মাকে নতুন বাড়ি দেওয়া হলো না বায়েজিদের

ধামইরহাট (নওগাঁ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২১ আগস্ট ২০২৪, ১০: ২০

মাকে নতুন একটি বাড়ি উপহার দেওয়ার স্বপ্ন ছিল বায়েজিদ বোস্তামির (২৩)। ছয় মাস বয়সী শিশুকে সুশিক্ষিত করার পাশাপাশি একমাত্র আদরের ছোট বোনকে বড় কর্মকর্তা হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্নও দেখেছিলেন বায়েজিদ। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিয়ে ৫ আগস্ট ঢাকার আশুলিয়া থানার সামনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন তিনি। শেষ হয়ে যায় তাঁর সব স্বপ্ন। ছেলের এই অকালমৃত্যু মানতে পারছেন না বায়েজিদের মা রেনুয়ারা বেওয়া। 

বায়েজিদ নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার উমার ইউনিয়নের কৈগ্রাম এলাকার মৃত সাকোয়াদ হোসেনের ছেলে। তিনি আশুলিয়ার ভেনেসা বাংলাদেশ লিমিটেড নামের একটি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। দুই বছর আগে রিনা আক্তার নামের এক পোশাককর্মীকে বিয়ে করেন বায়েজিদ। তাঁর ছয় মাস বয়সী একটি ছেলে রয়েছে। সংসারে বায়েজিদই ছিলেন একমাত্র ভরসা। 

জয়পুরহাটের প্রিন্সের চাতাল এলাকার আঞ্জুয়ারা বেগম বলেন, ‘বায়েজিদ আর আমি ঢাকায় একই ফ্যাক্টরিতে কাজ করতাম। ওই দিন বিকেলে সেনাবাহিনীর সদস্যরা আংশিক পোড়া মানিব্যাগের ভেতর থেকে বায়েজিদের ছবি ও আইডি কার্ডসহ একটি মোবাইল পান। এরপর ওই মোবাইল থেকে বায়েজিদের স্ত্রীর কাছে ফোন দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়, বায়েজিদ মারা গেছে।’ 

বায়েজিদের স্ত্রী রিনা আক্তার বলেন, ‘আশুলিয়া থানা থেকে কে বা কারা ফোন দিয়ে বলেন, আইডি কার্ড, ছবি ও মোবাইলসহ বায়েজিদ নামের এক ব্যক্তির পোড়া লাশ পাওয়া গেছে। এরপর কয়েকজন ছাত্র কাগজে সই দিয়ে লাশসহ হাতখরচের জন্য কিছু টাকা দিয়ে স্বামীর লাশ হস্তান্তর করেন।’ 

বড় ভাই কারিমুল বলেন, ‘বায়েজিদকে আশুলিয়া থানায় গুলি করে মেরে পুড়িয়ে ফেলে পুলিশ। আইডি কার্ড দেখে পরিচয় শনাক্ত করার পর ওখানকার ছাত্র সমন্বয়কারী ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ৫ আগস্ট বিকেলে বায়েজিদের স্ত্রীর হাতে লাশ তুলে দিলে গভীর রাতে গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হয়। পরদিন পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়েছে।’ 

ধামইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাহাউদ্দীন ফারুকী বলেন, ‘বায়েজিদের মৃত্যুর মামলা আমরা তো এখানে করতে পারব না। তিনি যেখানে মারা গেছেন, সেই এলাকার থানায় মামলা করতে হবে। পোস্টমর্টেম করার দায়িত্বও তাঁদের। আমরা এখান থেকে বায়েজিদের পরিবারকে সার্বিক সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছি।’ 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত