Ajker Patrika

কথা-গানে সাংস্কৃতিক সংগ্রাম

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
কথা-গানে সাংস্কৃতিক সংগ্রাম

সালমা শবনম ও মজুমদার বিপ্লব বসলেন বেদিতে। তাঁদের পেছনে একদল শিল্পী। পেছনে লালরঙা ব্যাকড্রপে পতাকা হাতে মানুষের গ্রাফিতি। লেখা, ‘জনসমুদ্রে জাগিল জোয়ার’। দুজনের পাঠে আর শিল্পীদের সুরে উঠে এল বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস, বাঙালির ধারাবাহিক সাংস্কৃতিক সংগ্রামের কথা।

নারী দিবসে গতকাল শুক্রবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে ছায়ানট মিলনায়তনে বসেছিল এই আসর। সাংস্কৃতিক সংগঠন জলতরঙ্গ আয়োজন করে এটি। দেড় ঘণ্টার আয়োজনে হালিমুজ্জামান খানের প্রাঞ্জল গ্রন্থনায় গাওয়া হলো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, অতুলপ্রসাদ সেন, সলিল চৌধুরী, কাজী নজরুল ইসলাম, ডি এল রায়, সৌম্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর, গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার, সুধীন দাশগুপ্ত, সিকান্‌দার আবু জাফর, গোবিন্দ হালদার, নজরুল ইসলাম বাবু প্রমুখের কালজয়ী গান। সঙ্গে ছিল নির্মলেন্দু গ‌ুণ, অ্যালেন গিন্সবার্গের কবিতা।

গাইলেন জাকির হোসেন তপন, তানভীরা আশরাফ শ্যামা, মাসুদা খান, এণা রায়, শান্তন সাহা রায়, শেফতা আলম অদিতি, মনজুর রশীদ, হুমায়ূন আজম রেওয়াজ, রামিসা চৌধুরী, আলপনা বন্দ্যোপাধ্যায়, আল মুনীর, মহুয়া সমাদ্দার, রনজিত রায়, স্বপ্না নন্দী, শঙ্কর সরকার, ফয়সাল তানভীর। পাঠে ছিলেন সালমা শবনম ও মজুমদার বিপ্লব।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ছিল ছোট আলোচনা। তাতে অংশগ্রহণ করেন তিন শহীদ বুদ্ধিজীবীর সন্তান জাহীদ রেজা নূর, শাওন মাহমুদ ও আসিফ মুনীর। জাহীদ রেজা নূর বাংলা-বাঙালির সংস্কৃতির কথা বলতে গিয়ে রাশিয়াতে তাঁর অভিজ্ঞতার কথা শোনানোর সময় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। পড়ালেখা করতে ১৯৮৬ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নে গিয়েছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভাষাতত্ত্ব ও বিশ্বসাহিত্য নিয়ে কুবান স্টেট ইউনিভার্সিটিতে পড়তে গিয়েছিলাম। সেখানে একদিন ক্লাসে শিক্ষক বললেন, পৃথিবীতে একটি দেশ, যারা ভাষার প্রশ্নে আন্দোলন করে একটি দেশ বানিয়ে ফেলেছে, সেই দেশটির নাম বাংলাদেশ। শিক্ষক আমাকে বললেন, তুমি তোমার দেশ নিয়ে কিছু কথা বলো। সে সময় আমি দাঁড়ালাম, অনেকক্ষণ কথা বলার চেষ্টা করলাম, পারিনি। ঝর ঝর করে কেঁদেছি।’ 
জাহীদ রেজা নূর আরও বলেন, ‘আমি ১৯৮৬ সালের কথা বলছি, তখন বাংলাদেশ ঝড়-বন্যা, খুনোখুনি, জাতির পিতাকে হত্যা করা হয়েছে। তখন বাংলাদেশ শব্দটা যে এ রকম গর্বের সঙ্গে উচ্চারণ করা যায়, আমার ধারণার মধ্যে ছিল না।’

আসিফ মুনীর বলেন, ‘সাংস্কৃতিক আন্দোলনের একটা বড় ভূমিকা আছে বাঙালি জাতির গড়ে ওঠার পেছনে। আপনারা আমাদের যে সম্মান জানিয়েছেন, আমরা এগুলো আমাদের প্রয়াত মা-বাবার সঙ্গে ভাগ করে নিচ্ছি।’

শাওন মাহমুদ বলেন, ‘আমি গণসংগীত ছাড়া একটা দিনও পার করি না। যখনই কোনো গান গুনগুন করে গাইছি, দেখি সেটি গণসংগীতেরই কোনো লাইন। আমি লুতফর রহমান স্যারের কাছে শিখেছি। অদ্ভুত সব গান জানা আছে আমার। আমাকে যদি সুযোগ দেওয়া হয়। আমি এই প্রজন্মকে এগুলো তুলে দেব। কারণ, অনেক গানই এখন অনেকের জানা নেই।’

জলতরঙ্গের সভাপতি মাসুদা খান ইতির সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন তপন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের সংখ্যালঘু ইস্যুতে বাংলাদেশের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাল দিল্লি

‘ক্রিকেটাররা আমাকে ন্যুড পাঠাত’, বিস্ফোরক ভারতের সাবেক কোচের সন্তান

নালিতাবাড়ীতে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে যুবক আটক

পারদর্শী হয়ে উঠছে বাংলাদেশ, স্থিতিশীল হচ্ছে ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক: ভারতীয় বিশেষজ্ঞ

‘শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ হাসবে’ ব্যানারে বিমানবন্দর এলাকায় আ.লীগের মিছিল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত