পাবজি ও ফ্রি-ফায়ারে মত্ত, পড়াশোনায় নেই মনোযোগ

তাড়াইল (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ অক্টোবর ২০২২, ১২: ০৭
Thumbnail image

কিশোরগঞ্জের তাড়াইলের গ্রামগঞ্জ, বাজার, ফাঁকা জায়গা, অলিগলিতে ছড়িয়ে পড়েছে মোবাইল ফোনের ফ্রি-ফায়ার ও পাবজি গেম। এতে কিশোর-তরুণ শিক্ষার্থীরা নিয়মিত পড়াশোনার টেবিল থেকে ছিটকে পড়ছে।

অভিভাবক জানান, করোনার লকডাউনের সময় কিশোর-তরুণেরা মাঠে খেলাধুলাও করতে পারেনি। এমন ঘরবন্দীজীবন এর আগে তারা কখনোই দেখেনি। বলা যায়, শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল; আর সে কারণেই তারা মোবাইল ফোনে ভিডিও গেমসের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে।

তাড়াইল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম ফ্রি-ফায়ার গেমের ভয়ংকর দিক সম্পর্কে আজকের পত্রিকাকে বলেন, বর্তমানে এই ফ্রি-ফায়ার নামক গেমে সবচেয়ে বেশি আসক্ত হচ্ছে স্কুল-কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। অনেকেই এই খেলার পেছনে অর্থ ব্যয় করছে। অভিভাবকসহ সমাজের সবাই মিলে এ বিষয়ে তদারকি না করলে ভবিষ্যতে ফ্রি-ফায়ার নামক গেম মাদকের চেয়ে বেশি ভয়ংকর হতে পারে বলে মনে করেন তিনি। তাই এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে।

জানা গেছে, ইন্টারনেট ব্যবহার করে মোবাইল ফোনের ফ্রি-ফায়ার ও পাবজি গেম খেলতে হয়। এ ছাড়া এই খেলার খেলোয়াড়রা যেভাবে কথা বলে তা দেখলে মনে হবে পাগল। সারাদিনের বকাবকিতে তাদের ঘুমেরও প্রভাব ফেলে।

একাধিক শিক্ষার্থী বলে, আগে গেমস সম্পর্কে কিছু জানত না তারা। এখন নিয়মিত ফ্রি-ফায়ার গেমস খেলার নেশা হয়ে গেছে। মাঝেমধ্যে নেট সমস্যায় এই গেমস খেলতে না পারলে মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলতে ইচ্ছে হয়। ফ্রি-ফায়ার গেমস যে একবার খেলবে, সে আর তা ছাড়তে পারবে না।

শিক্ষার্থী আরও বলে, ফ্রি-ফায়ার গেম খেলতে ডায়মন্ড কিনতে হয়। ১০০ ডায়মন্ডের দাম ৮০ টাকা। ১০৬০ ডায়মন্ডের দাম ৭৯০ টাকা। মেম্বারশিপ সপ্তাহে ১৭০ টাকা, মাসিক ৫১০ টাকা। এ ছাড়া প্রতিটি ইভেন্টে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা খরচ না করলে কিছুই হয় না।

তারা আরও বলে, গেমটিতে প্রথমে কোনো খরচ ছিল না; কিন্তু পুরোপুরি মনোযোগী হলে এমন কিছু জিনিস আছে, যা না কিনলেই নয়। যেমন অলকের দাম ৪০০, একজন খেলোয়াড়ের জার্সি ৩০০, নতুন ইভেন্ট এলেই ২০০০-এর নিচে যাওয়া যায় না। সম্পূর্ণ ড্রেস কিনতে লাগে ১২০০ টাকা আর রেগুলার ইভেন্টের কথা তো বলাই বাহুল্য। 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক বলে, ছেলেমেয়েরা অনলাইন ক্লাসের নাম করে নতুন মোবাইল কিনেছে; কিন্তু ক্লাসে তাদের বিন্দুমাত্র মনোযোগ নেই। এভাবে চলতে দেওয়াটা ভালো ফল বয়ে আনবে না। দেশ, সমাজ ও জাতি অতি দ্রুত ধ্বংসের কবলে পড়তে যাচ্ছে। ব্লু-হোয়েলের মতো ভয়ংকর রূপ নেওয়ার আগেই এই খেলা 
বন্ধ করা দরকার। সরকারের উচিত এ ব্যাপারটিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত