নষ্ট হচ্ছে ৩০ কোটি টাকার যন্ত্র

মিজানুর রহমান নয়ন, কুমারখালী (কুষ্টিয়া)
প্রকাশ : ১৪ এপ্রিল ২০২২, ০৭: ০৩
আপডেট : ১৪ এপ্রিল ২০২২, ১২: ৪০

তাঁত বোর্ডের কুষ্টিয়ার কুমারখালী শাখার জন্য কেনা প্রায় ৩০ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি নষ্ট হচ্ছে। তাঁতশিল্পকে আধুনিকীকরণের লক্ষ্যে প্রোসেসিং, প্রিন্টিং ও ডায়িংয়ের জন্য ওই সব যন্ত্রপাতি ক্রয় করা হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, যন্ত্রগুলো অবকাঠামোর সঙ্গে সমন্বয় না হওয়া এবং উপযুক্ত অবকাঠামো না থাকা, পুরোনো যন্ত্রপাতি অপসারণ না হওয়ায় তা স্থাপন করা হয়নি। খোলা আকাশের নিচে পলিথিন ও কাঠের বক্স দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, যন্ত্রপাতিগুলো ক্রয় এবং স্থাপনের দায়িত্ব পায় খুলনা শিপইয়ার্ড। চুক্তি অনুয়ায়ী খুলনা শিপইয়ার্ড গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে কাজ শুরু করে চলতি বছরের জুনে শেষ করার কথা। ইতিমধ্যে খুলনা শিপইয়ার্ড প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ের ৪৬টি যন্ত্রপাতি হস্তান্তর করেছে। কিন্তু যন্ত্রগুলো অবকাঠামোর সঙ্গে সমন্বয় না হওয়া এবং উপযুক্ত অবকাঠামো না থাকা, পুরোনো যন্ত্রপাতি অপসারণ না হওয়ায় নতুন যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়নি। সংরক্ষণের অভাবে যন্ত্রপাতিগুলো নষ্ট হচ্ছে। ঝড়-বৃষ্টি হলে ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা দেখছে খুলনা শিপইয়ার্ড কর্তৃপক্ষ।

সরেজমিন দেখা যায়, খোলা আকাশের নিচে কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতিগুলো পলিথিন ও কাঠ দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। রোদ, ঝড়, বৃষ্টি, ধুলাবালু সব যন্ত্রপাতির ওপর পড়েছে। এদিকে, গতকাল তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম যন্ত্রপাতিগুলো পরিদর্শনে এসেছেন।

খুলনা শিপইয়ার্ডের সিসিও সামির আহমেদ বলেন, ‘গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্ব পাই, চলতি বছরের জুনে শেষ হওয়ার কথা। ইতিমধ্যে প্রায় ৩০ কোটি টাকা মূল্যের ৪৬টি যন্ত্রপাতি হস্তান্তর করেছি। কিন্তু অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে স্থাপন করা সম্ভব হয়নি। যন্ত্রপাতিগুলো খোলা আকাশের নিচে পলিথিন ও কাঠ দিয়ে ঢেকে রেখেছে। দিনে দিনে নষ্ট হচ্ছে। ঝড় বৃষ্টি হলেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খুলনা শিপইয়ার্ডের একজন কর্মকর্তা বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী তাঁত বোর্ডের কুমারখালীর কর্মকর্তারা যন্ত্রের চাহিদা পাঠিয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী যন্ত্রপাতি হস্তান্তর করা হয়েছে। আর মাত্র এক বছরের ব্যবধানে যন্ত্রপাতিগুলো অবকাঠামোর সঙ্গে অমিল ধরা পড়ল।

এ বিষয়ে তাঁত বোর্ড কুমারখালী শাখার সহাকরী মহাব্যবস্থাপক মো. মেহেদী হাসান বলেন, ‘অবকাঠামোর সঙ্গে আধুনিক যন্ত্রপাতির নকশার মিল না থাকায় যন্ত্রপাতি স্থাপন সম্ভব হয়নি। এ ছাড়াও পুরোনো যন্ত্রপাতি এখনো অপসারণ করা হয়নি। আর ভবন না থাকায় যন্ত্রপাতিগুলো খোলা আকাশের নিচে রাখা হয়েছে। তবে সেগুলো পলিথিন ও কাঠ দিয়ে ঢাকা আছে।’

জানা গেছে, কুমারখালী শাখায় যন্ত্রপাতি হস্তান্তরের পরেও নানান জটিলতায় তা স্থাপন করা হয়। এ সংক্রান্ত এক তদন্তে সরেজমিন বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম পরিদর্শনে আসেন।

বুধবার সকালে পরিদর্শনকালে চেয়ারম্যানের সফর সঙ্গী ছিলেন পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোছা. আছিয়া, খুলনা নৌবাহিনীর শিপইয়ার্ডের ডিজিএম (নকশা ও পরিকল্পনা দপ্তর) মো. তোহা আল তাসবির, বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ।

পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘যন্ত্রপাতি স্থাপনে জটিলতা সংক্রান্ত এক তদন্তে আজ এখানে আসা। তদন্তে কিছু অবস্থা ও ত্রুটি পেয়েছি। কিন্তু এখন কিছু বলা যাচ্ছে না। তদন্ত শেষে প্রতিবেদনের মাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘তাঁতশিল্পকে এগিয়ে নিতে তাঁত বোর্ড কাজ করছে। আশা করছি, দ্রুত কুমারখালীতে আধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপনের মাধ্যমে তাঁতশিল্পের বিপ্লব ঘটবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত