Ajker Patrika

যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন গুলিবিদ্ধ তামিম, অর্থাভাবে হচ্ছে না উন্নত চিকিৎসা 

মাদারীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯: ৩৬
যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন গুলিবিদ্ধ তামিম, অর্থাভাবে হচ্ছে না উন্নত চিকিৎসা 

টাকার অভাবে উন্নত চিকিৎসা করাতে পারছেন না মাদারীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে আহত শিক্ষার্থী তামিম। উন্নত চিকিৎসার অভাবে তাঁর বাম হাত আজ অকেজো হওয়ার পথে। গুলিবিদ্ধ হাতের তীব্র যন্ত্রণায় গত তিন মাসের বেশি সময় ধরে নির্ঘুম রাত পার করছেন তিনি।

তামিম হোসাইন (২২) মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়নের বাহেরান্দী গ্রামের মো. আনোয়ার মাতুব্বর ও নাজমা বেগম দম্পতির ছেলে। তিনি মাদারীপুর সরকারি কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ডিগ্রি শেষ বর্ষের ছাত্র।

পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৮ জুলাই সকালে তামিম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মাদারীপুর শহরের শকুনি লেকেরপাড়ে বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন। এ সময় পুলিশ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মী-সমর্থকেরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলের অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করে। পরে একপর্যায়ে গুলি ছোড়ে।

গুলিতে বহু শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা আহত হন। সে সময় তামিমের শরীরেও একাধিক স্থানে গুলি লাগে। প্রথমে তাকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। সেখান থেকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিছুদিন সেখানে চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে চলে আসেন। পরে আবার ঢাকাতে গিয়ে চিকিৎসা শুরু করেন। কিন্তু টাকার অভাবে উন্নত চিকিৎসা করানো সম্ভব হচ্ছে না।

তামিমের বাম হাতের তালু আর একটি আঙুলের ভেতরের গুলি এখনো বের করা যায়নি। অর্থাভাবে চিকিৎসা করাতে না পারায় অনিশ্চয়তায় দিন পার করছেন। ব্যাংকার হওয়ার স্বপ্নটাও দিন দিন ম্লান হয়ে যাচ্ছে। বাবা আনোয়ার মাতুব্বর ঢাকায় বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করে সংসার চালালেও ছেলের উন্নত চিকিৎসার জন্য টাকা জোগাড় করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তামিমের মা নাজমা বেগম বলেন, ‘ঢাকার সমিল্লিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) চিকিৎসককে দেখানো হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য ১০ লাখ টাকা প্রয়োজন। এত টাকা আমাদের কাছে নেই। বেশ কয়েকটি সংগঠন থেকে কিছু সহযোগিতা পেয়েছি। ছেলের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা হলে হাতটি ভালো হয়ে যেতে পারে। তা না হলে চিরদিনের মতো অকেজো হয়ে যাবে।’

madaripur-2আহতের বাবা আনোয়ার মাতুব্বর বলেন, ‘আমি ঢাকায় একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কাজ করি। যা বেতন পাই তা দিয়ে সংসার চালাতেই কষ্ট হয়। সেখানে ছেলেকে উন্নত চিকিৎসা কীভাবে করাব? তাই সরকারের সহযোগিতা চাই।’

আহত তামিম হোসাইন বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে জীবনের মায়া ত্যাগ করে যারা গুলির সামনে নিজেদের বুক উঁচিয়ে দিয়েছেন, তাদের সুচিকিৎসার জন্য সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। সরকার এগিয়ে আসলে, উন্নত চিকিৎসা করাতে পারলে এই হাতটি ভালো হয়ে যেত। আমি সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি।’

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর সাহা বলেন, তদন্ত করে ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা করা হবে। যদি কেউ আইনগত ব্যবস্থা নিতে চান, সে ক্ষেত্রেও উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াদিয়া শাবাব বলেন, ‘আহতদের তালিকা করার জন্য নির্দেশনা পেয়েছি। তালিকার কাজ চলমান আছে। তবে আহতদের সহযোগিতার ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো নির্দেশনা আসেনি। কোনো নির্দেশনা আসলে সেই অনুযায়ী করা হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত