Ajker Patrika

ঋণ শোধ না করলে ১২ কৃষকের মামলা চলবে

শাহীন রহমান, পাবনা 
ঋণ শোধ না করলে ১২ কৃষকের মামলা চলবে

ঋণ পরিশোধ করেও জেলে গিয়েছিলেন পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার ভাড়ইমারী গ্রামের সেই কৃষকদের এমন দাবি মিথ্যা। এতে ব্যাংক কর্মকর্তাদের কোনো অনিয়মের প্রমাণ খুঁজে পাওয়া যায়নি। ফলে ঋণের টাকা সম্পূর্ণ পরিশোধ না করা পর্যন্ত মামলা চলবে।

দেশব্যাপী আলোচিত ঋণখেলাপি মামলায় ১২ কৃষককে গ্রেপ্তারের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন তথ্য।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন তদন্ত কমিটির প্রধান সমবায় ব্যাংকের ডিজিএম আহসানুল গনি। এর আগে বুধবার ঋণ গ্রহীতা কৃষকদের দায়ী করে এ তদন্ত প্রতিবেদন ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপকের কাছে জমা দেওয়া হয়।

আহসানুল গনি বলেন, কৃষকেরা নির্দোষ হলে তো মামলাই হতো না। উনারা সময়মতো টাকা পরিশোধ না করাতেই মামলা হয়েছিল এবং তাঁরা গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। ঋণ পরিশোধ করেও জেলে গেছেন, কৃষকদের এমন অভিযোগ সত্য নয়।

আহসানুল গনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর গাফিলতি আছে কিনা সেটা জানার চেষ্টা করেছি। কিন্তু ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোনো দোষ পাইনি।’ কৃষকেরা সমিতির সভাপতির কাছে টাকা পরিশোধ করেছেন, কিন্তু কোনো রসিদ দেখাতে পারেননি। কৃষকদের সমিতির সভাপতি বা সেক্রেটারির গাফিলতি থাকতে পারে।

মামলা-পরবর্তী পদক্ষেপ কেমন হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে আহসানুল গনি বলেন, কৃষকেরা অথবা অন্য কেউ যদি টাকা পরিশোধ করেন তাহলে মামলা প্রত্যাহার হবে, না হলে মামলা চলবে।

তদন্ত কমিটির এই প্রধান বলেন, ভাড়ইমারী উত্তরপাড়া সবজিচাষি সমবায় সমিতির ৪০ কৃষককে ২০১৬ সালে ১৬ লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হয়। এক একজন কৃষক ঋণ পান ৪০ হাজার টাকা। নির্ধারিত সময়ে ঋণ ও সুদের টাকা পরিশোধ না করায় সমিতির ৩৭ কৃষকের বিরুদ্ধে মামলা করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

তবে তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছেন অভিযুক্ত কৃষকেরা। সমিতির সভানেত্রী বিলকিস আক্তার বলেন, ‘আমরা ১৬ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ১৩ লাখ শোধ করেছি।

কিন্তু উনাদের (ব্যাংক কর্তৃপক্ষ) কাছে নাকি আমাদের আরও ১৩ লাখ টাকা ঋণ আছে। এত টাকা কীভাবে হয়। উনাদের কাছেই তো রসিদ থাকার কথা। কৃষকদের কাছ থেকে ১৫ শতাংশ সুদ কীভাবে তাঁরা দাবি করেন?’

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে ঈশ্বরদী উপজেলার ভাড়ইমারী গ্রামের ৪০ কৃষক ওই সমিতির নামে দলগত ঋণ হিসেবে ১৬ লাখ টাকা নেন। এর মধ্যে কেউ ২৫ হাজার, কেউ ৪০ হাজার টাকা করে ঋণ পান। দীর্ঘদিনেও সেই ঋণ ও সুদের টাকা পরিশোধ না করায় ২০২১ সালে ৩৭ কৃষকের নামে মামলা করে ব্যাংকটি। সম্প্রতি আদালত তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে গত ২৫ নভেম্বর ১২ কৃষককে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ।

বিষয়টি গণমাধ্যমে আসার পর ব্যাপক আলোচনা­-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। পরে গত ২৭ নভেম্বর পাবনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২-এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক শামসুজ্জামান গ্রেপ্তার হওয়া ১২ জনসহ ৩৭ কৃষকের জামিন মঞ্জুর করেন।

পরে কৃষকদের বিরুদ্ধে ঋণ-সংক্রান্ত মামলা ও ঋণের কিস্তি নিয়ে জটিলতার বিষয়টি তদন্ত করতে তিন সদস্যে তদন্ত কমিটি করে বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মিডিয়া ছুটায় দেব, চেনো আমাদের’—সাংবাদিককে হুমকি কুড়িগ্রামের এসপির

মডেল মেঘনাকে আটকের দিনই ঢাকা ছাড়েন সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা

সৌদি রাষ্ট্রদূতের অভিযোগের ভিত্তিতেই মডেল মেঘনা কারাগারে

মডেল মেঘনার পরিবারের মাধ্যমে সুরাহার চেষ্টা করেছিল পুলিশ

বান্দরবান, মণিপুর, মিজোরাম ও রাখাইন নিয়ে খ্রিষ্টান রাষ্ট্র করার ষড়যন্ত্র চলছে: বজলুর রশীদ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত