উৎপাতে কমছে পরিযায়ী পাখি

কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
Thumbnail image

শীতের শুরু থেকেই অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর হয়ে থাকে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদী, পারকি সমুদ্রসৈকত, মেরিন একাডেমি ও কেইপিজেড লেক। বহু বছর ধরে এ এলাকাগুলো নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে বেছে নেয় পরিযায়ী পাখিরা। প্রতিবছর শীতের সময় এসব পাখি দেখতে অনেকেই বেড়াতে আসেন সৈকত এলাকায়।

তবে শিকারিদের উৎপাত আর শিল্পোন্নয়নের কাজের কারণে কয়েক বছর ধরে পাখির আগমন কমে গেছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।

জানা গেছে, কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ উপকূলের এলাকাগুলো হাড়-কাঁপানো শীত শুরুর আগে বিভিন্ন প্রজাতির দেশি-বিদেশি পাখির আগমনে মুখর হয়ে ওঠে। নিরাপদ আশ্রমে পরিণত হয় কর্ণফুলী নদী, পারকি সৈকত, কেইপিজেডের লেক, মেরিন একাডেমি, রায়পুর ইউনিয়নের গহিরা, প্যারাবনসহ দেয়াঙ পাহাড়। পাখির অভয়াশ্রম হিসেবেই লোকমুখে পরিচিত ছিল এসব এলাকা। ঝাঁকে ঝাঁকে পরিযায়ী পাখির আগমনে যুক্ত হতো মৌসুমি বিনোদন। প্রতিদিন এখানে পাখির কলতান উপভোগ করতে দূরদূরান্ত থেকে আসতেন পাখিপ্রেমীরা। তবে এবার পাখির সংখ্যা অনেকটাই কমে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। শুধু প্যারাবনই নয়, চার-পাঁচ বছর ধরে সব দেয়াঙ পাহাড়ে কমে গেছে অতিথি পাখির আনাগোনা।

সরেজমিনে দেখা যায়, সাগর ও পাহাড়ি লেকে ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি  উড়ছে। দেখা মেলে নানা বর্ণের ছোট-বড় দেশিও পরিযায়ী পাখির। সব মিলিয়ে পাখিদের অভয়াশ্রমে অন্য রকম এক আবহ সৃষ্টি হয়েছে।

কেইপিজেডের ভেতরে লেকের দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হয়ে আনোয়ারা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী জাকিয়া সুলতানা শাকি বলেন, ‘লেকের পাশে অসংখ্য পাখি দেখে অনেক ভালো লাগছে।’

চট্টগ্রাম শহর থেকে ঘুরতে আসা আহসান উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘শীত কমে গেলে পরিযায়ী পাখিরা আবার নিজ ভূমিতে চলে যায়।বাংলাদেশে অবকাশযাপনের ইতি ঘটিয়ে আপন ভূমিতে যাওয়ার জন্য আবারও হাজার মাইল পাড়ি দেয় তারা। প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে স্থানীয় প্রশাসনকে সজাগ দৃষ্টি রাখারও আহ্বান জানাচ্ছি।’

চাতরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন চৌধুরী সোহেল বলেন, ‘পরিযায়ী পাখি আমাদের দেশের জন্য আশীর্বাদ। এসব পাখি আমাদের প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করে।’

কেইপিজেডের পমহাব্যবস্থাপক মো. মুশফিকুর রহমান বলেন, জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কেইপিজেড কর্তৃপক্ষ নানা উদ্যোগ নিয়েছে। পাখির জন্য ১৭টি কৃত্রিম লেক তৈরি করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির সমন্বয়ক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, খাদ্য-সংকট ও পরিবেশ না পাওয়ার কারণেও ইদানীং পরিযায়ী পাখি আসার হার আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে। নানা কারণের মধ্যে দুটি কারণ হলো যেসব এলাকায় এসব পাখি আশ্রয় নেয়, তার পরিবেশ বিঘ্নিত হওয়া ও শিকারিদের উৎপাত। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত