পূর্বাচল নতুন শহর: মুখ থুবড়ে পড়া প্রকল্পে ১৬টি সচল গাড়ি

তোফাজ্জল হোসেন রুবেল, ঢাকা
প্রকাশ : ১৩ জুন ২০২৪, ০৯: ৫৪
আপডেট : ১৩ জুন ২০২৪, ০৯: ৫৫

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পটি তিন দশকে বসবাসের উপযোগী করা না গেলেও নানাভাবে অর্থ খরচ থেমে নেই। বিশেষ করে প্রকল্পের নামে যানবাহন ব্যবহারের বিষয়টি রাজউকেই বেশ আলোচিত। মুখ থুবড়ে পড়া প্রকল্পে ১৬টি এসইউভি, পিকআপ ও মাইক্রোবাস এবং ২৪টি মোটরসাইকেল ব্যবহারকে অস্বাভাবিক হিসেবে দেখছেন খোদ রাজউকের কর্মকর্তারাই। এসব যানবাহন কী কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

নথি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১৪টি গাড়ি চালু থাকা অবস্থান সেনা কল্যাণ সংস্থাকে দেওয়া কাজের সঙ্গে আরও দুটি গাড়ির খরচ ধরা হয়েছে। ফলে পুরো প্রকল্পে ছয়টি এসইউভি, পাঁচটি পিকআপ, তিনটি মাইক্রোবাস এবং দুটি অন্য গাড়ির ব্যবহার দেখানো হচ্ছে। একই প্রকল্পে দায়িত্বরত লোকজনের নামে আরও ২৪টি মোটরসাইকেলের ব্যবহার দেখানো হচ্ছে।

জানা যায়, প্রতিটি এসইউভি বা পিকআপের জন্য প্রতি মাসে ২০০ লিটার জ্বালানি বরাদ্দ দেওয়া হয়। মোটরসাইকেলের জন্যও প্রতি মাসে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ জ্বালানি বরাদ্দ থাকছে। 

পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের পরিচালক নুরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, যাঁরা দায়িত্ব পালন করেন, তাঁরাই গাড়ি ব্যবহার করছেন। জিপের জন্য প্রতি মাসে ২০০ লিটার আর মোটরসাইকেলের জন্য ৩০ লিটার, চাহিদামাফিক একটু বেশি জ্বালানি বরাদ্দ দেওয়া হয়।

রাজউকের প্রকৌশল দপ্তর সূত্রে জানা যায়, একটি আধুনিক শহর করার জন্য ১৯৯৫ সালের জুলাই মাসে ৬ হাজার ২৭৭ দশমিক ৩৬ একর জমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়। পুরো প্রকল্পকে ৩০টির বেশি সেক্টরে ভাগ করে সেখানে ২৬ হাজার ২১৩টি আবাসিক প্লট করা হয়েছে। এর ব্যয় ৭ হাজার ৭৮২ কোটি ১৪ লাখ টাকা ধরা হলেও সর্বশেষ সংশোধন অনুযায়ী তা ৬ হাজার ৪৪৮ কোটি টাকা। কাগজপত্রে পুরো প্রকল্পের উন্নয়নকাজ শেষ বলা হলেও অভ্যন্তরীণ রাস্তা ও সারফেস ড্রেন নির্মাণ, লেক উন্নয়ন, সেন্ট্রাল আইল্যান্ড, ড্রেনেজ সিস্টেম, ফুটপাত নির্মাণের বেশ কিছু কাজ বাকি।

সূত্রমতে, প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিপুলসংখ্যক যানবাহনের ব্যবহার দেখানো হচ্ছে। তিন দফা সময় বাড়িয়ে ২০১০ সালের মধ্যে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা ছিল। এরপর পর্যায়ক্রমে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর, ২০২০ সালের জুন, ২০২১ সালের জুন, ২০২২ সালের জুনে শেষ করার সময় ঠিক করা হলেও কোনোটিই কাজে আসেনি। সর্বশেষ ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছে। এ সময়েও কাজ শেষ হবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান ওই কর্মকর্তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা জানান, পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে জড়িত নন, এমন কর্মকর্তা ও প্রকৌশলীরাও প্রকল্পের গাড়ি চালাচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে সদস্য (পরিকল্পনা) মো. নাসির উদ্দীন ব্যবহার করছেন ঢাকা মেট্রো ঘ-১১-৬৯৬৩ নম্বর গাড়ি। পরিচালক (প্রশাসন) মো. মমিন উদ্দিন ব্যবহার করছেন ঢাকা মেট্রো ঘ-১১-৬৯৬২ নম্বর গাড়ি। প্রধান প্রকৌশলী (বাস্তবায়ন) উজ্জ্বল মল্লিক ঢাকা মেট্রো ঘ-১৪-২৫০৭ নম্বর এবং তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোবারক হোসেন ঢাকা মেট্রো ঘ-১৪-১৬৪৩ নম্বর গাড়ি ব্যবহার করছেন।

জানা যায়, সদস্য (পরিকল্পনা) নাসির উদ্দীন ও পরিচালক মমিন উদ্দিন প্রাধিকারপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে সুদবিহীন গাড়ির ঋণ সুবিধা পেয়েছেন। 
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে রাজউক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) ছিদ্দিকুর রহমান সরকারকে ফোন করেও পাওয়া যায়নি। পরিচালক মো. মমিন উদ্দিন বলেন, ‘আমার কোনো মন্তব্য নেই।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত