ্বারা যা করা সম্ভব না। শুষ্ক মৌসুমে সিটি করপোরেশন থেকে রাস্তায় পানি ছিটালেও তাতে ধুলা অনেক কমে।
রাস্তার ধারে থাকা গাছপালার পাতায় রোজ যে ধুলা জমে তা থেকেও দূষণ ঘটছে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন ঢাকা শহরের গাছপালায় প্রায় ৪৩৬ টন ধুলা জমে। গুলিস্তান এলাকার গাছে ধুলা জমে সবচেয়ে বেশি, বোটানিক্যাল গার্ডেনের গাছগুলোতে জমে সবচেয়ে কম। এ থেকেই বোঝা যায়, নগরের রাস্তা ও যানবাহন যেখানে রয়েছে সেখানকার বাতাস কতটা ধূলিময় ও অস্বাস্থ্যকর! যে গাছ পরিবেশ দূষণ কমাবে, পরিবেশের দূষণে আজ সে নিজেই আক্রান্ত। ধূলিধূসরিত এসব গাছ রক্ষা করার জন্য সিটি করপোরেশন পানি স্প্রে করে পাতাগুলো ধোয়ার ব্যবস্থা করতে পারে। এতে গাছের জীবন ও মানুষের জীবন দুই-ই বাঁচবে।
মৃত্যুঞ্জয় রায়,কৃষিবিদ ও প্রকৃতিবিষয়ক লেখক
মাঝে মাঝে মনে হয়, করোনাকালই বোধহয় ভালো ছিল। শাটডাউনে সব বন্ধ, রাস্তায় যানবাহন নেই, মানুষের চলাচল সীমিত, যারাও বাইরে যাচ্ছে তাদের মুখে মাস্ক পরা। রাস্তার ধারের গাছগুলোতে ধুলার পর্দা পড়ছে না, কলকারখানার চোঙা দিয়ে ধোঁয়া বের হচ্ছে না, বায়ুদূষণও কমে এসেছে। এক অদেখা জীবাণুর আতঙ্কে আমাদের কী দুঃসময়ই না কেটেছে। ভেবেছিলাম, ধূলিদূষণ ও বাতাসে থাকা জীবাণু এবং ক্ষতিকর গ্যাস থেকে বাঁচতে আমাদের অন্তত মাস্ক পরার অভ্যাসটা অব্যাহত থাকবে। কিন্তু করোনাকাল কাটতেই সে অভ্যাসও ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। আমরা আবার ধুলার রাজ্যে বীরপুরুষের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছি। নাক দিয়ে টেনে নিচ্ছি ধূলিকণাভরা দূষিত বাতাস।
এতে কী পরিমাণ স্বাস্থ্যঝুঁকি যে বেড়ে গেছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। বিশেষ করে শহরে বাস করা শিশু ও বয়স্ক লোকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি ও শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ অনেক বেড়ে গেছে। প্রতিবছর পৃথিবীতে ঘরের বাইরের বায়ুদূষণে মরছে ৪ কোটি ২০ লাখের বেশি মানুষ, যার ৮৯ শতাংশ মানুষের বাস নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে এই মৃত্যুহার বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বায়ুদূষণজনিত কারণে এসব মৃত্যুর প্রায় ৬৮ শতাংশ ঘটছে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের কারণে। সারা বিশ্বে বায়ুদূষণ বর্তমানে অসংক্রামক রোগে মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ। বায়ুদূষণের এক অন্যতম নিয়ামক ধূলিকণা।
বায়ুদূষণের পাঁচটি প্রধান দূষক হলো ধূলিকণা বা পার্টিকুলেট ম্যাটার এবং কার্বন মনো-অক্সাইড, ওজোন, নাইট্রাস অক্সাইড ও সালফার ডাই-অক্সাইড গ্যাস। বায়ুদূষণের একটি প্রধান উপাদান হলো ধূলিকণা বা ডাস্ট। বিভিন্ন উৎস থেকে রোজ বাতাসে বিভিন্ন আকারের ধূলিকণা বাতাসে মিশে ধূলিদূষণ ও বায়ুদূষণ সৃষ্টি করে। সাধারণভাবে বলা হয়, দুই ধরনের ধূলিকণা বাতাসে মেশে—স্থূল ধূলিকণা, যেগুলোর আকার বা ব্যাস ২ দশমিক ৫ মিলিমাইক্রনের চেয়ে বেশি এবং সূক্ষ্ম ধূলিকণা, যেগুলোর আকার বা ব্যাস ২ দশমিক ৫ মিলিমাইক্রনের চেয়ে কম। ঢাকা শহরে ধূলিদূষণ মাত্রার চেয়ে তিন গুণ বেশি। পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা অনুযায়ী ধূলিদূষণ মাত্রা যেখানে বাতাসে প্রতি ঘনমিটারে সর্বোচ্চ ১৫০ মাইক্রোগ্রাম, সেখানে শুষ্ক মৌসুমে ঢাকা শহরে এই মাত্রা প্রতি ঘনমিটারে ৪১৯ মাইক্রোগ্রাম। শুরু হয়েছে শুষ্ক মওসুম, এতে নগরে নগরে বাড়বে ধূলিদূষণের মাত্রাও। এর অর্থ, তাতে নগরের গাছপালার ক্ষতি, মাটি ও পানির ভৌত এবং রাসায়নিক ধর্মের পরিবর্তন ঘটা, বায়ুদূষণ, মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যাওয়া।
ধূলিদূষণ কমাতে ধুলার উৎসগুলো নিয়ে ভাবতে হবে—দেখতে হবে কোথা থেকে কী পরিমাণ ধূলিকণা প্রতিদিন নগরের বাতাসে মিশছে, আমাদের সহ্যক্ষমতার চেয়ে তা কত গুণ বেশি, কে বা কারা এর জন্য দায়ী। এসব নিয়ে জরিপ বা গবেষণার পর সেসব তথ্য বিশ্লেষণ করে বাস্তবসম্মত কিছু পদক্ষেপ ও প্রয়োজনে নীতিমালা সংস্কার অথবা নতুন আইন তৈরি করতে হবে। এ দেশের আবহাওয়ায় শুষ্ক দিনে স্বাভাবিকভাবেই প্রচুর ধূলিকণা তৈরি হয় ও তা ছড়ায়।
প্রতিদিন প্রসারমান নগরীতে দীর্ঘদিন ধরে আমাদের ইমারত নির্মাণের ধুলাবালু হজম করতে হয়, এর প্রত্যক্ষ ক্ষতির শিকার বেশি হয় ওই নির্মাণশ্রমিকেরাই। ভবন ভাঙা বা নির্মাণের সময় তার ধুলাবালু নিয়ন্ত্রণ বা রোধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিশ্চিত না করে কেউ যেন সেসব কাজ করতে না পারে, প্রয়োজনে ভবন নির্মাণ নীতিমালায় এসব বিষয়কে যুক্ত করতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো গার্হস্থ্য বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। সেসব বর্জ্য যেখানে জমা করা হচ্ছে বা ফেলা হচ্ছে, সেখান থেকে বাযুদূষণ ও ধূলিদূষণ ঘটছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আরও আধুনিকায়ন দরকার।
ইটভাটা, পাথর ভাঙা, খনি খনন, রাস্তা ও সেতু নির্মাণ এবং অন্যান্য কলকারখানার পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোয় ধূলিদূষণের মাত্রা বেশি। নগরের যেসব খোলা স্থান রয়েছে সেগুলোর মাটি উন্মুক্ত থাকায় সেখানকার ধুলাবালু সহজে বাতাসের বেগে উড়ে উড়ে চারদিকে ছড়াচ্ছে। অনেক দেশেই এ ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা রয়েছে, কৃষিজমি ছাড়া নগরে কোনো উদলা জায়গা বা মাটি বের হওয়া স্থান থাকতে পারবে না, আবার সেসব স্থান কংক্রিট দিয়েও ঢাকা যাবে না। ফুটপাতে কংক্রিট বা টাইলস থাকলেও রাস্তার পাশে, মাঠে, ডোবা বা জলাশয়ের চারপাশে, পার্কের খোলা জায়গা, প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাঙ্গনের আঙিনা ইত্যাদি সবুজ ঘাসে ঢেকে রাখতে হবে। এতে ধুলার উড়ন অনেক কমে। তা ছাড়া কার্পেটের মতো সেসব ঘাস নিয়মিত ছেঁটে সুন্দর করে রাখলে তা ওইসব স্থানে এক আলাদা সৌন্দর্য তৈরি করে, ভূমিক্ষয় কমে, মাটির রস বা আর্দ্রতা সংরক্ষিত হয়। এসব ঘাসের আস্তরণ অনেক মাকড়সার আবাসস্থল, যা অনেক ক্ষতিকর পোকা খেয়ে পরিবেশ ভালো রাখে। আবার বৃষ্টিবাদল হলে সেসব পানি সহজে মাটিতে প্রবেশ করতে পারে।
ধূলিদূষণের আরেকটি বড় উৎস হলো নগরের যানবাহন। ফিটনেসবিহীন অনেক গাড়ি ভস ভস করে কালো ধোঁয়া ছেড়ে রাস্তার ধুলা উড়িয়ে একটার পিছে একটা ছুটে চলেছে। ফিটনেসবিহীন গাড়ির চলাচল বন্ধ তো করতেই হবে, সেই সঙ্গে ফুটপাত ও রাস্তাগুলোও রাতের বেলায় পরিষ্কার করার যন্ত্র দিয়ে রোজ পরিষ্কার করে রাখতে হবে। প্রয়োজনে সিটি করপোরেশন এসব রাস্তা পরিষ্কার করার গাড়ি বা স্ট্রিট সুইপার ভেহিকেল কিনতে পারে। সম্প্রতি বেশ কিছু আধুনিক গাড়ি বেরিয়েছে, যেগুলো কম কার্বন নিঃসরণ করে ও বায়ুশোষণের দ্বারা রাস্তার ধুলাবালু টেনে তুলে নিয়ে আসে, পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের ঝাড়ু দ্বারা যা করা সম্ভব না। শুষ্ক মৌসুমে সিটি করপোরেশন থেকে রাস্তায় পানি ছিটালেও তাতে ধুলা অনেক কমে।
রাস্তার ধারে থাকা গাছপালার পাতায় রোজ যে ধুলা জমে তা থেকেও দূষণ ঘটছে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন ঢাকা শহরের গাছপালায় প্রায় ৪৩৬ টন ধুলা জমে। গুলিস্তান এলাকার গাছে ধুলা জমে সবচেয়ে বেশি, বোটানিক্যাল গার্ডেনের গাছগুলোতে জমে সবচেয়ে কম। এ থেকেই বোঝা যায়, নগরের রাস্তা ও যানবাহন যেখানে রয়েছে সেখানকার বাতাস কতটা ধূলিময় ও অস্বাস্থ্যকর! যে গাছ পরিবেশ দূষণ কমাবে, পরিবেশের দূষণে আজ সে নিজেই আক্রান্ত। ধূলিধূসরিত এসব গাছ রক্ষা করার জন্য সিটি করপোরেশন পানি স্প্রে করে পাতাগুলো ধোয়ার ব্যবস্থা করতে পারে। এতে গাছের জীবন ও মানুষের জীবন দুই-ই বাঁচবে।
মৃত্যুঞ্জয় রায়,কৃষিবিদ ও প্রকৃতিবিষয়ক লেখক
পৃথিবীকে জলবায়ু পরিবর্তনের বিপর্যয় থেকে রক্ষা করে নতুন বিশ্ব গড়ে তোলার লক্ষ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ‘শূন্য বর্জ্য, শূন্য কার্বন ও শূন্য বেকারত্ব’র তত্ত্ব তুলে ধরেছেন বিশ্ববাসীর সামনে।
১৪ ঘণ্টা আগেতিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে রণদা প্রসাদ সাহা ছিলেন মেজ। মা কুমুদিনী দেবীর গভীর স্নেহে বড় হয়ে উঠলেও মায়ের সঙ্গটুকু দীর্ঘস্থায়ী হয়নি; সাত বছর বয়সেই মাকে হারান তিনি।
১৫ ঘণ্টা আগেমঙ্গলবার রাজধানীর গুলিস্তান ও ফার্মগেটে হকার উচ্ছেদে অভিযান চালিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ ও যৌথ বাহিনী। ঢাকার ফুটপাত ও রাস্তার একটা অংশ যেভাবে হকাররা দখল করে রাখেন, তাতে চলাচলে অসুবিধা হয় রাজধানীবাসীর। তাই ব্যস্ত সড়ক হকারমুক্ত করতে পারলে পুলিশ ও যৌথ বাহিনী সাধুবাদ পাবে।
১৫ ঘণ্টা আগে১৭ নভেম্বর ৪৩তম বিসিএসে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের যোগদান করার কথা ছিল। এই বিসিএসে উত্তীর্ণ দুই হাজারের বেশি প্রার্থীর মধ্যে অধিকাংশই সরকারি-বেসরকারি নানা চাকরি করতেন।
২ দিন আগে