আবদুল আযীয কাসেমি
ইসলামের দৃষ্টিতে মেহমানদারি মহৎ গুণ। আরবদের মধ্যে এ গুণ ছিল স্বভাবজাত। জাহিলি যুগেও আরবেরা শত্রুকে মেহমানদারি করতেও কুণ্ঠিত হতেন না। এমনকি বাবার খুনিও মেহমান হয়ে এলে তাঁর নিরাপত্তা দিতেন। প্রথম অহি নাজিল হওয়ার পর মহানবী (সা.) বেশ ভয় পেলেন। তিনি নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হলেন। তখন মহানবী (সা.)-এর স্ত্রী হজরত খাদিজা (রা.) নবীকে যেসব গুণের কথা বলে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন, এর একটি হলো মেহমানদারি। (বুখারি)
ইসলামের আগমনের পর মেহমানদারির গুণ আরবদের মধ্যে পূর্ণ মাত্রায় বিকশিত হয়। ইসলাম শুধু একে অনুমোদনই করেনি; বরং নানাভাবে উৎসাহিত করেছে। তবে ইসলামে মেহমানদারির কিছু নিয়মনীতি ও আদবকেতার নির্দেশনাও এসেছে।
মেহমানদারির ফজিলত
মেহমানদারির ফজিলত ও আদব সম্পর্কে মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও কেয়ামতের দিনে বিশ্বাস করে, সে যেন মেহমানকে সমাদর করে। এক দিন এক রাত অবশ্যই মেহমানদারি করতে হবে। তবে মেহমানদারি তিন দিন পর্যন্ত হতে পারে। এরপর যা মেহমানদারি হবে, তা সদকা হিসেবে গণ্য হবে। তবে বেশি দিন অবস্থান করে মেজবানকে অসুবিধায় ফেলা কোনো মেহমানের জন্য উচিত নয়।’ (বুখারি)
অন্য এক হাদিসে নবীজি (সা.) বলেন, ‘প্রত্যেক মুসলমানের জন্য এক রাতের মেহমানদারি আবশ্যক। যে ব্যক্তি তা বিনষ্ট করবে, তা তার জন্য দেনা হয়ে যাবে। ইচ্ছে করলে তা আদায় করবে, আর ইচ্ছা না থাকলে তা বর্জন করবে।’ (আবু দাউদ)
হাদিসের ব্যাখ্যাকারগণ বলেন, এক দিনের মেহমানদারি আবশ্যক হওয়ার বিষয়টি ইসলামের প্রাথমিক যুগে থাকলেও পরে তা রহিত হয়ে যায়। হাদিসের বিখ্যাত ভাষ্যকার ইমাম খাত্তাবি (রহ.) বলেন, ‘এসব হাদিসের মর্ম হলো, মহৎ গুণ ও অভিজাত শিষ্টাচার হিসেবে নবীজি (সা.) মেহমানদারিকে হক বা অধিকার আখ্যা দিয়েছেন; অর্থাৎ একজন সম্ভ্রান্ত মানুষ কখনোই তার অতিথির ব্যাপারে উদাসীন থাকতে পারে না। মেহমান অবশ্যই তার কাছে আতিথেয়তা পাওয়ার অধিকার রাখে। গুরুত্ব বোঝানোর জন্যই মহানবী (সা.) আল্লাহ ও আখেরাতের প্রতি বিশ্বাসের সঙ্গে মেহমানদারির বিষয়টি যুক্ত করেছেন। উদ্দেশ্য হলো, আল্লাহ ও আখেরাতে বিশ্বাসী কোনো মুসলমান যেন মেহমানকে অবমূল্যায়ন না করেন। তাকে অবশ্যই মেহমানের সমাদর করতে হবে।’ (মাআলিমুস সুনান)
মহানবী (সা.)-এর মেহমানদারি
মহানবী (সা.) মেহমানদের অত্যন্ত সম্মান করতেন। যেমন হাদিসে এসেছে, ‘কোনো মেহমান আসার খবর পেলে রাসুল (সা.) দরজার বাইরে এসে তাকে অভ্যর্থনা ও সাদর সম্ভাষণ জানাতেন।’ (মিশকাত)
মক্কা বিজয়ের পর মদিনায় মেহমানের অভাব ছিল না। রাসুল (সা.) নিজেই তাদের খেদমত আঞ্জাম দিতেন। সাহাবি বেলাল (রা.)-কে রাষ্ট্রীয় মেহমানদের বিশেষ তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে নিযুক্ত করেন। (সিরাতুন নবী: ২ / ৫০৪)
মেহমানদের সঙ্গে অত্যন্ত মার্জিত আচরণ করতেন। আন্তরিকতা দিয়ে প্রাণবন্ত করে তুলতেন পরিবেশ। এ প্রসঙ্গে তিনি নিজেই বলেছেন, ‘মেহমানের সঙ্গে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করা এবং কথা বলা সদকা।’ (তিরমিজি)
সাহাবায়ে কেরামের মেহমানদারি
সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে মেহমানদারির প্রতিযোগিতা চলত। অথচ তাঁদের অভাব ছিল, দারিদ্র্য ছিল। তবু তাঁরা সাধ্যানুযায়ী মেহমানদারি করতে কোনো কার্পণ্য করতেন না। একবার এক গ্রাম্য লোক মহানবী (সা.)-এর কাছে এসে মেহমান হলো। ঘটনাক্রমে সেদিন নবীজির কোনো স্ত্রীর ঘরে পানি ছাড়া অন্য কোনো খাবার ছিল না। নবীজি বাধ্য হয়ে এক সাহাবিকে তাঁর মেহমানদারির দায়িত্ব দেন। তিনি সেদিন নিজে অভুক্ত থেকে এবং পরিবারকে অভুক্ত রেখে সেই গ্রাম্য লোকটির মেহমানদারি করেছিলেন। (মুসলিম)
লেখক: শিক্ষক ও হাদিস গবেষক
ইসলামের দৃষ্টিতে মেহমানদারি মহৎ গুণ। আরবদের মধ্যে এ গুণ ছিল স্বভাবজাত। জাহিলি যুগেও আরবেরা শত্রুকে মেহমানদারি করতেও কুণ্ঠিত হতেন না। এমনকি বাবার খুনিও মেহমান হয়ে এলে তাঁর নিরাপত্তা দিতেন। প্রথম অহি নাজিল হওয়ার পর মহানবী (সা.) বেশ ভয় পেলেন। তিনি নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হলেন। তখন মহানবী (সা.)-এর স্ত্রী হজরত খাদিজা (রা.) নবীকে যেসব গুণের কথা বলে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন, এর একটি হলো মেহমানদারি। (বুখারি)
ইসলামের আগমনের পর মেহমানদারির গুণ আরবদের মধ্যে পূর্ণ মাত্রায় বিকশিত হয়। ইসলাম শুধু একে অনুমোদনই করেনি; বরং নানাভাবে উৎসাহিত করেছে। তবে ইসলামে মেহমানদারির কিছু নিয়মনীতি ও আদবকেতার নির্দেশনাও এসেছে।
মেহমানদারির ফজিলত
মেহমানদারির ফজিলত ও আদব সম্পর্কে মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও কেয়ামতের দিনে বিশ্বাস করে, সে যেন মেহমানকে সমাদর করে। এক দিন এক রাত অবশ্যই মেহমানদারি করতে হবে। তবে মেহমানদারি তিন দিন পর্যন্ত হতে পারে। এরপর যা মেহমানদারি হবে, তা সদকা হিসেবে গণ্য হবে। তবে বেশি দিন অবস্থান করে মেজবানকে অসুবিধায় ফেলা কোনো মেহমানের জন্য উচিত নয়।’ (বুখারি)
অন্য এক হাদিসে নবীজি (সা.) বলেন, ‘প্রত্যেক মুসলমানের জন্য এক রাতের মেহমানদারি আবশ্যক। যে ব্যক্তি তা বিনষ্ট করবে, তা তার জন্য দেনা হয়ে যাবে। ইচ্ছে করলে তা আদায় করবে, আর ইচ্ছা না থাকলে তা বর্জন করবে।’ (আবু দাউদ)
হাদিসের ব্যাখ্যাকারগণ বলেন, এক দিনের মেহমানদারি আবশ্যক হওয়ার বিষয়টি ইসলামের প্রাথমিক যুগে থাকলেও পরে তা রহিত হয়ে যায়। হাদিসের বিখ্যাত ভাষ্যকার ইমাম খাত্তাবি (রহ.) বলেন, ‘এসব হাদিসের মর্ম হলো, মহৎ গুণ ও অভিজাত শিষ্টাচার হিসেবে নবীজি (সা.) মেহমানদারিকে হক বা অধিকার আখ্যা দিয়েছেন; অর্থাৎ একজন সম্ভ্রান্ত মানুষ কখনোই তার অতিথির ব্যাপারে উদাসীন থাকতে পারে না। মেহমান অবশ্যই তার কাছে আতিথেয়তা পাওয়ার অধিকার রাখে। গুরুত্ব বোঝানোর জন্যই মহানবী (সা.) আল্লাহ ও আখেরাতের প্রতি বিশ্বাসের সঙ্গে মেহমানদারির বিষয়টি যুক্ত করেছেন। উদ্দেশ্য হলো, আল্লাহ ও আখেরাতে বিশ্বাসী কোনো মুসলমান যেন মেহমানকে অবমূল্যায়ন না করেন। তাকে অবশ্যই মেহমানের সমাদর করতে হবে।’ (মাআলিমুস সুনান)
মহানবী (সা.)-এর মেহমানদারি
মহানবী (সা.) মেহমানদের অত্যন্ত সম্মান করতেন। যেমন হাদিসে এসেছে, ‘কোনো মেহমান আসার খবর পেলে রাসুল (সা.) দরজার বাইরে এসে তাকে অভ্যর্থনা ও সাদর সম্ভাষণ জানাতেন।’ (মিশকাত)
মক্কা বিজয়ের পর মদিনায় মেহমানের অভাব ছিল না। রাসুল (সা.) নিজেই তাদের খেদমত আঞ্জাম দিতেন। সাহাবি বেলাল (রা.)-কে রাষ্ট্রীয় মেহমানদের বিশেষ তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে নিযুক্ত করেন। (সিরাতুন নবী: ২ / ৫০৪)
মেহমানদের সঙ্গে অত্যন্ত মার্জিত আচরণ করতেন। আন্তরিকতা দিয়ে প্রাণবন্ত করে তুলতেন পরিবেশ। এ প্রসঙ্গে তিনি নিজেই বলেছেন, ‘মেহমানের সঙ্গে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করা এবং কথা বলা সদকা।’ (তিরমিজি)
সাহাবায়ে কেরামের মেহমানদারি
সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে মেহমানদারির প্রতিযোগিতা চলত। অথচ তাঁদের অভাব ছিল, দারিদ্র্য ছিল। তবু তাঁরা সাধ্যানুযায়ী মেহমানদারি করতে কোনো কার্পণ্য করতেন না। একবার এক গ্রাম্য লোক মহানবী (সা.)-এর কাছে এসে মেহমান হলো। ঘটনাক্রমে সেদিন নবীজির কোনো স্ত্রীর ঘরে পানি ছাড়া অন্য কোনো খাবার ছিল না। নবীজি বাধ্য হয়ে এক সাহাবিকে তাঁর মেহমানদারির দায়িত্ব দেন। তিনি সেদিন নিজে অভুক্ত থেকে এবং পরিবারকে অভুক্ত রেখে সেই গ্রাম্য লোকটির মেহমানদারি করেছিলেন। (মুসলিম)
লেখক: শিক্ষক ও হাদিস গবেষক
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
১ দিন আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৫ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৫ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৫ দিন আগে