‘হিজাব না পরায়’ ৯ ছাত্রীর চুল কাটা সেই শিক্ষক সাময়িক বরখাস্ত

সিরাজদিখান (মুন্সিগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৫: ৫০
আপডেট : ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬: ৩৭

মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় হিজাব না পড়ায় বিদ্যালয়ের ৯ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় জড়িত সৈয়দপুর আব্দুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক রুমিয়া সরকারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি বিদ্যালয়টির বিজ্ঞান এবং স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা বিষয়ের শিক্ষিকা।

ওই শিক্ষিকাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করার বিষয়টি জানিয়েছেন সিরাজদিখান উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বির আহমেদ। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, স্থায়ী ব্যবস্থা নিতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

বিদ্যালয় ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা জানিয়েছেন, গতকাল বুধবার বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণিতে বিজ্ঞান ক্লাস নিচ্ছিলেন রুমিয়া সরকার। সে সময় ধর্মীয় আচার-আচরণ নিয়ে কথা হয়। ক্লাসের ৯ জন শিক্ষার্থী হিজাব ছাড়া ছিল। শিক্ষিকা পর্দার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে ওই শিক্ষার্থীদের ওপর ক্ষিপ্ত হন। একপর্যায়ে তিনি তাদের চুল কেটে দেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মাইসা জাহান বলেন, ‘আমার একটাই হিজাব ছিল। ওই হিজাব ময়লা হয়ে যাওয়ায় ধুয়ে দিয়েছিলাম, এ জন্য পরে যেতে পারিনি। ম্যাডামকে অনেক অনুরোধ করে বলেও আমি রক্ষা পাইনি। ম্যাডাম আমাদের চুল কেটে দিলেন।’

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের এক অভিভাবক মো. কহিনুর বলেন, ‘ধর্মের বিষয়টি অন্তর থেকে করতে হয়। বাচ্চারা হিজাব না পরে ভুল করছে। এটি তাদের বুঝিয়ে বলতে পারত। এটা না করে ৯টা বাচ্চার কারও ৪ আঙুল পরিমাণ, কারও ৬ আঙুল পরিমাণ করে চুল কেটে দিল। মেয়েরা খুব কান্নাকাটি করছে। স্কুলে আসতে চাচ্ছিল না।’

স্থানীয় একটি কলেজের অধ্যক্ষ মিয়া মো. ফরিদ এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’ ওই শিক্ষিকা কাঁচি কোথায় পেলেন—জানতে চাইলে অধ্যক্ষ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কাছেই ছিল।’

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের নির্দেশে আজ সকালে ৯ শিক্ষার্থীর মধ্যে চারজনের বাড়িতে গিয়েছিলাম। শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেছি। হিজাব না পরায় চুল কাটার বিষয়টি জানতে পেরেছি।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আজ সকাল ১০টার দিকে এ বিষয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, স্কুল কমিটির লোকজন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে স্কুলে বসেছিলাম। ধর্মীয় রীতি-নীতিতে উৎসাহিত করতে ওই শিক্ষিকা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে এমন একটি ঘটনা কারোরই কাম্য নয়।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত