Ajker Patrika

র‍্যাম নিয়ে বিজ্ঞানীদের যুগান্তকারী আবিষ্কার, কম্পিউটার হবে ‘অপ্রতিরোধ্য’

আপডেট : ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬: ৫৪
র‍্যাম নিয়ে বিজ্ঞানীদের যুগান্তকারী আবিষ্কার, কম্পিউটার হবে ‘অপ্রতিরোধ্য’

যাঁরা কম্পিউটার বা স্মার্টফোন ব্যবহার করেন, তাঁরা র‍্যাম শব্দটির সঙ্গে পরিচিত। র‍্যান্ডম অ্যাকসেস মেমোরি বা র‍্যাম একটি অস্থায়ী মেমোরি। পদার্থের চুম্বকীয় অবস্থার ওপর ভিত্তি করে র‍্যামে অস্থায়ীভাবে তথ্য বা ডেটা সংরক্ষণ করা হয়।

তবে পদার্থের চুম্বকীয় অবস্থার ওপর আলোর প্রভাব নিয়ে বিজ্ঞানীরা নতুন ‘যুগান্তকারী তথ্য’ আবিষ্কার করেছেন। এই তথ্যের ওপর ভিত্তি করে নতুন প্রজন্মের র‍্যাম তৈরি করা হলে তা কম্পিউটারের গতি বাড়ানোর পাশাপাশি বিদ্যুৎ সাশ্রয় করবে। 

তথ্য বা ডেটাকে খুব দ্রুত প্রক্রিয়াধীন করে র‍্যাম।বিদ্যুৎ প্রবাহ বন্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে র‍্যাম থেকে সমস্ত তথ্য মুছে যায়।

কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেমের কাজ দ্রুতগতিতে করার জন্য অস্থায়ী মেমোরিগুলো (র‍্যাম) গুরুত্বপূর্ণ। প্রায় দুই দশকের বেশি সময় ধরে এই প্রযুক্তির উন্নত সংস্করণ হিসেবে ম্যাগনেটোরেসিস্টিভ র‍্যাম বা এমর‍্যামের ব্যবহার করা হচ্ছে। শিল্প, সামরিক বাহিনী থেকে শুরু করে মহাকাশের বিভিন্ন জটিল কাজে ব্যবহৃত কম্পিউটারে এই প্রযুক্তিই ব্যবহার করা হয়। 

আলো ও তড়িৎ চৌম্বক ক্ষেত্রের মধ্যে মিথষ্ক্রিয়া সম্পর্কে একটি যুগান্তকারী তথ্য আবিষ্কার করেন জেরুজালেমের হিব্রু ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা। লেজার রশ্মি কীভাবে কঠিন পদার্থের ভেতর চৌম্বকীয় অবস্থাকে প্রভাবিত করতে পারে তা এই গবেষণায় পর্যবেক্ষণ করা হয়। চলতি বছরের শুরুতে ফিজিক্যাল রিভিউ রিসার্চ জার্নালে গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পিনট্রনিক্স ল্যাবের প্রধান ও গবেষণার সহলেখক আমির ক্যাপুয়া বলেন, ‘এই আবিষ্কারের সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে, বিশেষ করে আলো ও ন্যানো-চুম্বক ব্যবহার করে ডেটা রেকর্ডিংয়ের ক্ষেত্রে। এটি দ্রুতগতির ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী এমর‍্যাম তৈরিতে এবং বিভিন্ন প্রযুক্তি খাতে তথ্য সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াকরণের ক্ষেত্রে বিশাল পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়।’

র‍্যাম কাজ করে অনেকগুলো ক্ষুদ্র তড়িৎ চুম্বক ব্যবহার করে। নির্দিষ্ট ভোল্টেজ সরবরাহ করলে এগুলো ‘সক্রিয়’ বা ‘নিষ্ক্রয়’ সংকেত দিতে পারে। যা কম্পিটার বাইনারি ভাষা ‘১’ বা ‘০’ হিসেবে শনাক্ত করে।

এক সংবাদ বিজ্ঞপতিতে গবেষকেরা বলেন, এই গবেষণায় প্রায় উপেক্ষিত আলোর চুম্বকীয় বৈশিষ্ট্যগুলোকে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এসব বৈশিষ্ট্য নিয়ে পরীক্ষা–নিরীক্ষা করার পর গবেষকেরা দেখেন যে, দ্রুত আন্দোলিত আলোর তরঙ্গ চুম্বককে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এটি মেমরি ও ডেটা সংরক্ষণের ক্ষেত্রে একটি বিশাল পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে।

গবেষকেরা নতুন গাণিতিক সমীকরণের মাধ্যমে ‘আলোর চৌম্বকক্ষেত্রের পরিধি, ফ্রিকোয়েন্সি ও চুম্বকীয় উপাদানের শক্তি শোষণের ক্ষমতাসহ চুম্বকৌয় বস্তু ও আলোর মিথস্ক্রিয়াটি প্রমাণ করতে পেরেছেন। 

লাইভ সায়েন্সে এক সাক্ষাৎকারে ক্যাপুয়া বলেন, আমরা এই মিথস্ক্রিয়া বর্ণনা করে এমন একটি প্রাথমিক সমীকরণ আবিষ্কার করেছি— এই সমীকরণের মাধ্যমে অপটিক্যাল ম্যাগনেটিক রেকর্ডিং (আলোক চুম্বকীয় সংরক্ষণ) নিয়ে নতুন করে ভাবার সুযোগ করে দিয়েছে। এই আবিষ্কারের মাধ্যমে একটি শক্তিশালী, সাশ্রয়ী ও বিদ্যুৎসাশ্রয়ী অপটিক্যাল স্টোরেজ ডিভাইস তৈরির ধারণা দেয়, যা এখনো তৈরি হয়নি। 

যেহেতু কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরির যুগের সূচনা হয়েছে, তাই কোয়ান্টাম প্রযুক্তি সমর্থন করতে পারে এমন র‍্যামের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এটি কোয়ান্টাম কম্পিউটারের সঙ্গে সংগতি রেখে কাজ করতে পারবে। 

তথ্যসূত্র: পপুলার মেকানিকস

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত