ঘূর্ণিঝড় রিমাল প্রভাব: নদ-নদীর পানিতে প্লাবিত সুন্দরবন অঞ্চল

বাগেরহাট প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ মে ২০২৪, ১৭: ৪৯
Thumbnail image

প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের সব নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। আজ রোববার দুপুরের জোয়ারে নদীর পানি বাড়ার ফলে গোটা সুন্দরবনসহ তীরবর্তী বিভিন্ন নিম্ন অঞ্চল ও লোকালয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়েছে। 

এদিকে করমজলসহ বনের উঁচু এলাকাগুলোও দুপুরের জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে এতে এখনো বন্য প্রাণীর ক্ষতির কোনো খবর পাওয়া যায়নি। 

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, জেলার নদ-নদীর পানি সর্বোচ্চ ৫ ফুট পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে ঘূর্ণিঝড় যদি সন্ধ্যায় আঘাত হানে, তখন নদীতে ভাটি থাকায় জলোচ্ছ্বাসের বড় ক্ষতির সংখ্যা কম। 

সরেজমিন দেখা গেছে, ঘূর্ণিঝড় শুরুর আগেই অতি জোয়ারের পানিতে জেলা সদর মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা, মোংলা ও রামপাল উপজেলার নদীর তীরবর্তী অসংখ্য গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। 

বাগেরহাট সদরের দাড়াটানা সেতুসংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা লুইস বিশ্বাস ফরাজী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মারিয়া পল্লি ও পাশের দড়াটানা নদীর তীরবর্তী এই এলাকায় দেড় শতাধিক পরিবারের বসবাস। দুপুরের জোয়ারে নদীর পানি উপচে লোকালয়ে তাদের ঘরবাড়িতে ঢুকে পড়েছে।’ 

রোববার দুপুরে জোয়ারে গোটা সুন্দরবনসহ তীরবর্তী বিভিন্ন নিম্ন অঞ্চল ও লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়েছেপশুর নদের চিলা এলাকার বাসিন্দা একরাম সরদার বলেন, ‘বৃষ্টির সঙ্গে আস্তে আস্তে বাতাসও বাড়ছে। পোলাপান নিয়ে কী যে করব। আমাগো ঘর বেশি ভালো না। ঝড়ে কী যে হবে!’ 

এ বিষয়ে বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান মোহাম্মদ আল-বিরুনী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বাগেরহাটের প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি রোববার দুপুরে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সবচেয়ে বেশি পানি বেড়েছে জেলার মোংলা উপজেলার পশুর নদে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘মোংলা বন্দরের এই নদে দুপুরে বিপৎসীমার ৫ ফুট ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। আর বলেশ্বর ও ভৈরব নদে বিপৎসীমার দুই থেকে তিন ফুট ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।’ 

রোববার দুপুরে জোয়ারে গোটা সুন্দরবনসহ তীরবর্তী বিভিন্ন নিম্ন অঞ্চল ও লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়েছেএদিকে জোয়ারের পানিতে ভরে গেছে সুন্দরবন। সুন্দরবনের করমজল বন্য প্রাণী ও প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুপুরের জোয়ারে বনের করমজল কেন্দ্রসহ বেশির ভাগ বনভূমি জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে এখনো কোনো বন্য প্রাণীর ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।’ 

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। সুন্দরবনের অভ্যন্তরে বন বিভাগের সকল স্টেশনসহ ফাঁড়িতে দায়িত্বরত কর্মকর্তা ও বনরক্ষীরা নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত