Ajker Patrika

ঘরের মেঝেতে রক্তের দাগ, নারী নিখোঁজ

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ২১: ১৬
ঘরের মেঝেতে রক্তের দাগ, নারী নিখোঁজ

প্রতিদিনের মতো রাতের খাবার খেয়ে সাত বছরের নাতিকে নিয়ে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন রূপবানু (৫৮)। বাড়ির অন্য দুই ঘরে স্ত্রী–সন্তান নিয়ে ছিলেন দুই ছেলে। সকালে নাতির ঘুম ভাঙলে দেখে রূপবানু ঘরে নেই। মেঝেতে ছোপ ছোপ রক্তের দাগ। বের হয়ে মা-বাবাকে জানালে তাঁরা গিয়ে মেঝেতে রক্ত দেখতে পান। রূপবানুর খোঁজ শুরু করলে বাড়ির কিছু দূরে মেলে রূপবানুর ব্যবহৃত কাপড় ও একটি কম্বল। 

রূপবানুর সন্ধান জানতে চারপাশে খোঁজ শুরু হয়। বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্রে জাল ফেলেও চলে তাঁর অনুসন্ধান। কিন্তু রূপবানুর সন্ধান মেলেনি। 

আজ শনিবার কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পোড়ারচর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। 

যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর এবং কুড়িগ্রাম সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল আলম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

রূপবানু পোড়ারচর গ্রামের মজিবর রহমানের স্ত্রী। প্রায় ১২ বছর আগে তাঁর স্বামী মারা যান। তিন ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে রূপবানুর পরিবার। এর মধ্যে দুই ছেলেসহ একই সংসারে রূপবানু বাস করেন। 

রূপবানুর বড় ছেলে রুবেলের শাশুড়ি নাজমা জানান, বাড়ির লোকজন সকালে জানতে পারে রূপবানু ঘরে নাই। মেঝেতে রক্তের দাগ। এরপর সবাই খোঁজখবর নেওয়া শুরু করে। কিন্তু শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনোও খোঁজ মেলেনি। পরে ছেলেরা থানায় যায় পুলিশকে লিখিতভাবে জানাতে। 

নাজমা বলেন, ‘রাতে নাতির সঙ্গে ঘুমায় ছিল। সকালে নাতি দেখে দাদি নাই। পরে ছেলেরা গিয়ে দেখে ঘরে রক্ত, কিন্তু মা নাই। সব জায়গায় খোঁজ করছে। নদীতে জাল ফেইলা খুঁজছে। কিন্তু পাওয়া যায় নাই।’ 

নিখোঁজ রূপবানুর পরিণতি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে নাজমা আরও বলেন, ‘আমার বিয়ান খুব ভালা মানুষ। বেটিরে ওই বাড়িতে বিয়া দিছি। কোনোদিন বিয়ানের নামে কোনো দোষ শুনি নাই। গ্রামে তার কোনো শত্রু নাই। কেমনে কী হইলো কে জানে।’ 

চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর বলেন, ‘ওই নারীর সঙ্গে কী ঘটেছে তা এখনো বলা যাচ্ছে না। ঘরের মেঝেতে রক্ত পড়ে আছে। বাড়ির একটু দূরে কাপড় পড়ে আছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে কেউ তুলে নিয়ে গেছে। পাশে নদী। তার ভাগ্যে কী ঘটেছে কে জানে। এখন পুলিশ তদন্ত করলে ঘটনা বেরিয়ে আসবে।’ 

ওসি নাজমুল আলম বলেন, ‘ঘটনাস্থলে পুলিশ সদস্য পাঠানো হয়েছে। ওই নারী কোনো ঘটনার শিকার, নাকি অভিমান করে নিজে থেকে কোথাও চলে গেছেন—তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাঁর ঘরে বল প্রয়োগ করে প্রবেশের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। মেঝেতে যে রক্ত, তার পরিমাণও সামান্য। পরিবারের লোকজনও কোনো কিছু নিশ্চিত করে বলতে পারছে না। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত