Ajker Patrika

নারীর হাড়ের সুরক্ষায়

পুষ্টিবিদ নাহিদা আহমেদ
নারীর হাড়ের সুরক্ষায়

পুরুষদের তুলনায় নারীদের হাড় ক্ষয় এবং হাড়-সম্পর্কিত অন্যান্য রোগের প্রবণতা বেশি। ৩০ বছর বয়স থেকে নারীরা হাড়ের ভর হারাতে শুরু করেন। বৃদ্ধ বয়সে হাড় ক্ষয় রোধে আগে থেকে সতর্ক হতে হবে। হাড়ের সুস্থতা বজায় রাখতে খাদ্যতালিকায় হাড় মজবুতকারী খাবার যোগ করতে পারেন। হাড় ভালো রাখতে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ‘ডি’র গুরুত্ব অপরিসীম। ক্যালসিয়াম হাড় ও দাঁতের গঠনকে শক্তিশালী করে। ভিটামিন ‘ডি’ ক্যালসিয়াম শোষণকে উন্নত এবং হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে। এগুলো ছাড়া আরও বেশ কিছু পুষ্টি উপাদান হাড় গঠনে সাহায্য করে।

ভিটামিন ‘ডি’
শক্তিশালী হাড় এবং পেশির জন্য ভিটামিন ‘ডি’ প্রয়োজনীয়। ভিটামিন ‘ডি’ ছাড়া আমাদের শরীর কার্যকরভাবে ক্যালসিয়াম শোষণ করতে পারে না। অস্টিওপেনিয়া, অস্টিওপোরোসিস এবং অন্যান্য হাড়ের রোগের বিরুদ্ধে সুরক্ষার জন্য কমপক্ষে রক্তে ভিটামিন ‘ডি’র পরিমাণ ৩০ মিলিলিটার হওয়া প্রয়োজন। রক্তে ভিটামিন ‘ডি’র মাত্রা কম হলে হাড়ের ঘনত্ব কম থাকে। দুর্ভাগ্যবশত, বিশ্বব্যাপী ভিটামিন ‘ডি’র ঘাটতি খুবই সাধারণ সমস্যা। সূর্যের আলো প্রতিদিন ২০ মিনিট গায়ে লাগালে এবং সূর্যের আলোয় বড় হওয়া গরু ও ছাগলের মাংস, কলিজা ও দুধ, দুধ ও দুগ্ধজাতীয় খাবারে ভিটামিন ‘ডি’ পাওয়া যায়।

ফসফরাস ও ম্যাগনেসিয়াম
ম্যাগনেসিয়াম শরীরের সঠিক ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ‘ডির’ মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং হাড়ের ঘনত্ব ও হাড়ের স্ফটিক গঠন উন্নত করতে পারে। গম, ভুট্টা, শস্যদানা, বাদাম, মিষ্টিকুমড়ার বিচি, ডার্ক চকলেট, ফ্ল্যাক্সসিড, চিয়াসিড, ডাল, মটর, মাংস ইত্যাদিতে যথেষ্ট পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম থাকে। গুড়, কফি, খেজুরও ম্যাগনেসিয়ামের ভালো উৎস।

ফসফরাস হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি। এটি হাড়ের জন্য ক্ষতিকর অ্যাসিডিক খাবারকে নিরপেক্ষ করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ফসফরাসসমৃদ্ধ খাবার হলো সয়াবিন, মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, ডাল ইত্যাদি প্রোটিনজাতীয় খাবার, লেবু ও গোটা শস্য ইত্যাদি।

ক্যালসিয়াম হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ খনিজ। তাই হাড়ের গঠন এবং শক্তি রক্ষার জন্য প্রতিদিন ক্যালসিয়াম গ্রহণ করা জরুরি।

ভিটামিন ‘কে’
হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ভিটামিন ‘কে’ প্রয়োজন। শরীরে রক্ত জমাট বাঁধতে সহায়তা করা এবং প্রোটিন কার্যক্ষমতা লাভ করে এই ভিটামিন থেকেই। ভিটামিন ‘কে’ অস্টিওক্যালসিনসহ হাড়ের প্রোটিন উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত, যা হাড়ের দুর্বলতা রোধ করার জন্য প্রয়োজন। শরীর যেন যথেষ্ট ভিটামিন ‘কে’ পায় তার জন্য খাবারের প্লেটে রাখুন গাঢ় সবুজ শাকসবজি, ব্রকলি, পালংশাক, বাঁধাকপি, লেটুস ইত্যাদি।

ক্যালসিয়াম
ক্যালসিয়াম হলো হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ খনিজ। হাড়ের পুরোনো কোষ ক্রমাগত ভেঙে গিয়ে নতুন কোষ দিয়ে প্রতিস্থাপিত হয়। তাই হাড়ের গঠন এবং শক্তি রক্ষার জন্য প্রতিদিন ক্যালসিয়াম গ্রহণ করা জরুরি।

ক্যালসিয়ামের উৎস
প্রাকৃতিক উৎস থেকে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণে।

  • ছোট মাছের কাঁটা।
  • দুধ ও দুধজাতীয় খাবার।
  • মলা, ঢ্যালা, কাচকি, কই, মাগুর, শিং ও কোরাল মাছ। বড় মাছের তুলনায় ছোট মাছে ক্যালসিয়াম বেশি থাকে।
  • ওষুধ ছাড়া সংরক্ষণকৃত শুঁটকি ও সামুদ্রিক মাছ।

প্রতিদিন ক্যালসিয়াম প্রয়োজন

প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য ১০০০ মিলিগ্রাম
কিশোর-কিশোরীদের জন্য ১৩০০ মিলিগ্রাম 
বয়স্ক নারীদের জন্য ১২০০ মিলিগ্রাম

পুষ্টিবিদ নাহিদা আহমেদ, গুলশান ডায়াবেটিক কেয়ার, ঢাকা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের সংখ্যালঘু ইস্যুতে বাংলাদেশের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাল দিল্লি

‘ক্রিকেটাররা আমাকে ন্যুড পাঠাত’, বিস্ফোরক ভারতের সাবেক কোচের সন্তান

নালিতাবাড়ীতে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে যুবক আটক

পারদর্শী হয়ে উঠছে বাংলাদেশ, স্থিতিশীল হচ্ছে ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক: ভারতীয় বিশেষজ্ঞ

পরপর সংঘর্ষে উড়ে গেল বাসের ছাদ, যাত্রীসহ ৫ কিমি নিয়ে গেলেন চালক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত