সিগারেটের প্যাকেটের মতো স্পেনে স্মার্টফোনেও থাকবে স্বাস্থ্য সতর্কীকরণ বার্তা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০: ৫০
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১: ০৫
এই সতর্কীকরণগুলো স্মার্টফোন আসক্তির সম্ভাব্য বিপদ সম্পর্কে একটি স্পষ্টভাবে স্মরণ করিয়ে দেবে। ছবি: মাই স্পেস ডট কম

নিঃশব্দে আধুনিক জীবনের বড় চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে স্মার্টফোনের আসক্তি। আমাদের সংযোগ, কাজ এবং বিশ্রামের পদ্ধতিতে পরিবর্তন এনেছে স্মার্টফোন। তবে এই নিরবচ্ছিন্ন সংযোগ ঘুম, মানসিক স্বাস্থ্য এবং এমনকি ব্যক্তিগত সম্পর্কগুলোকেও প্রভাবিত করছে। বিশেষ করে কিশোর-কিশোরী এবং তরুণ প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে। স্মার্টফোনের আসক্তিকে ‘জনস্বাস্থ্য মহামারি’ হিসেবে অভিহিত করে একটি সাহসী পদক্ষেপ প্রস্তাব করেছে স্পেন। এখন থেকে দেশের মধ্যে বিক্রি হওয়া সব স্মার্টফোনে সিগারেটের প্যাকেটের মতো স্বাস্থ্য সতর্কীকরণ থাকতে হবে। স্মার্টফোনে নির্দিষ্ট অ্যাপ বা প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করার সময় স্ক্রিনে সতর্কতামূলক বার্তা দেখানোর প্রস্তাব দিয়েছে দেশটির বিশেষজ্ঞ দল।

স্পেনের এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য হলো–অতিরিক্ত স্মার্টফোন ব্যবহারের ঝুঁকিগুলো সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা এবং মনোযোগসহকারে ব্যবহারের আহ্বান জানানো। এই প্রস্তাব ২৫০ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদনের অংশ, যা স্প্যানিশ সরকারের বিশেষজ্ঞদের একটি কমিটি শেয়ার করেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডিজিটাল সেবাগুলোর ওপর বাধ্যতামূলক স্বাস্থ্য সতর্কীকরণ থাকার প্রস্তাব করেছে প্যানেলটি, যা ব্যবহারকারীদের অতিরিক্ত ব্যবহার এবং ক্ষতিকর কনটেন্টের সম্মুখীন মতো ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করবে। প্রস্তাব অনুযায়ী, এসব সতর্কীকরণ সিগারেটের প্যাকেটের সতর্কীকরণগুলোর মতো কাজ করবে। এসব সতর্কীকরণ স্মার্টফোন আসক্তির সম্ভাব্য বিপদ সম্পর্কে স্পষ্টভাবে স্মরণ করিয়ে দেবে। রিপোর্টে আরও সুপারিশ করা হয়েছে যে, নির্দিষ্ট অ্যাপ বা প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করার সময় স্ক্রিনে সতর্কতামূলক বার্তা প্রদর্শিত হবে, যাতে ব্যবহারকারীরা আরও সচেতনভাবে ব্যবহার করতে উৎসাহিত হন।

এ ছাড়া প্রতিবেদনে তিন বছরের নিচে শিশুদের জন্য ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার সুপারিশ করা হয়েছে এবং তিন থেকে ছয় বছর বয়সী শিশুদের জন্য তাদের ব্যবহারে কঠোর সীমাবদ্ধতা আরোপ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে এই নিষেধাজ্ঞা শুধু বিশেষ কিছু পরিস্থিতিতে ব্যতিক্রম হতে পারে। ১৬ বছরের নিচে কিশোরদের জন্য প্রতিবেদনটি ‘ডামফোন’ (বাটন ফোন বা কোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নেই এমন ফোন ব্যবহার) ব্যবহারের প্রস্তাব করেছে। যেগুলোর কার্যক্ষমতা সীমিত থাকবে এবং ১২ বছরের নিচে শিশুদের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার পুরোপুরি নিষিদ্ধ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

প্রতিবেদনে ‘তাৎক্ষণিক সন্তুষ্টি’ ফিচারযুক্ত শিক্ষামূলক অ্যাপগুলোর ব্যবহার সমালোচনা করা হয়েছে। এগুলো শিক্ষায় নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এটি স্কুলগুলোকে এ ধরনের অ্যাপগুলো সরিয়ে ফেলতে এবং বরং ছোট শিক্ষার্থীদের জন্য সাধারণ পাঠদান পদ্ধতি গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা প্রাথমিক শিক্ষায় ডিজিটাল টুলস ব্যবহারের পরিমাণ কমিয়ে আনার সুপারিশ করেছেন, যাতে প্রযুক্তি ও শিক্ষাপদ্ধতির মধ্যে একটি স্বাস্থ্যকর ভারসাম্য বজায় রাখা যায়।

প্রযুক্তির সঙ্গে সম্পর্কিত মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাগুলো, যেমন: আসক্তি এবং উদ্বেগ, সমাধান করার প্রয়োজনীয়তার কথা প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। এগুলোকে জরুরি জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এটির জন্য নিয়মিত চিকিৎসা চেকআপে সময় অতিরিক্ত ডিজিটাল ব্যবহারের শনাক্তের পরামর্শ দিয়েছে, যাতে এই সমস্যাগুলো প্রথম থেকেই শনাক্ত ও সমাধান করা যেতে পারে।

অস্ট্রেলিয়ার একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষেধাজ্ঞার পরেই স্প্যানিশ সরকারের প্রস্তাবটি এসেছে। অস্ট্রেলিয়ার এই নিষেধাজ্ঞায় ১৬ বছরের নিচে শিশুদের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার বন্ধ করা হয়েছে। নতুন আইনটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলোতে বয়স যাচাইকরণ প্রক্রিয়া বাধ্যতামূলক করেছে, যাতে ১৬ বছরের নিচে শিশুরা ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং স্ন্যাপচ্যাটেরর মতো প্রধান প্ল্যাটফর্মে অ্যাকাউন্ট তৈরি বা ব্যবহার করতে না পারে। গত সপ্তাহে দেশটির পার্লামেন্টে পাশ হওয়া এই আইন ২০২৫ সালের শুরুতে কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।

তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া টুডে

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইসরায়েলের ‘হৃৎপিণ্ড’ তেল আবিবে হুতিদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

সাগরে নিম্নচাপ, কত দিন বৃষ্টি হতে পারে জানাল আবহাওয়া দপ্তর

শেখ মুজিব ও জিয়াউর রহমান যার যার স্থানে শ্রেষ্ঠ: গয়েশ্বর

র‌্যাব বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি: নূর খান লিটন

হাসিনার আমলে রাশিয়ার সঙ্গে ১০০ কোটি ডলারের অস্ত্র চুক্তি, জড়াল টিউলিপের নামও

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত