Ajker Patrika

‘সবকিছুর দাম বাড়লে গরিবের হইবেটা কী’

আব্দুর রহিম পায়েল, গঙ্গাচড়া (রংপুর)
‘সবকিছুর দাম বাড়লে গরিবের হইবেটা কী’

‘একদিন শুনি চাউলের দাম বাড়ছে আর একদিন শুনি ত্যালের। তারপরে শুনি বিদ্যুতের দাম বাড়ছে। আজকে গ্যাস কিনবার আসি শুনতেছি যে এরও দাম বাড়ছে। এই এক মাসে যে কত কিছুর দাম বাড়াইলো। কোন জিনিসটার দাম বাড়া বাকি রাখছে? বাচ্চারা যে লেখাপড়া করবে সে খাতা-কলমেরও দাম বাড়ে দিছে। এইভাবে যদি সবকিছুর দাম বাড়ায় তাহলে হামার গরিবের হইবেটা কী?’

রংপুরের গঙ্গাচড়া বাজারে গত শুক্রবার গ্যাসের সিলিন্ডার কিনতে এসে আক্ষেপ করে কথাগুলো বলছিলেন নাজনীন আক্তার (৩৫)। লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার বাসিন্দা নাজনীনের স্বামী মনোয়ারুল ইসলাম গঙ্গাচড়ায় একটি এনজিওতে চাকরি করেন।
কয়েক মাস ধরে দফায় দফায় নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির কারণে জেরবার হয়ে পড়েছে নাজনীন ও মনোয়ারুল দম্পতির সংসার। নাজনীন জানান, তাঁদের পরিবারে স্বামী-স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে মিলিয়ে চার সদস্য আছেন। স্বামী মনোয়ারুল প্রতি মাসে বেতন পান ১৪ হাজার টাকা। এই টাকা দিয়ে বাড়ি ভাড়া, খাবার ও ছেলেমেয়ের পড়াশোনার খরচ চালাতে হয়। দুর্মূল্যের বাজারে দুর্বিষহ জীবন যাপন করতে হচ্ছে।

বাজারে কথা হয় সিলিন্ডার নিতে আসা বড়বিল ইউনিয়নের ভ্যানচালক আলিফ উদ্দিনের (৫৫) সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘কালকে রাতে গ্যাস ফুরি গেইছে। আজ সকালে তোমার চাচি ১ হাজার ২৫০ টাকা বের করি দিল যে একটা সিলিন্ডার কিনি আনো। গ্যাস কিনবার আসি দেখংচোল এখন ১২ কেজি গ্যাসের দাম ১ হাজার ৫২৫ টাকা। তোরায় কন বাবা, এ রকম করি যদি সবকিছুর দাম বাড়ে তাহলে হামারগুলার কী হইবে। হামরা তো আর সরকারি চাকরি করি না যে মাস গেইলে ব্যাংক থাকি টাকা তোলমো আর খরচ করমো। আজকে বাড়িত যেয়া তোমার চাচিক কইম, গাছের পাতা সামটে ভাত আনদোও। তা ছাড়া আর বুদ্ধি নাই।’

নাজনীন ও আলিফের মতো গ্যাস কিনতে আসা প্রায় ৩০ জনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এভাবে জিনিসপত্রের দাম বাড়ার কারণে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষেরা। তাদের অভিযোগ, সরকার যতটুকু দাম বাড়ায়, ব্যবসায়ীরা এর চেয়ে বেশি দামে পণ্য বিক্রি করেন।

সরকার ২ ফেব্রুয়ারি ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম নির্ধারণ করে ১ হাজার ৪৯৮ টাকা। তবে শুক্রবার উপজেলার বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা গেছে, বিক্রেতারা অতিরিক্ত ৪০-৫০ টাকা বেশি আদায় করছেন।

এ বিষয়ে বিক্রেতারা বলছেন, চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস সিলিন্ডার পাওয়া যাচ্ছে না। তাই তাঁদের বেশি দামে কিনে বাধ্য হয়ে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

যোগাযোগ করা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদ তামান্না বলেন, বেশি দামে গ্যাস বিক্রির সুযোগ নেই। এটা সরকারি আদেশের বিরুদ্ধে যায়। এর বিপরীতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সুযোগ রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণপিটুনিতে নিহত জামায়াত কর্মী নেজাম ও তাঁর বাহিনী গুলি ছোড়ে, মিলেছে বিদেশি পিস্তল: পুলিশ

এক ছাতায় সব নাগরিক সেবা

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত