ফল খারাপ বন্যার কারণে

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট
প্রকাশ : ২৯ নভেম্বর ২০২২, ১৩: ৪১

সিলেট শিক্ষা বোর্ডে এবার মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাসের হার ৭৮ দশমিক ৮২। গত বছর এই হার ছিল ৯৬ দশমিক ৭৮। পাসের হার কমেছে ১৭ দশমিক ৯৬ ভাগ। তবে পাসের হার কমলেও বেড়েছে জিপিএ-৫। এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে রেকর্ড ৭ হাজার ৫৬৫ জন। গত বছর পেয়েছিল ৪ হাজার

৮৩৪ জন। এবার ২ হাজার ৭৩১টি জিপিএ-৫ বেড়েছে। এবার ৩ হাজার ২৫৪ ছেলে ও ৪ হাজার ৩১১ জন মেয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে। গতকাল সোমবার বেলা দেড়টায় সিলেট শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক অরুণ চন্দ্র পাল আনুষ্ঠানিকভাবে ফল প্রকাশ করেন।

এ সময় পাসের হার কমে যাওয়ার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক। তিনি জানান, এবার পরীক্ষার আগে সিলেট অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা ছিল। বন্যায় অনেক পরীক্ষার্থী বই, খাতা ও নোট হারিয়েছে। প্রস্তুতি নিতে পারেনি। বন্যার পর বই দেওয়া হলেও নোটবই দেওয়া যায়নি। বন্যার কারণে পরীক্ষাও পিছিয়েছে। এ সব কারণেই পাসের হার কমেছে।

অধ্যাপক অরুণ চন্দ্র পাল বলেন, এ ছাড়া গত বছর গণিত ও ইংরেজি বিষয়ে পরীক্ষা ছিল না। করোনার জন্য কেবল তিনটি বিষয়ে পরীক্ষা হয়েছে। এবার গণিত ও ইংরেজি পরীক্ষা হয়েছে। ফলাফলে এর প্রভাবও পড়েছে। ইংরেজিতে ৯২.৩৩ শতাংশ ও গণিতে ৮৯.৮৮ শতাংশ শিক্ষার্থী এবার পাস করেছে বলে জানান তিনি।

মানবিক বিভাগে শিক্ষার্থী বেশি হওয়ায়ও পাসের হার কমেছে জানিয়ে অধ্যাপক আরও বলেন, দেশের অন্যান্য বোর্ডে বিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষার্থী বেশি থাকে; কিন্তু সিলেটে বিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষার্থী যেখানে ২৩ হাজার ৩১৮ জন, সেখানে মানবিক বিভাগে শিক্ষার্থী ৮৪ হাজার ২৭৩ জন। পাসের হারেও মানবিক বিভাগ অনেক পিছিয়ে। বিজ্ঞান বিভাগে পাসের হার ৯৩.৫৭ শতাংশ, অপরদিকে মানবিকে পাসের হার ৭৩.৮০ শতাংশ। তবে ফলাফলে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘বন্যা পরিস্থিতি বিবেচনায় এবারের ফলাফলে আমরা খুশি। আমরা উন্নতি করছি।’ বন্যায় পাসের হার কমলেও কীভাবে জিপিএ-৫ বাড়ল এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, বন্যায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গ্রামের প্রান্তিক শিক্ষার্থীরা আর জিপিএ-৫ বেশি পেয়েছে শহরের শিক্ষার্থীরা। বন্যায় ক্ষতি তাদের তুলনামূলক কম হয়েছে।

চলতি বছর সিলেট শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১ লাখ ১৬ হাজার ৪৯০ শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে ৯ হাজার ৯৪৮ জন পাস করেছে। সিলেট শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ৯৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ১৫০টি কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে ২৭টি প্রতিষ্ঠানের শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছে। একজনও পাস করেনি এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা শূন্য। আগের বছরের চেয়ে এবার জিপিএ-৫প্রাপ্তদের সংখ্যা ২ হাজার ৭৩১ জন বেড়েছে। সিলেট বোর্ডে ৪৯ হাজার ৮৭ ছেলে ও ৬৬ হাজার ৩০৪ জন মেয়ে পরীক্ষার্থী পাস করেছে। ছেলে ও মেয়েদের পাসের হার যথাক্রমে ৭৮ দশমিক ৭১ ও ৭৮ দশমিক ৯। এদিকে শিক্ষা বোর্ডের অধীন চার জেলার মধ্যে সবচেয়ে ভালো

করেছে সিলেট জেলার শিক্ষার্থীরা। এ জেলায় পাসের হার ৮১ দশমিক ৯৫। এ ছাড়া সুনামগঞ্জে ৭৯ দশমিক ৯৫, হবিগঞ্জে ৭৭ দশমিক ৮৬ ও মৌলভীবাজার জেলায় ৭৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ পাস করেছে। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত