Ajker Patrika

যুবকের চোখ তুলে নিয়ে গলা কেটে হত্যা, আটক ২

মুলাদী (বরিশাল) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ মে ২০২২, ১৬: ৩৮
যুবকের চোখ তুলে নিয়ে গলা কেটে হত্যা, আটক ২

বরিশালের মুলাদীতে মনির হাওলাদার নামে (৩২) এক যুবকের চোখ তুলে নেওয়ার পর গলা কেটে তাঁকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে চরকমিশনার গ্রামের আবুল সরদারের বাড়ির পুকুর থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর আগে গতকাল সোমবার রাতে কোনো এক সময় তাঁকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করেছে পুলিশ ও স্থানীয়রা। 

ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পুলিশ দুজনকে আটক করেছে। আটককৃতরা হলেন চরকমিশনার গ্রামের আমির মৃধার ছেলে ও কামাল সরদারের সহযোগী জামাল মৃধা এবং আব্বাস ডাক্তারের ছেলে আলম হোসেন। তাঁদের মধ্যে জামাল মৃধা মীরগঞ্জ খেয়াঘাটে টাকা উত্তোলনের কাজ করেন এবং আলম হোসেন একই ঘাটে স্পিডবোট চালান। 

মৃত মনির হোসেন হাওলাদার চরকমিশনার গ্রামের সালাম হাওলাদারের ছেলে। তিনি ওই এলাকার মৃত আবুল কালাম ওরফে কলম সরদারের ছেলে কামাল সরদারের গরুর খামারে শ্রমিকের কাজ করতেন। 

মৃতের ছোট ভাই পাবেল হাওলাদার বলেন, ‘আমার ভাই দীর্ঘদিন ধরে কামাল সরদারের গরুর খামারে দৈনিক মজুরিতে শ্রমিকের কাজ করছিলেন। কয়েক মাস ধরে টাকা না দেওয়ায় এক সপ্তাহ আগে মনির খামারের কাজ ছেড়ে দেন। এতে কামাল সরদার ও তাঁর লোকজন ক্ষিপ্ত হন। পরে মনিরকে কোনো টাকা দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেন। গতকাল সকালে আমার ভাই মীরগঞ্জ ফেরিঘাটে কামাল সরদারকে পেয়ে তাঁর কাছে পাওনা টাকা চান। কোরবানির ঈদের আগে কোনো টাকা দেবেন না বলে জানিয়ে দেন কামাল সরদার। মনির হাওলাদার বিষয়টি কামাল সরদারের ভাগনে ও কাজীরচর ইউপি সদস্য মো. শামীম খানকে জানান। ওই সময় শামীম খান উল্টো মনিরকে থানা-পুলিশ ও জেলহাজতের ভয় দেখান।’

পাবেল আরও বলেন, ‘গতকাল রাত ৯টার দিকে আমার ভাই আমার কাছ থেকে ৫০ টাকা নিয়ে মীরগঞ্জ ফেরিঘাটে যাওয়ার কথা বলে ঘর থেকে বের হন। রাতে ঘরে না ফেরায় বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করি। কোথাও না পেয়ে আত্মীয়স্বজনের কাছেও খোঁজ নেই। কিন্তু ভাইয়ের খোঁজ পাইনি। আজ সকালে স্থানীয় লোকজন আবুল সরদারের পুকুরের পশ্চিম পাশে আমার ভাইয়ের মরদেহ দেখতে পেয়ে আমাদের খবর দেয়। সেখানে গিয়ে ভাইয়ের গলাকাটা মরদেহ দেখতে পাই। আমার ভাইয়ের বাম চোখও তুলে নেওয়া হয়েছে। দেখেই বোঝা যাচ্ছে তাঁকে অনেক কষ্ট দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। আমাদের ধারণা, বেতনের বকেয়া টাকা চাওয়ায় কামাল সরদার ও তাঁর লোকজন আমার বড় ভাই মনিরকে হত্যা করেছেন।’ 

ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত কামাল সরদার ও তাঁর লোকজন এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ায় তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। 

মুলাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মাকসুদুর রহমান বলেন, গতকাল রাত থেকে মনির হাওলাদার নিখোঁজ ছিলেন। আজ সকালে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সবকিছু দেখে এটাকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

ওসি আরও বলেন, এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আজ দুপুর ১২টার দিকে কামাল হোসেনের সহযোগী জামাল মৃধা ও স্পিডবোটের চালক আলম হোসেনকে আটক করা হয়েছে। মামলা দায়েরের প্রস্তুতিও চলছে। অন্যদিকে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত