চার গ্রামের মানুষের ভরসা নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো

গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
Thumbnail image

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দুদুখান পাড়া খালের এক পাড় থেকে আরেক পাড়ে যাতায়াতের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো। ৬০ বছর ধরে স্থানীয়দের উদ্যোগে তৈরি বাঁশের সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন চার গ্রামের চার-পাঁচ হাজার মানুষ যাতায়াত করে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সীমানার জটিলতাসহ জনপ্রতিনিধিদের অনাগ্রহের কারণে খালের ওপর কোনো সেতু নির্মিত হচ্ছে না। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের দুদুখানপাড়া দিয়ে ফরিদপুরের দিকে বয়ে গেছে খালটি। সারা বছর এই খালে পানি থাকে। জৈনদ্দিন সরদার পাড়া ও সাহাজদ্দিন মাতুব্বর পাড়া দিয়ে বহমান খালটি স্থানীয় চারটি গ্রামকে পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ায় ভাগ করেছে। কৃষিনির্ভর এসব পরিবারের যাতায়াতের বড় সমস্যা খাল। দীর্ঘদিনেও সেতু না হওয়ায় স্থানীয়দের বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করতে হয়। ৬০ বছরের বেশি সময় ধরে তারা নিজ উদ্যোগে সাঁকো তৈরি করে চলাচল করছে। সাকোটির পূর্ব পাশে রয়েছে জৈনদ্দিন সরদার পাড়ার পূর্ব অংশ, পশ্চিমে জৈনদ্দিন সরদার পাড়ার বাকি অংশ ও সাহাজদ্দিন মাতুব্বর পাড়া। সাঁকোর দক্ষিণে খালের পূর্বে ফরিদপুর সদর গঞ্জুর মাতুব্বর পাড়া একাংশ এবং পশ্চিমে গঞ্জুর মাতুব্বর পাড়া, বাকি অংশ দুর্গাপুর গ্রাম।

স্থানীয় বাসিন্দা উসমান জমুদ্দার বলেন, ‘প্রায় ৬০ বছর ধরে এখানে বাপ-চাচার বাড়ি। দেশ স্বাধীনের আগ থেকে দেখছি বাঁশের সাঁকো।সীমানা নিয়ে দুই ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মাপজোখের পর দক্ষিণে আমি পড়েছি ফরিদপুরের ঈশান গোপালপুর ইউপির গঞ্জুর মাতুব্বর পাড়ার মধ্যে। আমার আরেক ভাই পড়েছে গোয়ালন্দের উজানচর ইউপির জৈনদ্দিন সরদার পাড়ার মধ্যে। আলাদা ইউপির বাসিন্দা হলেও চার গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা এই সাঁকো।

জৈনদ্দিন সরদার পাড়ার হাসেম মণ্ডল বলেন, ‘প্রায় ৬০ বছর ধরে বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করছি। ছোটবেলা থেকে বাপ-চাচাদের সাঁকো তৈরি করে চলতে দেখেছি, এখনো চলছি। দুই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা এই অঞ্চলে বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানে আসলেও সীমান্তবর্তী হওয়ায় কেউ সেতু নির্মাণের ব্যাপারে আগ্রহ দেখান না। সেতু না থাকায় এখানকার ছেলেমেয়েদের বিয়ে দিতেও সমস্যা হয়।

স্থানীয় সাহাজদ্দিন মাতুব্বর পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বেলায়েত হোসেন বলেন, যোগাযোগব্যবস্থা ভালো না থাকায় শিক্ষার্থীরা ঠিকমতো আসতে পারে না। শিক্ষার্থীসহ চার গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ ভোগান্তিতে আছে। কোনো অনুষ্ঠান, প্রয়োজনে রিকশা-ভ্যান বা গাড়ি খাল পাড়ের রাস্তায় রাখতে হয়। অথচ খাল পাড়ি দিতে গিয়ে প্রতিদিন শত শত কৃষক জমির আবাদ, ফসল আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। এখানে জরুরি ভিত্তিতে একটি সেতু নির্মাণ করা দরকার।

উজানচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলজার হোসেন মৃধা বলেন, এলাকার চারটি গ্রামের কয়েক শ পরিবারের চার-পাঁচ হাজার মানুষ নিয়মিত চলাচল করে। এলাকাবাসীর যাতায়াতের সুবিধার্থে উপজেলা পরিষদ থেকে ইটের রাস্তা করে দিয়েছি। ওই খালের ওপর সেতু নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের মাধ্যমে প্রস্তাব পাঠিয়েছি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত