Ajker Patrika

বলিহার রাজবাড়িতে চুরি করতে গিয়ে ধরা ভূমি অফিসের কর্মচারী

শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি  
আপডেট : ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ২২: ১১
চুরির করে নিয়ে যাওয়ার সময় জব্দ করা গ্রিল। ছবি: আজকের পত্রিকা
চুরির করে নিয়ে যাওয়ার সময় জব্দ করা গ্রিল। ছবি: আজকের পত্রিকা

বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার ডেমাজানি এলাকায় প্রাচীন নিদর্শন বলিহার রাজার কাছারিবাড়ি থেকে লোহার ১৭টি গ্রিল চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অফিস সহায়ক ফেরদৌস আলমকে হাতেনাতে আটক করেছে স্থানীয় জনগণ।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জান্নাতুল নাইম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

জানা গেছে, আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে গ্রাম পুলিশ স্বপন কুমার রবিদাসের সহায়তায় দুটি ভ্যানে করে গ্রিলগুলো নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। বেলা ১১টার দিকে গ্রামবাসী সেগুলো আটক করে এবং বেলা ২টার দিকে উপজেলা সহকারী কমিশনার ঘটনাস্থলে আসেন।

স্থানীয় মোকছেদুর রহমান মানিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৬টার দিকে গ্রাম পুলিশ স্বপন কুমার রবিদাসকে কাছারিবাড়ির সামনে দাঁড় করিয়ে রেখে দুটি ভ্যানে করে লোহার গ্রিলগুলো নিয়ে যাচ্ছিলেন ফেরদৌস আলম। তিনি তখন আমাদের জানিয়েছিলেন, লোহার গ্রিলগুলো উপজেলা পরিষদে নেওয়া হচ্ছে। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সহকারী কমিশনারের কাছে ফোন দিয়ে জানতে পারি, এগুলো মূলত চুরি করা হচ্ছে। তখন আমরা এগুলো আটকে রেখে প্রশাসন ও পুলিশকে খবর দিই। যদিও পুলিশ শেষ পর্যন্ত ঘটনাস্থলে আসেনি।’

জানতে চাইলে স্বপন কুমার রবিদাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাকে খুব ভোরে আমরুল ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অফিস সহায়ক ফেরদৌস আলম ফোন করে কাছারিবাড়িতে আসতে বলেন। সেখানে আমার উপস্থিতিতে আগে থেকেই খুলে রাখা কাছারিবাড়ির লোহার গ্রিলগুলো দুটি ভ্যানে করে আড়িয়া ইউনিয়নের কাটাবাড়িয়া দক্ষিণপাড়া (পতিতপাড়া) গ্রামে নিয়ে যান। আমি মনে করেছিলাম, সেগুলো উপজেলা পরিষদে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তবে এগুলো নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আমি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদের জানাইনি।’

গ্রিলগুলো পরিবহনে ভ্যানচালক দেলোয়ার হোসেন এবং ফুলমাহমুদ বলেন, ‘ফেরদৌস আলম আমাদের মালগুলো কাটাবাড়িয়া পতিতপাড়া গ্রামে নিতে বলেছিলেন। আমরা তাই করেছি। পরে ফেরদৌস এগুলো আমাদের আবারও কাছারিবাড়িতেই রেখে আসতে বললেন। আমরা সেগুলো আবারও নিয়ে এসেছি। এখন বুঝতে পারলাম, এগুলো চুরি করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।’

জানতে চাইলে ফেরদৌস আলম বলেন, ‘বলিহার রাজার কাছারিবাড়ি থেকে প্রায় সব হারিয়ে গেছে। তাই এগুলো খুলে উপজেলায় নিয়ে যাচ্ছিলাম। উপজেলা প্রশাসন এ বিষয়ে আমাকে কোনো নির্দেশনা দেয়নি।’

শাজাহানপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জান্নাতুল নাইম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্থানীয়দের দেওয়া সংবাদে চুরির ঘটনা জানতে পেরেছি। চুরি হওয়া মালপত্রগুলো উদ্ধার করে আমরুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের জিম্মায় দিয়েছি। জড়িত ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অফিস সহায়কের বিরুদ্ধে লিখিত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নায়েবকে নির্দেশ দিয়েছি। সেই সঙ্গে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকেও গ্রাম পুলিশের বিরুদ্ধে লিখিত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। এ ঘটনায় দ্রুতই আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।’

জানতে চাইলে আমরুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) সেলিমুজ্জামান বলেন, ‘লোহার মোট ১৭টি গ্রিল আমার জিম্মায় নিয়েছি। গ্রাম পুলিশ আমাকে কিছুই জানায়নি। বলিহার রাজার কাছারিবাড়ি রক্ষায় আমার চেষ্টা থাকবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত