রোকেয়া রহমান
ভারতের সবচেয়ে পুরোনো রাজনৈতিক দল হচ্ছে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস। সবচেয়ে বড় দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি), যা এখন পর্যন্ত সবচেয়ে ধনীও বটে। গত লোকসভা নির্বাচনে (২০১৯) বিজেপি প্রার্থীরা সবাই মিলে ৩৭ দশমিক ৪ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন।
কংগ্রেসের প্রার্থীরা পান ১৯ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট। এ ছাড়া রয়েছে নানা আঞ্চলিক এবং শুধু রাজ্যভিত্তিক আঞ্চলিক দল, যারা বেশ প্রভাবশালী এবং অনেক রাজ্যে ক্ষমতাসীন।
ভারতের নির্বাচনী মানচিত্র একটি বহু বর্ণে চিত্রিত রাজনৈতিক ছবি। বিজেপির লক্ষ্য গোপন কিছু নয়, এই বহু বর্ণকে একরঙা করা। আর বিরোধী দলগুলোর (যারা বিজেপির বিরোধী) লক্ষ্য হলো, কেন্দ্রে বিজেপির জায়গায় নিজেদের বসানো এবং একটি উদার, প্রগতিশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠন করা।
২০১৪ সাল থেকে প্রতিটি নির্বাচনে দল বা দলীয় ইশতেহারের নামে ভোট চায়নি বিজেপি; বরং তারা ভোট চেয়েছে নরেন্দ্র মোদির নামে; বিশেষ করে এবার কর্ণাটকের ভোটারদের কাছে আবেদন তো অন্য মাত্রায় চলে গেছে। ওই রাজ্যে ১০ মে ভোট হবে, একটি নতুন সরকার নির্বাচিত হবে। বিজেপি বলছে কর্ণাটককে মোদির হাতে তুলে দিতে। বিজেপির পক্ষে নরেন্দ্র মোদিই প্রতিটি আসনের প্রার্থী। বিজেপি মনে করে তার লক্ষ্য অর্জনের জন্য ‘সর্বত্র মোদি’—এ ধারণাই যথেষ্ট।
আজ পর্যন্ত, দেখা যাচ্ছে যে বিরোধী দলগুলোর কোনো সাধারণ নেতা বা প্রার্থী নেই, যাঁর নেতৃত্ব তারা সবাই মেনে নিতে পারে। এটির পরিবর্তন হতে পারে, কিন্তু আমরা তো আজকের অবস্থানটি দেখছি। আপাতদৃষ্টিতে এই অসুবিধাকে বাদ দিয়ে, বিরোধী দলগুলোর অনেক সুবিধা ও শক্তি রয়েছে এবং এই লেখার উদ্দেশ্য হচ্ছে বিরোধী দলগুলো কীভাবে তাদের শক্তিকে কাজে লাগাতে পারে, তা খুঁজে দেখা।
কিছু চরম ব্যবস্থা আর গ্রহণ করা যাবে না। যেমনটা করা হয়েছিল ১৯৭৭ সালে জনতা পার্টি গঠনের সময়। সব বিরোধী দল একটি দলে লীন হয়ে যেতে পারে না। এখন কোনো রাজনৈতিক দলই তার রাজ্যে অন্য দলকে জায়গা ছেড়ে দিতে নারাজ। বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও আম আদমি পার্টি উত্তরাখন্ড (২০২২) ও কর্ণাটকে (২০২৩) বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছে। তৃণমূল দিয়েছে গোয়ায় (২০২২)।
এর বিকল্প হচ্ছে একটি বিরোধী ঐক্যমঞ্চ গঠন করা। যেখানে প্রতিটি দলকে অন্যদের ছাড় দিতে হবে এবং অন্য দলের ছাড়ের লাভের ফসল ঘরে তুলতে হবে। ঐক্যমঞ্চের রূপরেখাটি মোটামুটি নিম্নরূপ: রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলোর চারটি কলাম রাখুন এবং তা করতে হবে লোকসভার আসনের ভিত্তিতে। অবশ্যই এটা মেনে নিতে হবে যে ওই রাজ্যে প্রধান রাজনৈতিক দলের চেয়ে বিজেপি অনেক শক্তিশালী (লোকসভায় বিজেপির ৩০২ জন সংসদ সদস্য আছেন)।
আমার মতে, যদি একটি বিরোধী ঐক্যমঞ্চ গঠিত হয়, তবে কংগ্রেস অত্যন্ত যৌক্তিকভাবে প্রায় ২০৯টি আসনে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এগিয়ে থাকার আশা করতে পারে। একইভাবে, এসপি, টিএমসি, আরজেডি, জেডি (ইউ), ডিএমকে, বিআরএস, এএপি—এসব বিরোধী দল প্রায় ২২৫টি আসনে এগিয়ে যেতে পারে। তিনটি রাজ্যে, ২টি বা ৩টি দল একত্রে বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ করার অবস্থানে রয়েছে। ৫৩টি আসনসহ ৭টি রাজ্যে বিজেপির গোপন মিত্র বিজয়ী হতে পারে।
বিরোধী ঐক্যমঞ্চের সব দলকে স্বেচ্ছায় এ নিয়ম মানতে হবে যে যখন প্রধান পার্টি সংশ্লিষ্ট রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে, তখন দলটি প্রতিটি আসনে এমন প্রার্থীকে দিতে বাধ্য থাকবে, যার জয়ের সর্বোত্তম সুযোগ রয়েছে, তা সে প্রার্থী যে দলেরই হোক না কেন। এর উদ্দেশ্য এই নয় যে ওই রাজ্যে প্রধান দলটিকে বেশি বেশি আসনে জেতার সুযোগ করে দেওয়া বরং এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, বিজেপিকে বেশি বেশি আসনে হারানো।
এই পাটিগণিতের হিসাবটা খুব সোজা। এভাবে লড়লে বিজেপি ১৫০টির মতো আসনে জয়ী হওয়ার অবস্থানে রয়েছে। বিরোধী দলগুলোর মধ্যে কংগ্রেস একাই ১০০টির বেশি আসনে জয়ী হওয়ার অবস্থানে রয়েছে। অন্য প্রতিটি বিরোধী দল সর্বোচ্চ ৪০টি আসন জিততে পারে, কিন্তু একসঙ্গে তারা ১৫০টির বেশি আসন পর্যন্ত জিততে পারে। বিজেপি অপরাজেয় নয়। যদি বিরোধী দলগুলো স্বেচ্ছায় আমি যে পরিকল্পনার রূপরেখা দিয়েছি, তা স্বেচ্ছায় মেনে নেয়, সেখানে তাদের জয়ের একটি বিশ্বাসযোগ্য পথ রয়েছে।
(ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকায় প্রকাশিত লেখাটি ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন সাংবাদিক ও কলাম লেখক রোকেয়া রহমান)
ভারতের সবচেয়ে পুরোনো রাজনৈতিক দল হচ্ছে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস। সবচেয়ে বড় দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি), যা এখন পর্যন্ত সবচেয়ে ধনীও বটে। গত লোকসভা নির্বাচনে (২০১৯) বিজেপি প্রার্থীরা সবাই মিলে ৩৭ দশমিক ৪ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন।
কংগ্রেসের প্রার্থীরা পান ১৯ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট। এ ছাড়া রয়েছে নানা আঞ্চলিক এবং শুধু রাজ্যভিত্তিক আঞ্চলিক দল, যারা বেশ প্রভাবশালী এবং অনেক রাজ্যে ক্ষমতাসীন।
ভারতের নির্বাচনী মানচিত্র একটি বহু বর্ণে চিত্রিত রাজনৈতিক ছবি। বিজেপির লক্ষ্য গোপন কিছু নয়, এই বহু বর্ণকে একরঙা করা। আর বিরোধী দলগুলোর (যারা বিজেপির বিরোধী) লক্ষ্য হলো, কেন্দ্রে বিজেপির জায়গায় নিজেদের বসানো এবং একটি উদার, প্রগতিশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠন করা।
২০১৪ সাল থেকে প্রতিটি নির্বাচনে দল বা দলীয় ইশতেহারের নামে ভোট চায়নি বিজেপি; বরং তারা ভোট চেয়েছে নরেন্দ্র মোদির নামে; বিশেষ করে এবার কর্ণাটকের ভোটারদের কাছে আবেদন তো অন্য মাত্রায় চলে গেছে। ওই রাজ্যে ১০ মে ভোট হবে, একটি নতুন সরকার নির্বাচিত হবে। বিজেপি বলছে কর্ণাটককে মোদির হাতে তুলে দিতে। বিজেপির পক্ষে নরেন্দ্র মোদিই প্রতিটি আসনের প্রার্থী। বিজেপি মনে করে তার লক্ষ্য অর্জনের জন্য ‘সর্বত্র মোদি’—এ ধারণাই যথেষ্ট।
আজ পর্যন্ত, দেখা যাচ্ছে যে বিরোধী দলগুলোর কোনো সাধারণ নেতা বা প্রার্থী নেই, যাঁর নেতৃত্ব তারা সবাই মেনে নিতে পারে। এটির পরিবর্তন হতে পারে, কিন্তু আমরা তো আজকের অবস্থানটি দেখছি। আপাতদৃষ্টিতে এই অসুবিধাকে বাদ দিয়ে, বিরোধী দলগুলোর অনেক সুবিধা ও শক্তি রয়েছে এবং এই লেখার উদ্দেশ্য হচ্ছে বিরোধী দলগুলো কীভাবে তাদের শক্তিকে কাজে লাগাতে পারে, তা খুঁজে দেখা।
কিছু চরম ব্যবস্থা আর গ্রহণ করা যাবে না। যেমনটা করা হয়েছিল ১৯৭৭ সালে জনতা পার্টি গঠনের সময়। সব বিরোধী দল একটি দলে লীন হয়ে যেতে পারে না। এখন কোনো রাজনৈতিক দলই তার রাজ্যে অন্য দলকে জায়গা ছেড়ে দিতে নারাজ। বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও আম আদমি পার্টি উত্তরাখন্ড (২০২২) ও কর্ণাটকে (২০২৩) বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছে। তৃণমূল দিয়েছে গোয়ায় (২০২২)।
এর বিকল্প হচ্ছে একটি বিরোধী ঐক্যমঞ্চ গঠন করা। যেখানে প্রতিটি দলকে অন্যদের ছাড় দিতে হবে এবং অন্য দলের ছাড়ের লাভের ফসল ঘরে তুলতে হবে। ঐক্যমঞ্চের রূপরেখাটি মোটামুটি নিম্নরূপ: রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলোর চারটি কলাম রাখুন এবং তা করতে হবে লোকসভার আসনের ভিত্তিতে। অবশ্যই এটা মেনে নিতে হবে যে ওই রাজ্যে প্রধান রাজনৈতিক দলের চেয়ে বিজেপি অনেক শক্তিশালী (লোকসভায় বিজেপির ৩০২ জন সংসদ সদস্য আছেন)।
আমার মতে, যদি একটি বিরোধী ঐক্যমঞ্চ গঠিত হয়, তবে কংগ্রেস অত্যন্ত যৌক্তিকভাবে প্রায় ২০৯টি আসনে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এগিয়ে থাকার আশা করতে পারে। একইভাবে, এসপি, টিএমসি, আরজেডি, জেডি (ইউ), ডিএমকে, বিআরএস, এএপি—এসব বিরোধী দল প্রায় ২২৫টি আসনে এগিয়ে যেতে পারে। তিনটি রাজ্যে, ২টি বা ৩টি দল একত্রে বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ করার অবস্থানে রয়েছে। ৫৩টি আসনসহ ৭টি রাজ্যে বিজেপির গোপন মিত্র বিজয়ী হতে পারে।
বিরোধী ঐক্যমঞ্চের সব দলকে স্বেচ্ছায় এ নিয়ম মানতে হবে যে যখন প্রধান পার্টি সংশ্লিষ্ট রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে, তখন দলটি প্রতিটি আসনে এমন প্রার্থীকে দিতে বাধ্য থাকবে, যার জয়ের সর্বোত্তম সুযোগ রয়েছে, তা সে প্রার্থী যে দলেরই হোক না কেন। এর উদ্দেশ্য এই নয় যে ওই রাজ্যে প্রধান দলটিকে বেশি বেশি আসনে জেতার সুযোগ করে দেওয়া বরং এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, বিজেপিকে বেশি বেশি আসনে হারানো।
এই পাটিগণিতের হিসাবটা খুব সোজা। এভাবে লড়লে বিজেপি ১৫০টির মতো আসনে জয়ী হওয়ার অবস্থানে রয়েছে। বিরোধী দলগুলোর মধ্যে কংগ্রেস একাই ১০০টির বেশি আসনে জয়ী হওয়ার অবস্থানে রয়েছে। অন্য প্রতিটি বিরোধী দল সর্বোচ্চ ৪০টি আসন জিততে পারে, কিন্তু একসঙ্গে তারা ১৫০টির বেশি আসন পর্যন্ত জিততে পারে। বিজেপি অপরাজেয় নয়। যদি বিরোধী দলগুলো স্বেচ্ছায় আমি যে পরিকল্পনার রূপরেখা দিয়েছি, তা স্বেচ্ছায় মেনে নেয়, সেখানে তাদের জয়ের একটি বিশ্বাসযোগ্য পথ রয়েছে।
(ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকায় প্রকাশিত লেখাটি ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন সাংবাদিক ও কলাম লেখক রোকেয়া রহমান)
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২ দিন আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৬ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৬ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৬ দিন আগে